বিক্ষোভ: প্রতিবাদে সরব এঁরা। বুধবার ছবিটি তুলেছেন দিলীপ নস্কর
মদের দোকান বন্ধের দাবিতে আন্দোলনে নামলেন গ্রামবাসীরা। বুধবার ডায়মন্ড হারবার মহকুমার দুই থানা এলাকায় মদের দোকান বন্ধের দাবিতে আন্দোলন হয়েছে। কয়েক ঘণ্টা ধরে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ চলে। পরে পুলিশের আশ্বাসে দুই এলাকাতেই অবরোধ ওঠে।
এ দিন প্রথম ঘটনাটি ঘটে মগরাহাটের বাংলা-মগরাহাট রোডে গোকর্ণী মোড়ের পাশে। নতুন মদের দোকান খোলা হয়েছে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা একজোট হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। গোকর্ণী-সহ ঘনশ্যামনগর, রায়নগর, মাইতিরহাট, মাকালিয়া বেণীপুরের প্রায় হাজারখানেক মানুষ গোকর্ণী মোড়ে অবরোধ করেন। মহিলাদের সংখ্যাই ছিল বেশি। ‘নাগরিক মঞ্চ’ ও ‘মহিলা মঞ্চে’র নেতৃত্বে অনেকের হাতে লাঠি-ঝাঁটাও দেখা যায়। ঘণ্টা দু’য়েক অবরোধ চলার পরে পুলিশ এসে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। আন্দোলনকারীদের দাবি, এলাকায় একাধিক প্রাথমিক স্কুল, হাইস্কুল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও ধর্মীয় স্থান রয়েছে। এখানে মদের দোকান খোলা হলে মদ্যপদের উৎপাতে সন্ধ্যার পরে চলাফেরা করা বিপজ্জনক হয়ে উঠবে। নাগরিক মঞ্চের সভাপতি ধনঞ্জয় সর্দার বলেন, ‘‘যেখানে মদের দোকান করা হচ্ছে, ওই নিরিবিলি জায়গায় এর আগে খুন হয়েছে। এমন একটা জায়গায় কোনও মতেই দোকান করতে দেওয়া যায় না।’’ আন্দোলনে সামিল গায়ত্রী নস্কর বলেন, ‘‘আমার স্বামী রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। বছরখানেক হল কাজকর্ম ছেড়ে সারা দিন মদ খেয়ে বাড়িতে বসে থাকেন। অশান্তি করেন। প্রতিবাদ করলে মারধর করেন।’’ তিনি জানান, এখানে মদের দোকান থাকলে এলাকায় মদ্যপের সংখ্যা বাড়বে। বাড়ি বাড়ি অশান্তি শুরু হবে। আরতি রায়ের কথায়, ‘‘ওই রাস্তা দিয়ে স্কুলের ছেলেমেয়েরা যাতায়াত করে। মদের দোকান খোলা হলে বিপদের শেষ থাকবে না। পুলিশের আশ্বাসে এখন অবরোধ তুললেও মদের দোকান পুরোপুরি বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।’’
এ দিন দুপুরে একই দাবিতে লক্ষ্মীকান্তপুর- দক্ষিণ বিষ্ণুপুর রোডের পাওয়ার হাউস মোড়ের কাছে আবগারি দফতরের সামনের রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। এলাকাবাসীদের নিয়ে গড়া ‘সমাজকল্যাণ কমিটি’র নেতৃত্বে এ দিন দুপুর ২টো থেকে ঘণ্টা দু’য়েক অবরোধ চলে। আবগারি দফতরে স্মারকলিপিও জমা দেওয়া হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাধবপুর স্টেশনের অদূরে যাদবপুর গ্রামে যাওয়ার রাস্তায় জনবহুল এলাকায় বুধবার সকালে একটি বার ও মদের দোকান খোলা হয়েছে বলে দেখেন এলাকাবাসী। তাঁরা সেটি বন্ধের দাবিতে ওই মোড়ে আসেন। আন্দোলনকারীরা জানান, যে বাড়িটিতে বার খোলা হয়েছে, সেখানে বাড়িতে পাউরুটির কারখানা হবে বলে শুনেছিলেন তাঁরা। বারের পাশের রাস্তা দিয়ে ১০-১৫টি গ্রামের ছেলেমেয়ে স্কুলে যায়। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্য স্থানীয় মৃণাল হালদার বলেন, ‘‘ক’দিন পরেই ওই বারের পাশে চোখের হাসপাতালের ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হবে। অথচ সেখানেই বার খোলা হচ্ছে!’’ ‘সমাজকল্যাণ কমিটি’র সভাপতি অর্ধেন্দু বৈরাগীর দাবি, এমন জনবহুল এলাকায় মদের দোকান খুলতে দেওয়া যাবে না। এ বিষয়ে শাসকদলের এক নেতার কথায়, ‘‘মদের দোকান খুলতে হয় অন্য কোথাও খুলুক। এমন গ্রামীণ এলাকায় মদের দোকান খোলাটা কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।’’ এ বিষয়ে মন্দিরবাজারের আবগারি দফতরের আধিকারিক অমিত শর্মা বলেন, ‘‘দাবিপত্র পেয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব। যেমন নির্দেশ আসবে, সেই মতো পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy