ম্যানগ্রোভ: নিজস্ব চিত্র
নদীর চর দখল করে, কয়েক হাজার ম্যানগ্রোভ নষ্ট করে তৈরি হচ্ছে মেছোভেড়ি। নামখানার ঈশ্বরীপুরে এই মেছোভেড়ি তৈরি করছেন নারায়ণপুরের তৃণমূলের প্রধান পবিত্র মণ্ডল বলে অভিযোগ। এ দিকে ম্যানগ্রোভ কাটার ফলে বাড়ছে নদীভাঙন। ফলে, প্লাবিত হচ্ছে নারায়ণপুর, ঈশ্বরীপুর গ্রাম।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঈশ্বরীপুরে সপ্তমুখী নদীর বাঁধ লাগোয়া চাষজমি নষ্ট হয় ভাঙনে। তখন নদী গ্রামের দিকে এগিয়ে আসে। সে সময় নারায়ণপুর-ইশ্বরীপুরে নতুন করে রিংবাঁধ দিতে হয় জল আটকানোর জন্য। কিন্তু ভাঙনের কবলে পড়া কয়েক’শো বিঘা চাষজমি এবং নদী সংলগ্ন সরকারি জমি প্রাকৃতিক ম্যানগ্রোভ অরণ্যে পরিণত হয়। এখন ঈশ্বরীপুরে সেই বিশাল ম্যানগ্রোভ জঙ্গল নষ্ট করেই ভেড়ি তৈরি করছেন নারায়ণপুরের প্রধান পবিত্রবাবু বলে অভিযোগ।
এলাকার মৎস্যজীবী তথা শ্রমিক একাদশী প্রামাণিক, উৎপল প্রামাণিকরা বলেন, ‘‘পবিত্রবাবু নিজে প্রধান। গ্রামবাসীদের কথা না ভেবে, পরিবেশের কথা না ভেবে নিজের কাজ করছেন।’’
গ্রামবাসীর রুজি-রোজগারেও টান পড়েছে বলে জানা গিয়েছে। ঈশ্বরীপুর-নারায়ণপুর সীমানা লাগোয়া একটি খালে জোয়ার-ভাটা খেলে। ওই খাল দিয়ে স্থানীয় মৎস্যজীবীরা নদীতে যাতায়াত করেন। তা বন্ধ করে দেওয়ায় বেশ কয়েক কিলোমিটার দূরে তাঁদের নৌকো অসংরক্ষিত অবস্থায় রাখতে হচ্ছে। সরকারি জমি দখল করে ম্যানগ্রোভ কাটার প্রতিবাদে মূলত গ্রামবাসীর হয়েই একটি জনস্বার্থ মামলাও দায়ের করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন কাকদ্বীপের আইনজীবী সব্যসাচী দাস। তাঁর কথায়, ‘‘এলাকায় এরকম আরও বেশ কিছু জায়গায় বার বার এই অভিযোগ ওঠে। পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে বলে জনস্বার্থ মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’’
এ দিন এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, প্রচুর ম্যানগ্রোভ ইতিমধ্যেই নষ্ট করে মাটি দিয়ে ভেড়ির জন্য চওড়া বাঁধও দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে ঈশ্বরীপুরে। ঘিরে ফেলা এলাকায় মাছ চাষ শুরু হলে আরও কয়েক লক্ষ ম্যানগ্রোভের চারা নষ্ট হবে। তাতে নদী বাঁধেরই ক্ষতির আশঙ্কায় এলাকাবাসী।
ডায়মন্ড হারবারের পাঁচ অংশীদারের কাছ থেকে ৪০ শতক জমি কিনে নেওয়ার দাবি করছেন পবিত্রবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘কারও জায়গা দখল করিনি। খালটিও আমার কেনা জায়গায়। ৬ জন মিলে ১৮ বিঘে জমি কিনেছি। তবে তার বাইরে যে জায়গাটুকু ঘিরেছি, তার মধ্যে কিছুটা সরকারি জমি রয়েছে।’’ কিছুটা ম্যানগ্রোভ নষ্ট হলেও কোনও ক্ষতি হবে না বলে দাবি করেন তিনি।
তবে প্রস্তাবিত ভেড়িতে কিছুটা জমির মালিক দিলীপ সাঁতরারও রয়েছে বলে দাবি তাঁর ছেলে শুভদীপের। তিনি বলেন, ‘‘আমার বাবা বেঁচে থাকাকালীন কোনও জমি বিক্রি করেননি। কিন্তু আমাদের প্রায় ৬৬ শতক জমি দখল হয়ে গিয়েছে। সেখানে মাছের ভেড়ি তৈরি করা হচ্ছে বলে শুনেছি। প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে মামলা দায়ের করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy