Advertisement
E-Paper

জেটিঘাটে পা পিছলে পড়ে যান অনেকেই 

জেটিঘাটে যাতায়াতের রাস্তায় পাতা হয়েছে ইট। কিন্তু নদীর জলের তোড়ে তাও উল্টে-পাল্টে গিয়েছে। একরকম হামাগুড়ি দিয়েই লঞ্চে ওঠানামা করেন যাত্রীরা।

ঝুঁকি: এ ভাবেই চলে যাতায়াত। পাথরপ্রতিমায়। নিজস্ব চিত্র

ঝুঁকি: এ ভাবেই চলে যাতায়াত। পাথরপ্রতিমায়। নিজস্ব চিত্র

দিলীপ নস্কর

শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২০ ০৪:১৮
Share
Save

জেটিঘাটে যাতায়াতের রাস্তায় পাতা হয়েছে ইট। কিন্তু নদীর জলের তোড়ে তাও উল্টে-পাল্টে গিয়েছে। একরকম হামাগুড়ি দিয়েই লঞ্চে ওঠানামা করেন যাত্রীরা। পাথরপ্রতিমার জি প্লটের সীতারামপুর জেটিঘাটের এই অবস্থা।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাথরপ্রতিমা ব্লকের সমুদ্র- নদী ঘেরা জি প্লট গ্রাম পঞ্চায়েত। দশটি গ্রাম নিয়ে জনসংখ্যা প্রায় ৩২ হাজার। ওই দ্বীপের বাসিন্দারা অধিকাংশই কৃষি এবং মাছ ধরার সঙ্গে যুক্ত। এলাকায় অফিস কাছারি বলতে তেমন কিছু নেই। সরকারি কোনও দফতরে যেতে হলে এলাকার মানুষকে তিন ঘণ্টা নদীপথ পার হয়ে পাথরপ্রতিমা রামগঙ্গায় পৌঁছতে হয়। এলাকার বাসিন্দাদের লঞ্চে যাতায়াতের সুবিধার জন্য বহু বছর আগে জগদ্দল নদী সংযোগে সীতারামপুরে কংক্রিটের জেটিঘাট তৈরি হয়েছিল। বছর তিনেক আগে অস্থায়ী ভাবে সামান্য কিছু অংশ সংস্কার করা হয়েছিল। কিন্তু পাকাপাকি ভাবে তা সংস্কার হয়নি।

এ বিষয়ে পাথরপ্রতিমার বিধায়ক সমীর জানা বলেন, ‘‘ওই ঘাটটি নতুন করে নির্মাণের জন্য সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদকে বলা হয়েছে। টাকা বরাদ্দ হলে কাজ শুরু হবে।’’

সারা জেটিঘাটের ইট-পাথর উঠে গিয়ে রাস্তার অবস্থা খারাপ। নদীর জোয়ারের জল এসে রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে যাচ্ছে। এমনই অবস্থা হয়েছে যে শিশু ও বয়স্কদের হাত ধরে নিয়ে যেতে হয়। অনেকে আবার কোলে নিয়েও লঞ্চে তুলে দেন। কিন্তু তাতেও যে কোনও সময় ঘটতে পারে বিপদ। তা ছাড়া লম্বা ওই জেটি ঘাটে কোনও আলোর ব্যবস্থাও নেই। সন্ধ্যার পর ওই জেটিঘাট পেরোনো আরও বিপজ্জনক হয়ে যায়।

শুধু পাথরপ্রতিমা, রামগঙ্গা নয়, ওই ব্লকের হেরম্বগোপালপুর, বনশ্যামনগর আই প্লট, কেপ্লট, ছোটরাক্ষসখালি, বড় রাক্ষসখালি-সহ প্রায় ১৫টি দ্বীপ এলাকার মানুষ ওই জেটির উপর নির্ভর করেন। ওই দ্বীপ এলাকাগুলিতে লঞ্চ ও ফেরি যোগাযোগ রয়েছে। বিভিন্ন দ্বীপ থেকে আসা লঞ্চ ও ফেরি সীতারামপুর ঘাটে এসে দাঁড়ায়। এ ছাড়া বর্ষার মরসুমে সমুদ্রে যাওয়া ট্রলারগুলি এই ঘাটের পাশে এসে দাঁড়ায়। তবে ঘাটটির বেহালা হওয়ার জন্য সব থেকে বেশি সমস্যায় পড়তে হয় রোগীকে পাথরপ্রতিমা বা কাকদ্বীপ মহকুমা হাসপাতালে পাঠানোর সময়। রোগীকে স্ট্রেচারে করে অতি সাবধানে নিয়ে যেতে হয়। ওই এলাকার নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, বিপজ্জনক হয়ে রয়েছে জেটিঘাট। কারও কোনও হুঁশ নেই। পা পিছলে মাঝেমধ্যেই পড়ে যান মানুষ। যে কোনও সময় বড় দুঘর্টনাও ঘটতে পারে। সন্ধ্যার পর মোবাইলের আলো জ্বেলে পার হতে হয়।

ওই এলাকার বাসিন্দা লঞ্চ চালক দীপক নাইয়া বলেন, ‘‘যাত্রীদের ক্ষোভের কথা শুনতে হচ্ছে রোজই। প্রতিটা যাত্রীর প্রশ্ন, ঘাটটি কেন সংস্কার হচ্ছে না। লঞ্চে উঠতে গিয়ে একটু অন্যমনষ্ক হলেই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’’ওই এলাকার বাসিন্দা তৃণমূল নেতা স্বর্ণজিৎ বাগ বলেন, ‘‘জেটিঘাটটি বছর পাঁচেক ধরে এমন বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। ঘাটটির জন্য নিত্য এলাকার মানুষের ক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে। সমস্ত বিষয়ে সকলেই জানে। এমনকী সমস্ত দফতরকেও আমরা জানিয়েছি।’’

তবে সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদ সূত্রে জানানো হয়েছে, ওই জেটিঘাট মূলত মৎস্যজীবীরা বেশি ব্যবহার করেন। মৎস্য দফতর থেকে ঘাটটি সংস্কারে উদ্যোগ নিক।

Pathar Pratima Ferry Ghat

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}