রক্তচাপ ঊর্ধ্বমুখী। খারাপ কোলেস্টেরলও বেড়েছে। আর এ সব দেখেই চিকিৎসক সকালে উঠে হাঁটতে বলছেন। হাঁটতেও যাচ্ছেন। কিন্তু জানেন কি, হাঁটতে যাওয়ার সময় কয়েকটি বিষয়ে সচেতন না হলে লাভের বদলে ক্ষতিও হতে পারে?
সাধারণত ঘুম থেকে উঠেই লোকজন হাঁটতে বেরিয়ে পড়েন। কিন্তু এই নিয়ম কি ভাল? কোন ভুল হাঁটার সময় ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে?
জল খেতে ভুলবেন না
সকালে উঠলেন, মুখ ধুয়ে চা খেয়ে হাঁটতে চলে গেলেন। ফুরফুরে হাওয়ায় যতই হাঁটতে ভাল লাগুক না কেন, ঘাম ঝরলেই জলের অভাব হতে পারে। তা ছাড়া পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী বলছেন, ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস জল খাওয়া দরকার। জল সারা রাত বিপাকক্রিয়ার ফলে শরীরে তৈরি হওয়া দূষিত পদার্থ বা টক্সিন বার করে দিতে সাহায্য করে। তা ছাড়া, গরমের দিনে হাঁটাহাটির সময়, বিশেষত দ্রুত হাঁটলে ঘাম ঝরবে। আগে থেকে জল না খেলে, উল্টে শরীরে জলাভাব দেখা দিতে পারে। তাতে হিতে বিপরীত হবে। ক্লান্ত লাগবে, মাথা যন্ত্রণাও হতে পারে। বরং দীর্ঘ ক্ষণ হাঁটাহাঁটির পরিকল্পনা থাকলে প্রয়োজনমতো গলা ভেজানোর জন্য সঙ্গে পানীয় জল রাখা ভাল।
খালি পেটে হাঁটাহাঁটি নয়
সকালে উঠে হাঁটার আগে অনেকেই কিছু খেয়ে যান না। কিন্তু খালি পেটে হাঁটা ঠিক নয় বলে মনে করেন পুষ্টিবিদদের একাংশ। বিশেষত, দীর্ঘ ক্ষণ শরীরচর্চা, হাঁটার অভ্যাস করতে হলে একেবারে খালি পেটে যাওয়া ঠিক নয়। কারণ, রাতের খাওয়া এবং প্রাতরাশের মধ্যে সময়ের অনেকটা ফাঁক থাকে। তার উপর সকালে কিছু না খেয়ে হাঁটতে গেলে রক্তে শর্করার মাত্রা নেমে যেতে পারে, ক্লান্ত লাগতে পারে। তবে জলখাবার খেয়ে হাঁটতে যেতে বলা হচ্ছে না। বরং ভেজানো ছোলা, বাদাম, আখরোট জাতীয় হালকা খাবার খেয়ে হাঁটতে যাওয়া উচিত।
আরও পড়ুন:
গা গরম করা
হাঁটতে গিয়ে অনেকেই খোলা হাওয়ায় কার্ডিয়ো, ব্যায়াম করেন। কিন্তু তার আগে ওয়ার্ম আপ বা গা গরম করেন কি? ঘুমোনোর সময় শরীর, পেশি সবই বিশ্রামে থাকে। সূর্য ওঠার পর সময় যত এগোয়, শরীরও ছন্দে ফেরে। চনমনে হয়ে ওঠে। ঘুম থেকে উঠে শুরুতেই দৌড়নোর আগে বা জোরে হাঁটার আগে পেশিগুলিকেও চাঙ্গা করা দরকার। আর এ জন্যই প্রয়োজন ওয়ার্ম-আপ। ৫ মিনিট হালকা জগিং করলে বা সহজ ব্যয়াম করলে মাংসপেশিতে রক্তপ্রবাহ বৃদ্ধি পায়। পেশির কর্মক্ষমতা বাড়ে। এতে শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়, যা মাংসপেশি সঙ্কোচন এবং প্রসারণে সহায়ক। এর ফলে চট করে পেশিতে টান ধরে যায় না।
ক্যাফিন
অনেকেরই ঘুম থেকে উঠে গরম চা-কফি ছাড়া চলে না। প্রথমত, খালি পেটে চা-কফি খেলে কারও কারও অম্বলের সমস্যা হয়। দ্বিতীয়ত, দুই-তিন কাপ কফি খেয়ে হাঁটতে গেলে আর পর্যাপ্ত জল না খেলে জলশূন্যতার ঝুঁকি বাড়ে। কফি ‘ডাই-ইউরেটিক’। যা শরীর থেকে জল এবং নুন বার করতে কিডনিকে উদ্দীপিত করে। ফলে শরীরে জলের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
শুরুতেই অতিরিক্ত হাঁটা
হাঁটলে উপকার হয় বলে প্রথম দিনেই লম্বা রাস্তা হাঁটতে গেলে সমস্যা হতে পারে। বরং হাঁটার অভ্যাস ধীরে ধীরে হওয়াই ভাল। প্রথম সপ্তাহে এক বা দুই কিলোমিটার হেঁটে ধীরে ধীরে সেই দূরত্ব বাড়াতে পারেন। এক দিনে অতিরিক্ত হাঁটাহাটি করতে গেলে, শরীর অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে।