বুধবার নতুন করে উত্তেজনা ভাঙড়ে। — নিজস্ব চিত্র।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পঞ্চম দিনে আবারও উত্তপ্ত ভাঙড়। মঙ্গলবার ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ)-এর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া ঘিরে তৃণমূলের সঙ্গে সংঘর্ষে রণক্ষেত্র তৈরি হয়েছিল ভাঙড়-২ বিডিও অফিস চত্বর। বুধবার উত্তেজনা ছড়াল ভাঙড়-১ ব্লকে। তৃণমূলের মিছিল ঘিরে বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছে সেখানে। পুলিশের গাড়িতেও ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছে। যদিও তৃণমূল নেতারা সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
বুধবার সকাল থেকেই নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছিল ভাঙড়-১ ব্লক। বাসন্তী হাইওয়ের দু’পাশে মোতায়েন করা হয়েছিল বিশাল পুলিশবাহিনী। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া ঘিরে যাতে কোনও রকম গন্ডগোল না হয় সে জন্য আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল পুলিশ। এই আবহে ভাঙড়-১ ব্লকের তৃণমূল নেতা শাজাহান মোল্লার নেতৃত্বে শুরু হয় মিছিল। তাতে লাঠি হাতে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায় অনেককে। ওই মিছিল থেকে বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছে। ওই মিছিল থেকে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগও উঠেছে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পুলিশকর্মীরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালাচ্ছেন। মঙ্গলবার সংঘর্ষের পর থমথমে ভাঙড়-২ ব্লক। সেখানেও মোতায়েন প্রচুর পুলিশ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সিদ্ধনাথ গুপ্ত-সহ শীর্ষস্তরের পুলিশকর্তারা। ভাঙড়ে চলছে তৃণমূলের ‘নবজোয়ার যাত্রা’। ভাঙড়-১ ব্লকে যখন মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া ঘিরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত তখন ভাঙড়-২ ব্লকে রয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার ভাঙড়-২ ব্লক থেকে ‘নবজোয়ার যাত্রা’ শুরু করে সোনারপুর, বারুইপুর, জয়নগর হয়ে বিষ্ণুপুরে যাওয়ার কথা অভিষেকের।
এর মধ্যেই ভাঙড়ের বিবিরহাট এলাকায় বোমাবাজি করার অভিযোগ উঠেছে আইএসএফের বিরুদ্ধে। ভাঙড়-১ ব্লকের নারায়ণপুরে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাওয়া তৃণমূল কর্মীদের উপর হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে আইএসএফের বিরুদ্ধে। তার জেরে এক তৃণমূল কর্মীর মাথায় ফেটে গিয়েছে। গাড়ি ভাঙচুরেরও অভিযোগ উঠেছে। সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে আইএসএফ। ভাঙড়, ক্যানিং এবং মন্দিরবাজার এলাকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে জেলাশাসক, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের জেলা আধিকারিকের হস্তক্ষেপ চেয়ে ইমেল করেছে সিপিএম।
সংঘর্ষ নিয়ে ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক তথা ভাঙড়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত তৃণমূল নেতা শওকত মোল্লা বলেন, এর জন্য দায়ী আইএসএফ। তারা বোমা নিয়ে তাণ্ডব চালাচ্ছে। তৃণমূল কর্মীরা কোনও অশান্তির সঙ্গে জড়িত নয়। আত্মরক্ষার জন্য আমাদের কর্মীরা হাতে লাঠি নিয়েছেন। কেউ যদি দোষ করে থাকে তাকে অবিলম্বে গ্রেফতার করা হোক।’’
ভাঙড়ে উত্তেজনার আবহে বুধবার আচমকা নবান্নে যান সেখানকার আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। দুপুর ৩টে নাগাদ তাঁকে নবান্নে ঢুকতে দেখা যায়। নওশাদ একাই ছিলেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়নি। নবান্ন থেকে বেরিয়ে নওশাদ জানান, ভাঙড়ে পঞ্চায়েত ভোট পূর্ববর্তী পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন তিনি। তাঁর দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে তাঁর যাওয়ার কথা আগে থেকে ইমেল করে জানিয়েছিলেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর দেখা হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী ব্যস্ত ছিলেন বলে জানিয়েছেন নওশাদ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy