রাজ্য নির্বাচন কমিশনের নবনিযুক্ত কমিশনার রাজীব সিংহ। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে অশান্তির মধ্যেই রাজ্যে নিজেদের পর্যবেক্ষক পাঠাবে বলেছিল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলে কলকাতা হাই কোর্টে গেল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। আদালতের কাছে তারা জানতে চেয়েছে, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কি আদৌ রাজ্য নির্বাচন কমিশনের উপর নজরদারি করার এক্তিয়ার আছে? হাই কোর্টের কাছে নির্বাচন কমিশনের প্রশ্ন জাতীয় মানবাধিকার কমিশন কি এ ব্যাপারে অতিসক্রিয়তা দেখাচ্ছে?
বুধবার এই সমস্ত প্রশ্ন নিয়েই কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। গত বৃহস্পতিবারই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনের নতুন কমিশনার রাজীব সিংহ। সেই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট হওয়ার কথা আগামী ৮ জুলাই। যার জন্য মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর্ব শুরু হয়েছে ৯ জুন থেকে। চলবে বৃহস্পতিবার অর্থাৎ ১৫ জুন পর্যন্ত। ইতিমধ্যেই মনোনয়ন জমা দেওয়া নিয়ে রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছে বিভিন্ন এলাকা। এই অশান্তির আবহেই মনোনয়ন-পর্বে গোলমালের ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। যাকে অতিসক্রিয়তা বলে মন্তব্য করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তাঁদের যুক্তি, একটি স্বাধীন সংস্থার কাজের উপর অন্য স্বাধীন সংস্থা নজরদারি করতে পারে না। চলতি সপ্তাহেই এই মামলার শুনানি হতে পারে।
রবিবার মানবাধিকার কমিশনের তরফে পর্যবেক্ষক নিয়োগের ঘোষণা করা হয়। তারা জানায়, কমিশনের ডিজি (তদন্ত) কমিশনের বিশেষ পর্যবেক্ষক হিসাবে কাজ করবেন। রাজ্যের নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা করেই পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত নির্বাচন সংক্রান্ত পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখবেন তিনি। পাশাপাশি, পঞ্চায়েত ভোটের সময় যে সব এলাকায় গোলমালের আশঙ্কা রয়েছে, সেই স্পর্শকাতর এলাকাগুলি চিহ্নিত করবেন ডিজি। স্পর্শকাতর এলাকা চিহ্নিত করার পর কমিশনকে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্টও দেবেন। ওই এলাকাগুলিতে পঞ্চায়েত ভোটের সময় বা পরে প্রয়োজনে ‘মাইক্রো হিউম্যান রাইটস অবজার্ভার’ মোতায়নের পরামর্শও দিতে পারেন ডিজি। পঞ্চায়েত নির্বাচনের গোটা প্রক্রিয়া চলাকালীন রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা সুনিশ্চিত করতে মুখ্যসচিব এবং রাজ্য পুলিশের ডিজিকে নোটিসও দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছিল কমিশন। এ বার জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সেই পদক্ষেপ নিয়েই প্রশ্ন তুলল রাজ্য নির্বাচন কমিশন।
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে বিরোধীদের জনস্বার্থ মামলায় রবিবার কলকাতা হাই কোর্ট ভোটে পর্যবেক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত একটি নির্দেশ দিয়েছে। বিরোধীদের দাবি ছিল, পঞ্চায়েত ভোটের নজরদারিতে কোনও বিশেষ পর্যবেক্ষক বা অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি বা বিশেষ অফিসার নিয়োগ করা হোক। তাঁর নজরদারিতেই ভোট হবে।সেই আর্জি মঞ্জুর করেনি আদালত। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ বলেছে, রাজ্য নির্বাচন কমিশন ভোটের জন্য পর্যবেক্ষক নিয়োগ করে। সেখানে ডব্লিউবিসিএস এবং আইএএস কর্তাদের নিয়োগ করা হয়। তাই আলাদা ভাবে পর্যবেক্ষকের দরকার নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy