তৃণমূল পরিচালিত অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভার দু’কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগ উঠল।
সম্প্রতি পুরপ্রধান তৃণমূলের প্রবোধ সরকার অশোকনগর থানায় এই তছরুপের অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাঁর অভিযোগের তির একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের কয়েকজন কর্মীর বিরুদ্ধে। জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।’’ বিরোধীদের অভিযোগ, পুর কর্তৃপক্ষ সব দায় ব্যাঙ্কের ঘাড়ে চাপিয়ে দিচ্ছে। তা চলবে না। গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে অশোকনগরের রাজনীতি এখন সরগরম।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরসভার পক্ষ থেকে প্রায় ৯২ লক্ষ টাকা ওই ব্যাঙ্কে জমা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে তা ব্যাঙ্কের নথিতে ছিল না বলে অভিযোগ।
পুলিশ ও পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৩-১৪ এবং ২০১৪-১৫ সালে আর্থিক বর্ষে মিড-ডে মিল, বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতার মতো সরকারি প্রকল্পের জন্য একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের হাবরা শাখা থেকে চারটি চেকের মাধ্যমে দু’কোটি টাকা তোলা হয়। ওই চেকে পুরসভার তৎকালীন পুরপ্রধান এবং বর্তমান উপ পুরপ্রধান তৃণমূলের সমীর দত্তের স্বাক্ষর ছিল বলে পুরসভা কর্তৃপক্ষের দাবি। অভিযোগ, সেই টাকা পুরসভার তহবিলে জমা না পড়ে দুটি সংস্থার অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছিল।
বিধানসভা ভোটের সময় বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। তারপরেই প্রবোধবাবু থানায় অভিযোগ করেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের অভিযোগটা ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। আমরা আইনত পদক্ষেপ করেছি এবং সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি।’’
কী বলছেন সমীরবাবু?
তিনি জানান, ওই ব্যাঙ্কের ৯জন কর্মী টাকা তছরুপের ঘটনায় জড়িত। তাঁর কথায়, ‘‘আমি বা পুরসভার কেউই চেকে স্বাক্ষর করিনি। তা ছাড়া ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ নিজেদের গাফিলতির কথা স্বীকারও করেছেন।’’
বিরোধীদের অবশ্য দাবি, পুরকর্তৃপক্ষ তাঁদের দায় এড়াতে পারেন না। তা ছাড়া যে দুটি সংস্থার নামে টাকা জমা পড়েছে তা ভুয়ো। বাস্তবে তাদের কোনও অস্তিত্ব নেই। পুরসভার বিরোধী দলনেতা সিপিএমের চিত্তরঞ্জন বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমাদের পুরসভা আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া। সেখানে ওত টাকা কে নিল? ওই টাকা গেলই বা কোথায়? টাকা ফিরিয়ে আনতে আমরা পুরপ্রধানের কাছে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি করেছিলাম। লিখিত ভাবে ওই বিষয়টি নিয়ে বোর্ড মিটিংয়ের দাবিও জানিয়েলাম।’’ কিন্তু পুরপ্রধান তা করেননি বলে তিনি জানান।
পুলিশ জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই ব্যাঙ্ক থেকে বহু নথিপত্র পাওয়া গিয়েছে। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ পুলিশকে জানিয়েছে, যাদের নামে অভিযোগ হয়েছে তাদের ব্যাঙ্ক থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy