আহত পুলক রায়চৌধুরী।
গোটা দেশেই চিনা মাঞ্জা দেওয়া সুতোর ব্যবহার নিষিদ্ধ। অথচ বিশ্বকর্মা পুজোর দিন সেই সুতোই গলায় পেঁচিয়ে যাওয়ায় আহত হলেন এক স্কুল শিক্ষক। ঘটনাটি ঘটেছে বারাসত উড়ালপুলের উপরে।
সাধারণত নাইলনের সুতোর উপরে ধাতু ও কাচের গুঁড়ো এবং সিন্থেটিক আঠার প্রলেপ দিয়ে চিনা মাঞ্জা সুতো তৈরি হয়। এই সুতো শুধু ঘুড়িই কাটে না, সামান্য ঘষাতেই চামড়া ফালাফালা হয়ে যেতে পারে। গলায় খুব বেশি চেপে বসলে প্রাণহানির আশঙ্কাও থাকে। গত কয়েক বছরে উত্তরপ্রদেশ, গুজরাতে একাধিকমৃত্যুর জন্য এই চিনা মাঞ্জাই কাঠগড়ায় উঠেছে। ২০১৬ সালের শেষে এই মাঞ্জা নিষিদ্ধ করে জাতীয় পরিবেশ আদালত। এই সুতো পরিবেশের জন্যও ক্ষতিকর। কারণ, এগুলি পচে না। সুপ্রিম কোর্টও সেই নির্দেশ বহাল রাখে।
কিন্তু তার পরেও যে নিষিদ্ধ চিনা মাঞ্জার ব্যবহার অবাধে চলছে তা প্রমাণ করে দিল বারাসতের ঘটনা। পুলক রায়চৌধুরী নামে আহত ওই ব্যক্তি ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জের কনকনগর এস ডি ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক। বারাসত স্টেশনের কাছে রেললাইনের উপর দিয়ে ৩৪ ও ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়ককেজুড়েছে উড়ালপুলটি। সেই উড়ালপুলে ওঠার জন্য এ দিন বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ বারাসত কলোনি মোড় থেকে মোটরবাইকে চেপে চাঁপাডালি মোড়ের দিকে যাচ্ছিলেন পুলকবাবু। সঙ্গে ছিল তাঁর মেয়ে। উড়ালপুলের একটু উপরে ওঠার পরেই পুলকবাবুর গলায় জ্বালা করতে থাকে। প্রথমে তিনি গুরুত্ব দেননি। একটুপরে মোটরবাইক থামিয়ে গলায় হাত দেন তিনি। হাতে রক্ত লাগার পাশাপাশি উঠে আসে একাধিক চিনা মাঞ্জা দেওয়া সুতোও। স্থানীয়েরা তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় বারাসত জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান। তাঁর গলায় আটটি সেলাই পড়েছে। তিনি বলেন, ‘‘এ ভাবে উড়ালপুলের উপরে মাঞ্জা সুতো পড়ে থাকলে বড়দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই যায়। বেশির ভাগ মাঞ্জা সুতো এত সরু হয় যে সেগুলি দূর থেকে দেখাও যায় না। সে কারণে উড়ালপুলের উপরে যাতে সুতো পড়ে না থাকে, তা দেখা দরকার।’’ এর আগে পরমা উড়ালপুলে একই ভাবে মাঞ্জা সুতোয় গলা কেটে আহত হয়েছিলেন এক ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া। এক ট্র্যাফিক সার্জেন্টওগাল কেটে আহত হন।
বিশ্বকর্মা পুজোর দিনে যে সব ঘুড়ি উড়ছিল, তার সুতো কেটেই উড়ালপুলে পড়ে থাকতে পারে বলে মত স্থানীয়দের। আবার অনেক সময়ে ঘুড়ি কেটে গেলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি লাটাইয়ে দ্রুত সুতো গোটাতে থাকেন। তখন সেই সুতো উড়ালপুলে পড়ে কারও গলায় লাগলে কেটে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে বলে জানাচ্ছেনস্থানীয়েরা। এই ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে যান বারাসত পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান অশনি মুখোপাধ্যায়। এর পরে উড়ালপুলের দুই প্রান্তেই মাঞ্জা সুতো নিয়ে নজরদারি শুরু করেছে পুলিশ। অশনিবাবু বলেন, ‘‘আমরা ঘুড়ির দোকানগুলিতে তল্লাশি করব। সেখানে এই ধরনের সুতো থাকলে তা বাজেয়াপ্ত করাহবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy