চিকিৎসাধীন এক নাবালিকাকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগকে কেন্দ্র করে শুক্রবার সকাল থেকে উত্তপ্ত হয়ে উঠল উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়া। সেখানকার গ্রামীণ হাসপাতালের এক গ্রুপ ডি কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, চিকিৎসাধীন ওই নাবালিকাকে শৌচাগারে ডেকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন তিনি। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে যায় হাসপাতাল চত্বরে। ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হাসপাতালে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পরে নাবালিকার অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্তকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বুধবার জ্বর, বমি নিয়ে হাড়োয়া গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল ওই নাবালিকা। অভিযোগ, বৃহস্পতিবার ভোর থেকে ওই হাসপাতালের ডি গ্রুপের এক কর্মী তাকে একাধিক শারীরিক পরীক্ষা করানোর নাম করে উত্ত্যক্ত করতে থাকেন। অভিযোগ, এক শারীরিক পরীক্ষার নাম করে ওই নাবালিকাকে শৌচাগারে ডেকে নিয়ে যান তিনি। সেখানেই তার গায়ে হাত দেন, নানা ভাবে শারীরিক নির্যাতনের চেষ্টা করেন বলেও অভিযোগ। সেই সময় ওই নাবালিকা আতঙ্কিত হয়ে চিৎকার করে। তার চিৎকারে ভয় পেয়ে ঘটনাস্থল ছেড়ে পালান অভিযুক্ত।
শুক্রবার সকাল থেকে এই ঘটনার প্রতিবাদে হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ দেখান বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা। হাসপাতালের সামনে বেড়াচাঁপা হাড়োয়া রোড অবরোধও করেন তাঁরা। অবরোধের জেরে প্রায় আধ ঘণ্টা ওই রাস্তায় যান চলাচল স্তব্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। হাড়োয়া থানার সামনে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্বও। বিক্ষোভকারীদের দাবি, পুলিশ গোটা ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। ঘটনায় হাসপাতালের অন্য কর্মীও জড়িত রয়েছেন। কী ভাবে হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডে এক জন পুরুষ কর্মী প্রবেশ করলেন? এ বিষয়ে স্থানীয় মানবাধিকার কর্মী সালাউদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘‘আরজি কর-কাণ্ডে গোটা দেশ তোলপাড়। সেই ঘটনায় দোষীরা প্রকৃত শাস্তি না পাওয়ার কারণেই দুষ্কৃতীরা এ ভাবে পার পেয়ে যাচ্ছে।’’
ঘটনা প্রসঙ্গে মিনাখাঁর এসডিওপিও কৌশিক বসাক বলেন, ‘‘হাড়োয়া হাসপাতালের ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পকসো আইনের ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে।’’ শুক্রবারই অভিযুক্তকে বসিরহাট আদালতে হাজির করানো হয়। তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানিয়েছে পুলিশ।
আরও পড়ুন:
উল্লেখ্য, দিন কয়েক আগে ডায়মন্ড হারবারের হাসপাতালেও এক নাবালিকাকে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে স্বাস্থ্যকর্মীর বিরুদ্ধে। গত শনিবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার নেতড়ার এক বাসিন্দা তাঁর অসুস্থ কন্যাকে ডায়মন্ড হারবার হাসপাতালে ভর্তি করান। রাতে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) স্থানান্তরিত করা হয়। অভিযোগ, ওই রাতেই তাকে শারীরিক নির্যাতন করেন হাসপাতালেরই এক সাফাইকর্মী। অভিযুক্তকে পরে পুলিশ গ্রেফতার করে। সেই আবহেই আবার হাড়োয়ায় একই ধরনের অভিযোগ উঠল।