ফাঁকা ন্যাজাটের রাস্তাঘাট। ছবি: নবেন্দু ঘোষ
সন্দেশখালি থানা এলাকার মণিপুর, আতাপুর, রামপুর এলাকায় চারজন করোনা আক্রান্ত হলেন। মঙ্গলবার এঁদের রিপোর্ট আসে। তাতে করোনা পজ়িটিভ বেরোয়।
মণিপুরের যে যুবক করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, তিনি একটি ব্যাঙ্কের কর্মী। কলকাতা ও ক্যানিং এলাকায় তাঁকে যেত হত। এই যুবকের কয়েক দিন আগে জ্বর আসে। খুলনা হাসপাতালে করোনা পরীক্ষা করানো হয়। মঙ্গলবার পর্যন্ত তিনি এলাকার বিভিন্ন জায়গায় বাইক নিয়ে ঘুরে বেরিয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। ওই যুবকের সংস্পর্শে আসা ২০ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে বলে জানান সন্দেশখালি ২ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সঞ্জয়কুমার রায়। আক্রান্ত যুবকের এখনও তেমন কোনও উপসর্গ নেই। তাই চিকিৎসকেরা তাঁকে বাড়িতে পৃথক ভাবে রেখে চিকিৎসা করছেন।
আতাপুরের বছর আটান্নর এক ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি কলকাতায় নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতেন। দু’সপ্তাহ আগে জ্বর নিয়ে বাড়ি ফেরেন। এরপরে করোনা পরীক্ষা করালে মঙ্গলবার পজ়িটিভ রিপোর্ট বেরোয়। ব্লক প্রশাসন চাইছে, আক্রান্ত ব্যক্তি রাজি হলে কোভিড হাসপাতালে পাঠানো হবে। এই ব্যক্তির পরিবারের ৫ জন যেহেতু আক্রান্তের প্রাথমিক সংস্পর্শে এসেছেন, তাই তাঁদেরও বুধবার করোনা পরীক্ষা করা হয়।
রামপুরের বাসিন্দা এক নার্স করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি ন্যাজাট থানার হাটগাছি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নার্স। তিনি ও তাঁর স্বামী করোনা আক্রান্ত হয়েছেন বলে মঙ্গলবার রিপোর্ট আসে। তাঁদেরও কোনও উপসর্গ নেই। বাড়িতে পৃথক ভাবে রেখেই চিকিৎসা চলছে। সব মিলিয়ে সন্দেশখালি ২ ব্লকে এখনও পর্যন্ত মোট ৬ জন করোনা আক্রান্ত হলেন।
হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের ৮ নম্বর সান্ডেলবিল গ্রামের বাসিন্দা এক মহিলা কিছু দিন আগে করোনা আক্রান্ত হন। ২৮ জুলাই জানা যায়, মহিলা করোনা মুক্ত হলেও ছেলে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। সেই সঙ্গে এই ব্লকের এক ব্যক্তি কয়েক দিন আগে করোনা আক্রান্ত হন। এরপর তাঁর স্ত্রী-ও করোনা আক্রান্ত হন বলে ব্লক প্রশাসন জানিয়েছে। ২৩ জুলাই ফের নিয়ম মেনে ওই মহিলার করোনা পরীক্ষা হয়। মঙ্গলবার রিপোর্ট আসে এখনও ওই মহিলা করোনা মুক্ত নন।
হিঙ্গলগঞ্জের বিএমওএইচ বলেন, “দু’জনের কোনও উপসর্গ নেই। তাই বাড়িতে পৃথক ভাবে রেখে চিকিৎসা চলছে। আক্রান্ত মহিলার আবার করোনা পরীক্ষা করা হবে নিয়ম মেনে।” এ ছাড়া, মিনাখাঁ ব্লকের ধুতুরদহ, কুসড়া, উচিলদহ গ্রামের তিনজন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদেরও বাড়িতে রেখে চিকিৎসা চলছে। তাঁদের প্রাথমিক সংস্পর্শে কারা এসেছেন খোঁজ চলছে। এই নিয়ে মিনাখাঁ ব্লকে আক্রান্ত হলেন ৬৩ জন। সব করোনা আক্রান্ত এলাকায় কন্টেনমেন্ট জ়োনে ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে—পশ্চিমবঙ্গে দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ১২৮। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ১৪৮। তার আগের দু’দিন ছিল ১১৫ এবং ১০১। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ১৩৬ এবং ১৪২। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ১২৮, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যার গড় পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy