রাস্তার পাশে মদ্যপান করে বেহুঁশ হয়ে পড়ে থাকা যুবক মামাকে কাটারি-কুড়ুল দিয়ে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগে গ্রেফতার হল চোদ্দো বছরের ভাগ্নে এবং তার কিশোর সঙ্গী।
বৃহস্পতিবার সকালে বীরভূমের সিউড়ি থানা এলাকার কড়িধ্যা ডোমপাড়ায় মিলেছিল সুব্রত অঙ্কুরের (২৭) ক্ষতবিক্ষত দেহ। খুনের ধরন দেখে তদন্তকারীরা অনুমান করেছিলেন, এর পিছনে নারীঘটিত কারণ থাকতে পারে। পুলিশের দাবি, জেরায় চোদ্দো বছরের কিশোর তাদের কাছে বলেছে, তার এক আত্মীয়ার সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল সুব্রতর। কিশোরটি সে কথা জেনে ফেলায় সুব্রত তাকে মারধর, বকাঝকা করেন। ‘হুমকি’ও দেন। সেই আক্রোশে এগারো বছর বয়সী বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে সুব্রতকে খুন করেছে সে। যদিও সুব্রতের অন্য ‘সম্পর্কের’ কথা মানতে চায়নি তাঁর পরিবার।
শুক্রবার সকালে দুই কিশোরকে গ্রেফতার করে ‘জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড’-এ পাঠায় পুলিশ। তাদের ১৪ দিনের জন্য বহরমপুর হোমে
রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বীরভূমের পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীর কুমার বলেন, ‘‘তদন্ত প্রায় গুটিয়ে আনা হয়েছে। কয়েকটা বিষয় দেখা হচ্ছে।’’
সিউড়ি ১ ব্লকের চাকদহা গ্রামের বাসিন্দা সুব্রত একটি মোটরবাইক শো-রুমে কাজ করতেন। বুধবার রাতে তিনি গিয়েছিলেন ডোমপাড়ায় এক বন্ধুর বাড়িতে। ওই এলাকাতেই তাঁর এক সম্পর্কিত দিদি থাকেন। তাঁর ছেলে চোদ্দো বছরের কিশোরটি। তার বন্ধুও ডোমপাড়ার বাসিন্দা। তার মা পেশায় পরিচারিকা। দুই কিশোরের বাবাই মারা গিয়েছেন। দুই কিশোরের কেউই স্কুলে যায় না। চোদ্দো বছরের ছেলেটি ইতিমধ্যে মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশের দাবি, বন্ধুর বাড়ি থেকে মদ্যপান ফেরার পথে দিদির বাড়ির কাছেই পড়ে যান সুব্রত। অচৈতন্য অবস্থায় তাঁকে পড়ে থাকতে দেখে দীর্ঘদিনের পুষে রাখা রাগ মেটানোর কথা মাথায় আসে তাঁর ভাগ্নের। রাত সাড়ে ১২টা থেকে দেড়টার মধ্যে বন্ধুর সাহায্যে ডাব, তালশাঁস কাটার ধারাল কাটারি এবং একটি কুড়ুল জোগাড় করে সে। চ্যাংদোলা করে মামাকে তুলে রাস্তার পাশের একটি ঝোপে নিয়ে যায় দুই বন্ধু। সুব্রতের
কপালে কাটারির কোপ মারা হয়। চোট পেয়ে হুঁশ ফিরতে তিনি বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাঁর মুখ, পেটে ফের অস্ত্রের কোপ মারা হয়। কব্জি থেকে কেটে নেওয়া হয় দু’হাত, পুরুষাঙ্গ। মৃত্যু নিশ্চিত করার পরে কলের জলে অস্ত্রে লাগা রক্ত ধুয়ে নেয় দুই কিশোর।
অভিযোগ শুনে সুব্রতের সম্পর্কিত দিদি বলেন, ‘‘বুধবার রাতে বাড়ি ছিলাম না। সেই সুযোগে ছেলে যে এমন কাণ্ড করবে ভাবতে পারছি না!’’ অন্য কিশোরের মায়ের বক্তব্য, বন্ধুর ডাকে বুধবার রাত ১২টা নাগাদ বেরিয়েছিল তাঁর ছেলে। রাতে ফেরেনি। সে যে এমন কিছুর সঙ্গে জড়িয়ে পড়তে পারে, তা তাঁর ভাবনার বাইরে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy