সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে দীর্ঘদিন ধরে বিচারাধীন বন্দিদের মুক্তি দিতে কলকাতার প্রেসিডেন্সি জেলে আদালত বসালেন কলকাতার তিন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট। এক দিনে ১২ জন বন্দির শুনানি করলেন তাঁরা। জামিনে মুক্তি পেলেন এক বন্দি। কারা দফতর সূত্রের খবর, মুক্তি পাওয়া বিচারাধীন ওই বন্দির নাম সাহেব আলম। ছিনতাইয়ের মামলায় দেড় বছরেরও বেশি প্রেসিডেন্সি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বন্দি ছিলেন। কিন্তু ছিনতাইয়ের মামলায় সর্বোচ্চ সাজা তিন বছরের হওয়ায় তিনি ইতিমধ্যেই অর্ধেকের বেশি বন্দিজীবন কাটিয়ে ফেলেছেন। তাই তাঁকে মুক্তি দিয়েছেন বিচারকেরা।
অপরাধ প্রমাণ হলে সর্বোচ্চ যে শাস্তি, তার অর্ধেক ভোগ করা হয়ে গিয়েছে। অথচ, বিচার শেষ হচ্ছে না। ঘুচছে না বন্দিদশা। দেশের বিভিন্ন জেলে এমন বন্দির সংখ্যা প্রায় আড়াই লক্ষ। এই বন্দিদেরই সম্প্রতি জামিনে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। ১ অক্টোবর থেকে দু’মাসের মধ্যে নিম্ন আদালতগুলিকে ওই নির্দেশ কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সেই মতো গত ৯ অক্টোবর প্রেসিডেন্সি জেলে গিয়েছিলেন কলকাতার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এবং দু’জন অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট। তিন বিচারক ওই দিন ১২ জন বন্দির বক্তব্য এবং মামলা খতিয়ে দেখেন। এর পরেই ১২ জনের মধ্যে সাহেবকে জামিনে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেন তাঁরা। কারা দফতর সূত্রের খবর, ১৭ অক্টোবর দীর্ঘদিন ধরে বিচারাধীন অবস্থায় জেলে বন্দি রয়েছেন, এমন বন্দিদের জামিনে মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি ফের খতিয়ে দেখতে আসবেন তাঁরা।
ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৩৬এ ধারা অনুযায়ী, এমন বিচারাধীন বন্দিদের জামিনে মুক্তি পাওয়ারই কথা। কিন্তু বাস্তবে তা হয় না বলেই অভিযোগ। এর আগেও কয়েক বার এই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে শীর্ষ আদালত। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। তাই এ বার কত দিনের মধ্যে এই নির্দেশ কার্যকর করতে হবে, তার সময়সীমাও নির্দিষ্ট করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
রাজ্য কারা দফতরের এক কর্তার কথায়, “এতে আমাদের কিছুই করার নেই। পুরো বিষয়টি বিচারবিভাগের উপরে নির্ভর করছে। তবে বিচারাধীন বন্দিদের জন্য আমাদের জেলগুলিতে অযথা বন্দিদের ভিড় বেড়েই চলেছে। এতে নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগ উত্তরোত্তর বাড়ছে। এ ভাবে যদি দীর্ঘদিন বিচারাধীন অবস্থায় বন্দিরা মুক্তি পান, সেটা ভালই হবে।” কারা-কর্তাদের আশা, শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মেনে আগামী দু’মাসের মধ্যে অন্তত কয়েক’শো বন্দি এ রাজ্যে জামিনে মুক্তি পাবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy