স্বাধীনতা দিবসের ছুটিতে ঘুরে নেওয়ার জন্য ৩ জায়গা —প্রতীকী ছবি।
১৫ অগস্ট স্বাধীনতা দিবস মানেই ছুটির দিন। এমন দিনে ঘরে বসে না থেকে ঘুরতে যেতে চান এমন কোনও জায়গায় যেখানে সকালে বেরিয়ে সারা দিন ঘুরে সন্ধ্যা বা রাতের মধ্যেই ফিরে আসা যায়? পরিবার নিয়েও যাওয়া যায়, আবার বন্ধুরা একসঙ্গে গিয়ে উপভোগ করা যায়। কলকাতার বুকে, কলকাতার কাছে-পিঠে এমন ৩ চেনা, স্বল্পচেনা জায়গার সন্ধান রইল।
পিয়ালি আইল্যান্ড
মাতলার বুকে পিয়ালির মিশে যাওয়া, ম্যানগ্রোভ, প্রজাপতির ওড়াউড়ি দেখতে চাইলে বেরিয়ে পড়তেই পারেন পিয়ালি দ্বীপের উদ্দেশ্যে। অনেকে একে সুন্দরবনের প্রবেশ পথও বলেন। শহর ছাড়িয়ে গ্রামের পথ ধরে গাড়ি ছুটলেই, বদলাতে থাকে দৃশ্যপট। এক দিনের ছুটিতে যদি ব্যস্ত শহুরে জীবন থেকে মুক্তি চান, যদি দু’চোখ ভরে দেখতে চান প্রকৃতির রূপ, তবে সকালবেলাই বেরিয়ে পড়তে পারেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার পিয়ালি দ্বীপের উদ্দেশ্যে।
শহর ছাড়িয়ে খানিক এগোলেই, বর্ষার সবুজ প্রকৃতি মন ভরিয়ে দেবে। পিয়ালি দ্বীপে যাওয়ার পথে, বাঁকে বাঁকে উঁকি দেয় নদী। শীতকালে পিয়ালির আকর্ষণ অন্য রকম। ঝাঁকে ঝাঁকে পরিযায়ীর দল এসে ভিড় করে নদীতে। তবে বর্ষার রূপ একেবারেই আলাদা। ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি না পড়লে, নৌকোয় ভেসে পড়া যায় নদীর বুকে। মাতলা ও পিয়ালির মেলামেশা, নদীর চরে পাখির ঘোরাঘুরি, ম্যানগ্রোভের রূপ নিমেষেই দূর করে দেয় ক্লান্তি। তবে এই জায়গা তাঁদেরই ভাল লাগবে, যাঁরা পক্ষীপ্রেমী। যাঁরা প্রকৃতির নির্জনতায় শান্তি খুঁজে পান। গ্রাম্য সরল মানুষগুলির সরল জিজ্ঞাসা, আতিথেয়তা ভুলিয়ে দেবে শহুরে জটিলতা।
কী ভাবে যাবেন
শিয়ালদহ থেকে সকালবেলা জয়নগরের দিকের লোকাল ট্রেন ধরে নেমে পড়ুন দক্ষিণ বারাসত স্টেশনে। সেখান থেকে অটোতে কেল্লা। কেল্লা থেকে হাঁটা পথে প্রকৃতির রূপ উপভোগ করতে করতেই পৌঁছনো যাবে পিয়ালির অলিন্দে।
খাবার
একেবারেই গ্রাম্য জায়গা। এখানে খাবার পাবেন না। তাই খাবার সঙ্গে নিয়ে আসাই ভাল। না হলে, চা-মুড়ি খেয়েই ছুটির দিন কাটাতে হবে।
রণডিহা
এক দিনের ছুটিতে কলকাতার কাছে কোথায় যাবেন, তা নিয়ে ভাবনার শেষ থাকে না। চেনা ছকের বাইরে একটু অন্যরকম কোথাও ঘুরে আসতে চাইলে চলুন বর্ষায় লকগেট দিয়ে জলছাড়া দেখতে। বর্ধমানের গলসিতে দামোদরের উপর তৈরি হয়েছে রণডিহার লকগেট। সপ্তাহ দুই আগেই ডিভিসি জল ছেড়েছে। সেই জলেই রণডিহার রূপ খুলেছে। জলাধার জলে টই টম্বুর। এখনও সেখানে গেলে লকগেট থেকে অল্প-বিস্তর জল ছাড়া দেখা যাবে। বাদল মেঘে রণডিহার রূপই আলাদা। শীতের দিনে এখানে পিকনিকে আসেন অনেকেই। তবে লকগেট থেকে জল ছাড়া দেখতে হসে বৃষ্টির মরসুমই আদর্শ। লকগেটের ধারেই রয়েছে গাছপালা, বাঁধানো চত্বরে বসার জায়গা। আকাশ পরিষ্কার থাকলে রণডিহায় সূর্যাস্তের সময়টাও উপভোগ্য হয়ে উঠবে।
কী ভাবে যাবেন
হাওড়া থেকে চেপে বসতে পারেন পানাগড়ের ট্রেনে। সরাসরি ট্রেন না পেলে বর্ধমান গিয়ে, সেখান থেকে ট্রেন ধরে চলে যেতে পারেন পানাগড়। পানাগড় থেকে অটো বা বাসে রণডিহা। কলকাতা থেকে গাড়িতেও রণডিহা গিয়ে ঘুরে আসতে পারেন।
খাবার
স্বল্পচেনা এই জায়গা পর্যটকও আসেন হাতেগোনা। তাই স্বাধীনতা দিবসের ছুটিতে যেতে হলে, সঙ্গে খাবার নিয়ে যাওয়াই ভাল।
আলিপুর জেল মিউজ়িয়াম
ছুটির দিনে যদি কলকাতা থেকে যদি বাইরে কোথাও যেতে না চান, তা হলে ঘুরে নিতে পারেন আলিপুর জেল মিউজ়িয়াম। ব্রিটিশ ভারতে নির্মিত প্রাচীন সংশোধনাগার আলিপুর সেন্ট্রাল জেল। ২০২২ সালে সরকারি উদ্যোগে জেল রূপান্তিরত হয় মিউজ়িয়ামে। স্বাধীনতা দিবসে যদি, স্বাধীনতার ইতিহাসকে ঝালিয়ে নিতে চান, কিংবা সন্তানকে সেই ইতিহাসকে আরও ভাল ভাবে বোঝাতে চান, তা হলে আসতে পারেন এখানে। প্রতি সন্ধ্যায় ‘লাইট অ্যান্ড সাউন্ড’ শো-এর মাধ্যমে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস এখানে তুলে ধরা হয়। সুভাষচন্দ্র বসু, চিত্তরঞ্জন দাস-সহ অসংখ্য নামী মানুষের স্মৃতিধন্য ‘হেরিটেজ’ মিউজ়িয়াম অন্যতম ভ্রমণস্থান হয়ে উঠেছে। গত দু’বছরে যাঁরা যেতে পারেননি, তাঁরা গিয়ে ঘুরে নিতে পারেন সুভাষচন্দ্রের কক্ষ, প্রদর্শশালা। বেলা ১১টা থেকেই দর্শকদের জন্য খুলে যায় সংগ্রহশালা।
কী ভাবে যাবেন
কলকাতার বাইরে থেকে এলে হাওড়া স্টেশনে নেমে ট্যাক্সি বা ক্যাব ভাড়া করে নিতে পারেন। এ ছাড়া, মেট্রোও আছে। জায়গাটি হাজরা মোড়ের কাছে।
খাবার
মিউজ়িয়ামে ক্যাফে আছে। এ ছাড়া, কলকাতার যে কোনও রেস্তোরাঁতে ঢুঁ দিতে পারেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy