ছবি- নীলদীপ গার্ডেন।
লোকের মুখে মুখে ঘোরে এমন পিকনিক স্পটগুলিতে এই শীতে জায়গা পাওয়া ভার। ভাগ্য প্রসন্ন না হলে এই শীতেও পিকনিকে গিয়ে রোদে পিঠ দিয়ে কমলালেবু খাওয়া হবে না। কারণ, আগে থেকে ঠিক করতে পারেননি কোথায় যাবেন। এ দিকে বড়দিনটা বাড়িতে বসেই কেটে যাবে এ তো হতে দেওয়া যায় না।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা যে পাঁচটি মহকুমা নিয়ে গঠিত, তার মধ্যে অন্যতম হল বারুইপুর। এমনিতে পেয়ারার জন্য বিখ্যাত হলেও জনপদ হিসেবে বারুইপুর বেশ প্রাচীন একটি মফস্সল শহর। মঙ্গলকাব্যেও বারুইপুরের উল্লেখ মেলে। কথিত আছে, নীলাচলে যাওয়ার পথে নাকি বারুইপুরে পা পড়েছিল চৈতন্যদেবের। সেখানে আদিগঙ্গার ঘাটে বসে এক রাত কীর্তন করে কাটিয়েছিলেন তিনি। সেই থেকেই শ্মশান সংলগ্ন ওই ঘাটের নাম হয় কীর্তনখোলা ঘাট।১৮৬৪ সালে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বারুইপুর আদালতেই ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট পদে যোগ দিয়েছিলেন।
কী দেখবেন?
চিন্তামণি কর পাখিরালয়
সকাল সকাল নিজেদের গাড়ি করে বেরিয়ে পড়তে পারলে, বারুইপুর যাওয়ার পথেই এক বার ঢুঁ মেরে দেখতে পারেন চিন্তামণি কর পাখিরালয়ে। কলকাতা থেকে মাত্র ২২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই পাখিরালয়ে প্রায় দু’শো প্রজাতির পাখি রয়েছে। পাখি দেখতে বা পাখির ডাক শুনতে ভালবাসেন যাঁরা, তাঁদের কাছে এটি স্বর্গরাজ্য। চেনা-অচেনা প্রচুর পাখির দেখা মেলে এখানে।
বারুইপুর রাজবাড়ি
৩৫০ বছরের পুরনো বারুইপুর রাজবাড়ি বা রাসবাড়ি। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা কপালকুণ্ডলা, দুর্গেশনন্দিনী এবং বিষবৃক্ষের মতো উপন্যাস লেখা হয়েছিল বারুইপুর রাজবাড়িতে বসেই। এ ছাড়াও আরও এমন অনেক ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে বারুইপুরের সঙ্গে।
শিবানীপীঠ
বারুইপুরেই রয়েছে দেবী কালিকার আরও জাগ্রত এক রূপ, যা শিবানীপীঠ নামে পরিচিত।
কোথায় পিকনিক করবেন?
কলকাতা থেকে মাত্র ৩১ কিলোমিটার দূরে বারুইপুরের রাজবল্লভপুরে রয়েছে নীলদীপ গার্ডেন। এই মরসুমে রংবেরঙের ফুলের বাগান, ছোটোদের খেলার পার্ক, ওয়াচ হাউস, সব্জির খেত, সুইমিং পুল সব কিছুই পাবেন এখানে। এই মরসুমে একটি দিনও ফাঁকা পাওয়া কিন্তু ভাগ্যের ব্যাপার। তাই নিশ্চিত হতে গেলে অনেকটা আগে থেকেই বুকিং করে রাখা ভাল। ‘ট্রি হাউস’ সমেত সকাল ৬টা থেকে সন্ধে ৬টা পর্যন্ত ভাড়া পড়বে ১৪০০০ টাকার মতো। ‘ট্রি হাউস’ নিতে না চাইলে দাম কম হতে পারে। তবে সন্ধের মধ্যেই সব গুটিয়ে ফেলতে হবে। কারণ, রাত্রিবাসের কোনও ব্যবস্থা এখানে নেই। খাওয়ার জন্য এখানকার নিজস্ব কেটারিং ব্যবস্থা রয়েছে। প্রত্যেকের রুচি এবং পছন্দ অনুযায়ী খাবার সরবরাহ করা হয়। কে কেমন খাবার খেতে চান এবং বাজারদর অনুযায়ী প্লেটের দাম ওঠানামা করে। বুকিং নম্বর- ৯৬৭৪৪৭৭০৪৪
কী ভাবে যাবেন?
শিয়ালদহ থেকে বারুইপুর যাওয়ার অসংখ্য লোকাল ট্রেন রয়েছে। ঠিক মতো ট্রেন পেয়ে গেলে পৌঁছতে সময় লাগবে ঘণ্টা দেড়েক। এ ছাড়াও সড়কপথে গাড়িতে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোস রোড ধরে কামালগাজি বাইপাস হয়ে বারুইপুর পৌঁছতেও প্রায় ট্রেনের মতোই সময় লাগে।
শীতের সময় পেয়ারা নাই বা কিনলেন, ফেরার পথে কিন্তু জয়নগরের মোয়া কিনে আনতে একদম ভুলবেন না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy