Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Christmas Destinations

বড়দিনের ছুটিতে কাছেপিঠে ছুটি কাটাতে চান? গন্তব্য হতেই পারে মন্দিরনগরী কালনা

ভাগীরথী নদীর তীরে কালনা শহর, নদীর অপর পাড়ে নদিয়ার শান্তিপুর। এই শহরের ইতিহাস কয়েক শতাব্দী প্রাচীন।

কালনার প্রসঙ্গ উঠলেই প্রথমেই উঠে আসে ১০৮ শিবমন্দিরের নাম।

কালনার প্রসঙ্গ উঠলেই প্রথমেই উঠে আসে ১০৮ শিবমন্দিরের নাম। ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২২ ১৭:৫৮
Share: Save:

প্রতি দিনের কর্মব্যস্ত দিনে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো হয় না? যেই সময় অফিস থেকে বাড়ি ফিরছেন তত ক্ষণে হয়তো খুদেরা ঘুমিয়ে পড়েছে। আবার সকালে আপনার ওঠার আগেই শুরু হয়ে যায় তাদের স্কুলে যাওয়ার তোড়জোড়! একান্তে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর অবসর কোথায়?

এমনটা করলে কিন্তু চলবে না। কাজ তো থাকবেই তার পাশাপাশি পরিবারের জন্যেও সময় বার করে নিতে হবে। বড়দিনের ছুটিতে পরিবারের সঙ্গে পিকনিকের পরিকল্পনা করলে কেমন হয়? খুদেরাও আনন্দ পাবে আর আপনিও একঘেয়ে জীবন থেকে খানিকটা স্বস্তি পাবেন। ভাবছেন তো কাছেপিঠে কোথায় ঘুরতে যাওয়া যায়? আপনার গন্তব্য হতেই পারে কালনা!

ছুটির দিনে শিয়ালদা বা হাওড়া স্টেশন থেকে সকালের ট্রেন ধরে চলে যান কালনায়। ভাগীরথী নদীর তীরে কালনা শহর, নদীর অপর পারে নদিয়ার শান্তিপুর। এই শহরের ইতিহাস কয়েক শতাব্দী প্রাচীন। এর পর দিনভর ঘোরাঘুরি করে ইতিহাসের গন্ধ গায়ে মেখে স্থানীয় খাবারের স্বাদ নিয়ে বিকেলের ট্রেনে ফিরে আসুন নিজের ইট-বালি-কংক্রিটের ডেরায়। ১০৮ শিবমন্দির, কালনা রাজবাড়ি, প্রতাপেশ্বর মন্দির, রাসমঞ্চ, পঞ্চরত্ন মন্দির, লালজি মন্দির ও অনন্তবাসুদেব মন্দিরের মতো দেখার মতো অসংখ্য জায়গা আছে প্রাচীন কালনায়।

কালনার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে মূলত চৈতন্য মহাপ্রভুর হাত ধরেই। ষোড়শ শতকে এই শহরেই আগমন ঘটেছিল শ্রীচৈতন্যের। তবে কালনার অধিকাংশ মন্দিরের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছিল আঠারো থেকে উনিশ শতকের মধ্যে। সেটাও বর্ধমানের মহারাজার হাত ধরেই। জানা যায় বর্ধমানের মহারাজা তেজচন্দ্র বাহাদুরের সময়েই কালনায় একাধিক মন্দির তৈরি করেন। মন্দিরগুলিতে টেরাকোটার কারুকাজ নজর কাড়বে আপনার একদা বর্ধমান রাজাদের গ্রীষ্মকালীন আবাস ছিল এই কালনা শহরেই। কালনাকে বলা হয় মন্দিরনগরী। কালনার প্রসঙ্গ উঠলেই প্রথমেই উঠে আসে ১০৮ শিবমন্দিরের নাম। কালনা রেল স্টেশন থেকে টোটো ভাড়া করেই পৌঁছে যাওয়া যায় এই মন্দিরে। যা নবকৈলাশ মন্দির নামেও পরিচিত। জানা যায়, বর্ধমানের মহারাজা তেজ চন্দ্র বাহাদুর ১৮০৯ সালে এই ১০৮ শিবমন্দির তৈরি করিয়েছিলেন। মন্দির প্রাঙ্গণের কেন্দ্রস্থলে লোহার জাল দিয়ে ঘেরা একটি এক জলাধার রয়েছে। যেখানে দাঁড়িয়ে ৩৪টি শিবলিঙ্গ একসঙ্গে দেখা যায়।

১০৮ শিবমন্দিরের কাছেই রয়েছে কালনা রাজবাড়ি।

১০৮ শিবমন্দিরের কাছেই রয়েছে কালনা রাজবাড়ি। ছবি: সংগৃহীত।

১০৮ শিবমন্দিরের কাছেই রয়েছে কালনা রাজবাড়ি। সেখানেও প্রবেশ করলে মিলবে অসংখ্য টেরাকোটার মন্দির। প্রবেশদ্বার পেরোলেই প্রথমে চোখে পড়বে একটি প্রাচীন কামান। প্রবেশদ্বারের এক পাশে প্রতাপেশ্বর মন্দির। মহারাজা প্রতাপচাঁদের স্ত্রী, তাঁর স্বামীর স্মৃতির উদ্দেশে এই মন্দিরটি তৈরি করেন। মন্দিরের গায়ে পোড়ামাটির অপূর্ব কারুকার্য মন ভরাতে বাধ্য। মন্দিরের গায়ে বিভিন্ন দেবদেবী, পৌরানিক কাহিনি ও সমকালের মানুষের জীবনযাত্রার কাহিনি অলঙ্কৃত হয়েছে। প্রতাপেশ্বর মন্দিরের পাশেই রয়েছে রাসমঞ্চ। যা কালনা রাজবাড়ির এক অন্যতম নিদর্শন। একসময় এখানে রাস উৎসব পালিত হত।

কী ভাবে যাবেন?

হাওড়া থেকে ট্রেন ধরে অম্বিকা কালনা স্টেশনে নামতে হবে। শিয়ালদহ থেকেও ট্রেন রয়েছে। স্টেশন থেকে টোটো ভাড়া করে ঘুরে দেখতে পারেন কালনা শহর। সড়কপথেও কলকাতা থেকে দিল্লি রোড ধরে কালনায় যাওয়া যায়। সময় লাগে ঘণ্টা তিনেক মতো। কলকাতা থেকে কালনা গিয়ে এক দিনেই ফিরে আসা যায়। তবে রাত্রিবাসের জন্য কয়েকটি হোটেল এবং ধর্মশালা আছে। এ ছাড়া দুর্গাপুরে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন উন্নয়ন নিগমের শৈল্পিক ট্যুরিজ়ম প্রপার্টি। বিস্তারিত জানতে ফোন করুন ৯৭৩২১০০৯৩০ নম্বরে।

অন্য বিষয়গুলি:

Chrismas Destination Kalna
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE