ভাল পিকনিক স্পটের খোঁজ করছেন? পছন্দের তালিকায় টাকি কিন্তু রাখতেই পারেন। ছবি: সংগৃহীত।
শীতের আমেজ ভাল মতো টের পাচ্ছেন কলকাতাবাসী। আর বাতাসে উত্তুরে হাওয়া বইতে শুরু করলেই বাঙালির ঘরে টেকা দায়। বাড়ির চার দেওয়ালে বন্দি থাকা নয়, শীতের মরসুম মানেই প্রাণ খুলে ঘুরে বেড়ানো। দূরে কোথাও বেড়াতে যাওয়ার সময়-সুযোগ না হলেও কাছেপিঠে বন্ধুবান্ধব আর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে চড়ুইভাতির পরিকল্পনা তো করাই যায়! ভাল পিকনিক স্পটের খোঁজ করছেন? পছন্দের তালিকায় টাকি কিন্তু রাখতেই পারেন।
দেশভাগের যন্ত্রণা বুকে নিয়ে ১৯৪৭ সালের পরে অনেকেই ও পার বাংলা থেকে চলে এসেছিলেন এ পারে। টাকি-হাসনাবাদ-বসিরহাটে নতুন করে সংসার পেতেছিলেন। তার পর থেকে টাকিও বদলাতে থাকে। বিশেষ করে পর্যটনকে সামনে রেখে দানা বাঁধতে থাকে আধুনিক টাকি শহর। কলকাতা থেকে ৭৫ কিলোমিটার দূরে ইছামতী নদীর তীরে অবস্থিত টাকি। পরিবার কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে পিকনিকের জন্য আদর্শ জায়গা।
‘গয়নার বাক্স’, ‘চাঁদের পাহাড়’, ‘পাখি’, ‘অপুর পাঁচালি’, ‘গল্প হলেও সত্যি’, ‘বিসর্জন’-এর মতো ছবির শুটিং হয়েছে এই টাকিতে। টিভি সিরিয়ালের শুটিংয়ের জন্যও প্রযোজক-পরিচালকেরা বেছে নিয়েছেন টাকিকেই। সেখানকার মনভোলানো প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও নৈসর্গিক রূপ মুগ্ধ করে সকলকে। টাকিতে জালালপুরের কাছে গড়ে উঠেছে মিনি সুন্দরবন। গোলপাতা, গরান, কেওড়া, গোলপাতা, বাইন, কাঁকাড়ার মতো গাছ লাগানো হয়েছে। জঙ্গলের মধ্যে যাওয়ার জন্য লম্বা সেতু আছে। জালালপুরেই আছে নন্দদুলালের মন্দির, সোদপুরে জেনারেল শঙ্কর রায়চৌধুরীর বাড়ি, পীরের দরগা, পদ্মপুকুর-সংলগ্ন পার্ক। টাকিতে দর্শনীয় স্থানের মধ্যে আছে টাকি রাজবাড়ি, মাছরাঙা দ্বীপ, জোড়া মন্দির, ইছামতীর ধারে বৃদ্ধাশ্রম, বিধান সৈকত।আছে ইছামতীর বুকে লঞ্চ ও নৌকা ভ্রমণ, ইকো ট্যুরিজম পার্ক, রামকৃষ্ণ মিশন, হেমন্ত ঘোষাল স্মৃতিসৌধ, সাংস্কৃতিক মঞ্চ-সহ আরও অনেক কিছু। সর্বোপরি এই গন্তব্যে গেলে প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে একেবারে কাছ থেকে দেখার সুযোগ মিলবে। সেই অনুভূতি একেবারেই আলাদা!
আর টাকিতে গেলে, তবে সেখানকার ভুবনভোলানো মালপোয়া আর পাটালি গুড়ের স্বাদ নিতে ভুলবেন না যেন!
কোথায় পিকনিক করতে পারেন?
টাকিতে পিকনিক করার জন্য জায়গার খোঁজ করছেন? তা হলে আপনার পছন্দের তালিকায় থাকতে পারে টাকি রাজবাড়ি পিকনিক স্পট। দল বেঁধে পিকনিক করতে গেলে ২০০০ টাকা দিয়ে একটি স্পট আগে থেকেই ভাড়া করে নিতে হবে। তার পর জনপিছু ৫০০ টাকা দিলেই হয়ে যাবে খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থাও। সকালের জলখাবার থেকে দুপুরে পাঁঠার মাংস-ভাত আর সন্ধ্যার নাস্তাও পেয়ে যাবেন ৫০০ টাকার মধ্যেই। প্রয়োজনে পেয়ে যাবেন ঘর ভাড়াও। দুপুরবেলা চাইলে টোটো করে ঘুরে আসতে পারেন আশপাশটা। শিয়ালদহ বা দমদম স্টেশন থেকে হাসনাবাদ লোকালে চেপে টাকি স্টেশনে নামুন। সেখান থেকে টোটোয় চেপে মিনিট দশেকের মধ্যেই পৌঁছে যাবেন টাকি রাজবাড়ি পিকনিক স্পট। ধর্মতলা থেকে হাসনাবাদের বাসও ছাড়ে। বাসে চড়েও চলে যেতে পারে টাকি। বুকিংয়ের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন ৯৬৭৯৭৮০৩৫৪ নম্বরে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy