Advertisement
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Iphone

সামান্য বদলে নতুনের নামে পুরনোই কি বিক্রি হচ্ছে? আইফোন ১৬ প্রো-ম্যাক্স কিনলে কি আফসোস করতে হবে?

আইফোন ১৫ প্রো-ম্যাক্স ব্যবহার করছেন? কিন্তু এখন তো আইফোন ১৬ প্রো-ম্যাক্স এসে গিয়েছে। নতুন আইফোন অনেক নতুন ফিচার নিয়ে এসেছে। কিন্তু সেগুলো কি আদৌ কাজের? সামান্য বদলে নতুনের নামে পুরনো আইফোনই কি বিক্রি হচ্ছে? অস্বীকার করার উপায় নেই যে সমালোচনা হচ্ছে। তা হলে কি নতুন ফোনে আপগ্রেড করা ঠিক হবে? রইল বিস্তারিত।

Comparison between iPhone16 pro max and iPhone15 series

ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:৩৭
Share: Save:

অ্যাপ্‌ল সম্প্রতি তার বহুল প্রত্যাশিত আইফোন ১৬ সিরিজ়ের চারটি ফোন বাজারে এনেছে। তার পর যা হয় তাই, উত্তেজনা এবং সমালোচনার ঢেউ। কেউ কেউ এর অত্যাধুনিক বৈশিষ্ট্যগুলি নিয়ে উচ্ছ্বসিত। অন্যেরা ভাবছেন যে এটি আদৌ এক ধাপ এগিয়েছে কি না। এই সিরিজের আইফোন ১৬ প্রো ম্যাক্স তার পূর্বসূরি ফোনের তুলনায় অনেক উন্নতির ইঙ্গিত দিয়েছে। কিন্তু এই আপগ্রেডগুলি দেখে আপনার কি নতুন ফোন কেনা ঠিক হবে?

আপনি যদি আজও চার বছরের বেশি পুরনো আইফোন চালান, তা হলে আইফোন ১৬ প্রো ম্যাক্সে আপগ্রেড করা অর্থপূর্ণ। কিন্তু, আপনি যদি বর্তমানে গত বছরের আইফোন ১৫ প্রো ম্যাক্স ব্যবহার করেন, তখন সিদ্ধান্তটি বেশ জটিল হয়ে যায়। আপনি কেন আপনার আইফোন ১৫ প্রো ম্যাক্সের সঙ্গেই আপাতত ঘরকন্না চালিয়ে যেতে পারেন তা নিয়েই আজকের আলোচনা।

প্রথম ইমপ্রেশন: বড় ডিসপ্লে, ছোট পার্থক্য

প্রথম নজরে, আপনি দু’টি মডেলের মধ্যে বিশাল কিছু পরিবর্তন লক্ষ করবেন না। আইফোন ১৬ প্রো ম্যাক্সটি লম্বায় কিছুটা বেড়েছে। স্ক্রিনের সাইজ এখন ৬.৭ ইঞ্চি থেকে বেড়ে ৬.৯ ইঞ্চি হয়েছে। তবে ডিসপ্লের সাইজ বাড়লেও ফোনের আকার তেমন বাড়েনি। কারণ অ্যাপ্‌ল ডিসপ্লের চারিদিকে কালো বেজেলগুলিকে পাতলা করেছে। ডিসপ্লের রেজ়োলিউশনও বাড়িয়েছে আইফোন। ১৫ প্রো ম্যাক্সের ১২৯০ x ২৭৯৬-এর তুলনায় নতুনটিতে এখন ১৩২০ x ২৮৬৮ পিক্সেল। সামান্য আপগ্রেডেশন, কিন্তু যুগান্তকারী কিছু তো নয়। এ ছাড়াও আইফোন ১৬ প্রো ম্যাক্স ভারী, ১৫ প্রো ম্যাক্সের ২২১ গ্রামের ওজনের তুলনায় এর ওজন ২২৭ গ্রাম। যদি একটি বড় স্ক্রিন আপনার অগ্রাধিকার হয়, আপনি আপগ্রেড করার দিকে ঝুঁকতে পারেন। কিন্তু মনে রাখবেন ডিসপ্লের মানের পার্থক্য খুবই কম। বরং আপনি অতিরিক্ত বড় এবং বেশি ওজনের ফোনের জন্য ঝামেলায় পড়তে পারেন।

আন্ডার দ্য হুড: বায়োনিক এ১৮ প্রো চিপ

এ বার পারফরম্যান্সের কথা বলা যাক। অ্যাপ্‌ল দাবি করে যে তার নতুন এ১৮ প্রো চিপ ‘আইফোনের ইতিহাসে সেরা’। এই চিপটি এআই-এর ক্ষমতা বাড়ানোর উপর ফোকাস করে ডিজ়াইন করা। ব্যাপারটা চিত্তাকর্ষক শোনালেও আইফোন ১৫ প্রো ম্যাক্সের এ১৭ প্রো চিপটিও কোনও স্লো চিপ নয়। এ১৮-এর ৪.০৪ গিগাহার্ৎজ় স্পিডের তুলনায় কাগজে-কলমে আগের ৩.৭৮ গিগাহার্ৎজ় স্পিডের পার্থক্যটি বিশাল বলে মনে হতে পারে। কিন্তু দৈনন্দিন ব্যবহারে এর প্রভাব বোঝার সম্ভাবনা খুবই কম। উভয় ফোনেই ৮ জিবি র‍্যাম রয়েছে। তাই আপনি যদি ইতিমধ্যেই ১৫ প্রো ম্যাক্স ব্যবহার করে থাকেন, তা হলে পারফরম্যান্সে বড় লাফের আশা করবেন না।

ক্যামেরা আপগ্রেড: এটা কি গুরুত্বপূর্ণ?

সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পার্থক্যগুলির মধ্যে একটি হয়েছে ক্যামেরায়। আইফোন ১৬ প্রো ম্যাক্স আল্ট্রাওয়াইড লেন্সে একটি উল্লেখযোগ্য আপগ্রেড এনেছে। ১২ মেগাপিক্সেল থেকে একেবারে ৪৮ মেগাপিক্সেলে লাফ দিয়েছে। এর মানে হল আরও তীক্ষ্ণ, পরিষ্কার আল্ট্রাওয়াইড শট। কিন্তু আপনি যদি এমন কেউ হন যিনি বেশির ভাগ সময় পিছনের মূল ক্যামেরা ব্যবহার করেন (যা উভয় মডেলেই একই), তা হলে আপগ্রেডের জন্য এটা যথেষ্ট কারণ না-ও হতে পারে।

নতুন ক্যামেরা বাটন দেওয়া হয়েছে। এটি একটি ফিজ়িকাল বাটন যা ল্যান্ডস্কেপ মোডে সহজে ছবি তোলার জন্য নকশা করা হয়েছে। এটি একটি মিনি ট্র্যাকপ্যাডের মতো কাজ করে। আপনি আঙুল দিয়ে ক্যামেরা মোডে সোয়াইপ করতে পারবেন। এটা অবশ্য একটা দুর্দান্ত সংযোজন। বলা ভাল, এটাই ফোন বদলের আসল কারণ হতে পারে। কিন্তু এখনের শর্ট ভিডিয়োর যুগে একটা ফোন পোর্ট্রেট মোডে ব্যবহার করা অসুবিধাজনক এবং আপনি সম্ভবত বেশির ভাগ শটের জন্য টাচস্ক্রিনে ফিরে যাবেন। তা হলে কী দাঁড়াল? অভিনব? হ্যাঁ। অপরিহার্য? না।

অ্যাপ্‌ল বুদ্ধিমত্তা: অপেক্ষা অব্যাহত

অ্যাপ্‌ল তার আসন্ন ‘অ্যাপ্‌ল ইন্টেলিজেন্স’ বৈশিষ্ট্যগুলি সম্পর্কেও একটি পেটেন্ট করেছে যা আপনার ফোনকে আরও স্মার্ট করার জন্য নকশা করা হয়েছে৷ কিন্তু এই বৈশিষ্ট্যগুলো এখন পাওয়া যাবে না। অ্যাপলের বক্তব্য, তারা পরে সফ্‌টঅয়্যার আপডেট নিয়ে আসবে। এবং তার পরেও শুধুমাত্র নির্বাচিত অঞ্চলে নিয়ে আসবে। সুতরাং, আপনি যদি এটি সম্পর্কে উত্তেজিত হন তবে আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে। কত দিন? জানা নেই।

বড় চিন্তা

আপনি যদি একটি পুরনো আইফোন থেকে আপগ্রেড করতে ইচ্ছুক থাকেন, তা হলে আইফোন ১৬ প্রো ম্যাক্স ভাল সিদ্ধান্ত হতে পারে। কিন্তু আপনি যদি ইতিমধ্যেই আইফোন ১৫ প্রো ম্যাক্সের মালিক হন, তা হলে আপগ্রেডগুলো আপনার জন্য আকর্ষণীয় হলেও পয়সা উসুল নয়। সামান্য বড় স্ক্রিন, আপগ্রেড করা আল্ট্রাওয়াইড ক্যামেরা এবং সামান্য দ্রুত প্রসেসর ভাল, কিন্তু যুগান্তকারী বলা যায় না। তবে দিনের শেষে আপগ্রেড করার সিদ্ধান্ত আপনার পছন্দ, চাহিদা আর অবশ্যই আপনার বাজেটের উপর নির্ভর করবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

iphone iPhone 16 iPhone 15 Apple
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE