পদ থেকে সরানোর তো কোনও প্রশ্নই নেই। টুম্পাই-কাণ্ডের পর কর্মসমিতির কোনও সভাও ডাকা হচ্ছে না। বরং সারদা কাণ্ডের জেরে গ্রেফতার হওয়া সহ-সচিব সৃঞ্জয় বসুকে প্যানেলে রেখেই নির্বাচন যুদ্ধে নামছে আতঙ্কিত মোহনবাগান শাসকগোষ্ঠী। বাগান সচিব অঞ্জন মিত্র শনিবার ক্লাব তাঁবুতে বসে ঘোষণা করে দিলেন দিলেন, “সৃঞ্জয়ের নাম সহসচিব হিসাবে প্যানেলে না থাকার কোনও কারণ দেখছি না। ওর গ্রেফতারের সঙ্গে ক্লাব নির্বাচনের কোনও সম্পর্ক নেই।”
হবু সচিব হিসাবে গত দেড় বছর ক্লাবের সব দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন সৃঞ্জয়। নিচ্ছিলেন নানা সিদ্ধান্ত। ক্লাবের একশো পঁচিশ বছর পূর্তি উত্সবের মূল দায়িত্ব ছিল তাঁর কাঁধেই। ‘বাগানের টুম্পাই’ সিবিআই হেফাজতে যাওয়ার পর ক্লাব কর্তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নির্বাচনের পরই হবে ওই অনুষ্ঠান। সৃঞ্জয়ের দাবি মেনেই এ বার প্রাক্তন ফুটবলার অরুময়নৈগমের নাম ঘোষণা সত্ত্বেও তাঁর হাতে ‘রত্ন’ তুলে দেওয়া হয়নি মোহনবাগান দিবসে। ঠিক ছিল, ডিসেম্বরে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে রাষ্ট্রপতি এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে এনে বড় অনুষ্ঠানের সূচনা হবে। সেখানেই দেওয়া হবে মোহনবাগান রত্ন-সহ নানা পুরস্কার। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন বাগানের শাসকগোষ্ঠী সিদ্ধান্ত নিয়েছে আগে নির্বাচন, পরে অনুষ্ঠান। বাগান সচিব বললেন, “হিসাব তৈরি। ভোটার তালিকা বেরোবে। জানুয়ারির ১৫-১৭ এর মধ্যে নির্বাচন হবে। নির্বাচনের পর অনুষ্ঠান হবে। টাকা-পয়সা তো দরকার।” টুম্পাই গ্রেফতার হওয়ার পর নির্বাচনে প্রভাব পড়বে বলেই কি এই সিদ্ধান্ত? অঞ্জন সেই গুঞ্জন উড়িয়ে বলে দেন, “আমাদের ক্লাবে কোনও বিরোধী আছে বলে আমার জানা নেই। আমরা সবাই এক।”
ক্লাবের শীষকর্তা দেবব্রত সরকার গ্রেফতার হওয়ার পর কর্মসমিতির সভা ডেকে তাঁর পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। বাগান অবশ্য সেই পথে হাঁটছে না। সহ-সচিব হিসাবে তাঁকে প্যানেলে রাখার কথা বললেও মোহনবাগান ক্লাব সে ভাবে সৃঞ্জয়ের পাশে দাঁড়াচ্ছে না। সচিব বলে দিলেন, “আমরা ব্যক্তিগতভাবে সবাই ওর পাশে আছি। কিন্তু টুম্পাইয়ের ঘটনার সঙ্গে ক্লাবের কোনও সম্পর্ক নেই। ইস্টবেঙ্গলের ঘটনার সঙ্গে টুম্পাইয়ের ঘটনা সম্পূর্ণ আলাদা। ক্লাব ক্লাবের মতো চলবে। সমর্থকরা টিমের সাফল্য দেখতে চায়। সেটা হলেই তারা খুশি। অন্য কিছু নিয়ে কেউ মাথা ঘামায় না।”
যেহেতু সৃঞ্জয়ের গ্রেফতারের ঘটনা একেবারেই ব্যবসা সংক্রান্ত তাই সচেতন ভাবেই ক্লাব কর্তারা এই ঘটনার সঙ্গে ক্লাবকে জড়াতে চান না। যদিও এ দিন আলিপুর আদালতে সৃঞ্জয়কে সিবিআই তোলার সময় হাজির ছিলেন বাগান কর্মসমিতির বেশিরভাগ সদস্যই। তবে কমিটিতে থাকা রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বা অরূপ বিশ্বাসকে দেখা যায়নি আদালতে। ছিলেন না কমিটির সদস্য কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষও। সৃঞ্জয়ের বাবা বাগান প্রেসিডেন্ট টুটু বসু এ দিনই বিদেশ থেকে ফিরেছেন। টুটু এবং সচিব অঞ্জন আদালতে না গেলেও কাছের একটি বাড়িতে বসে ছিলেন। আদালত কী সিদ্ধান্ত নেয় জানার জন্য। উদ্বিগ্ন অনেক সদস্য এবং সমর্থককে দেখা যায় আদালত চত্বরে। বিকেলে ক্লাব তাঁবুতেও ভিড় ছিল, সৃঞ্জয়ের ব্যাপারে শেষ খবর জানার জন্য। সিবিআই সৃঞ্জয়কে হেফাজতে নেওয়ার খবরে কর্তাদের মতো তাঁরাও দিশাহারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy