Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

মন নয়, মস্তিষ্ক এগিয়ে রাখছে লামদের

বিশ্বকাপ থেকে নেইমার ছিটকে যাওয়ায় ব্রাজিল নিয়ে অনেকেই দেখছি হতাশ হয়ে পড়েছে। আমি কিন্তু এখনও বলছি, ফাইনালটা লাতিন আমেরিকার দু’টো টিমের মধ্যেই হবে। তবে কোয়ার্টার ফাইনালে যা সব কাণ্ড ঘটে গেল তার পর নিজের বক্তব্য একটু সংশোধন করতে চাই। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে যখন ব্রাজিল-আর্জেন্তিনা ফাইনালের ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলাম, নেইমারের এই মারাত্মক চোটটা অবশ্যই আমার হিসাবে ছিল না। তার ওপর কার্ড সমস্যায় থিয়াগো সিলভাকেও পাওয়া যাচ্ছে না সেমিফাইনালে।

পিটার শিল্টন
শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৪ ০২:৪৭
Share: Save:

বিশ্বকাপ থেকে নেইমার ছিটকে যাওয়ায় ব্রাজিল নিয়ে অনেকেই দেখছি হতাশ হয়ে পড়েছে। আমি কিন্তু এখনও বলছি, ফাইনালটা লাতিন আমেরিকার দু’টো টিমের মধ্যেই হবে। তবে কোয়ার্টার ফাইনালে যা সব কাণ্ড ঘটে গেল তার পর নিজের বক্তব্য একটু সংশোধন করতে চাই। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে যখন ব্রাজিল-আর্জেন্তিনা ফাইনালের ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলাম, নেইমারের এই মারাত্মক চোটটা অবশ্যই আমার হিসাবে ছিল না। তার ওপর কার্ড সমস্যায় থিয়াগো সিলভাকেও পাওয়া যাচ্ছে না সেমিফাইনালে। সত্যি বলতে কী, ব্রাজিল আজ ওদের সেরা দুই প্লেয়ারকে মাঠের বাইরে রেখে নামতে বাধ্য হচ্ছে। আর সেটা এমন একটা টিমের বিরুদ্ধে, যাদের হারানো চিরকাল খুব কঠিন কাজ।

নেইমারকে ট্যাকল করা নিয়ে বলব, ও ভাবে ইচ্ছাকৃত মারাকে আদৌ ট্যাকল বলা চলে কি না, তা নিয়ে আমার সন্দেহ রয়েছে। তবে যদি ফুটবল ট্যাকল বলে ধরেওনি, সে ক্ষেত্রেও জুয়ান জুনিগার অনেক বেশি কঠিন শাস্তি প্রাপ্য ছিল। মানছি, মারার সময় ওর পক্ষে বোঝা সম্ভব ছিল না যে নেইমারের কত বড় ক্ষতি করে দিচ্ছে। কিন্তু বলের ধারেকাছেও না থেকে যে ভাবে হাঁটু দিয়ে ধাক্কা মারল, সেটা দেখে আমার স্পষ্ট মনে হয়েছে কাজটা শুধু ইচ্ছাকৃতই নয়, আগাম পরিকল্পনা মাফিক খুব ঠান্ডা মাথায় করা। অনেকে বলবেন, স্রেফ দু’জন ফুটবলারের উপর নির্ভর করে কোনও টিম বিশ্বকাপে নামে না। এত বড় মঞ্চে নিটোল পারফরম্যান্স করতে হলে দলের সতেরো-আঠারো জনের মিলিত চেষ্টা লাগে। কিন্তু সেমিফাইনালে জার্মানির মতো কঠিনতম প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে দলের দুই আইকনকে না পাওয়াটা ব্রাজিলকে চাপে রাখবেই। এটুকুই আশা করতে পারি যে, এই পরিস্থিতিতে স্কোলারির টিমের বাকিরা নিজেদের সমস্ত শক্তি একজোট করে সর্বস্ব দিয়ে লড়ে নেইমার আর থিয়াগো সিলভার অভাব ঢেকে দেওয়ার চেষ্টা করবে। বিশেষ করে ফ্রেড আর হাল্ককে আজ নিজেদের ওজন টের পাওয়াতে হবে।

প্রতিপক্ষ হিসাবে জার্মানদের থেকে বেশি বিপজ্জনক আর জেদী কোনও টিম নেই। যতটা শৃঙ্খলাবদ্ধ, ততটাই নির্মম। আজ অসম্ভব চেগে থাকবে টিমটা এবং নব্বই মিনিটে ওদের একাগ্রতায় এতটুকু ফাঁক বের করা যাবে না। এই আগ্রাসনের সঙ্গে সমানে সমানে টক্কর দেওয়া জন্য তৈরি থাকতে হবে ব্রাজিলকে। গ্যালারি সমর্থন ওরা শুরু থেকেই পাবে। তবে জার্মানদের গতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে গিয়ে রক্ষণে ফাঁক রেখে ফেললে কিন্তু চলবে না। ডিফেন্সের সামান্যতম ভুলকেও কাজে লাগিয়ে গোল করে যাওয়ায় জার্মানরা বরাবরের ওস্তাদ। ওদের মতো দুর্গ আগলাতেও কম টিমই পারে। বিশেষ করে প্রথমার্ধে ইস্পাত-কঠিন জার্মান ডিফেন্সে ফুটোফাটা খুঁজে পাওয়া ব্রাজিলের পক্ষে খুব কঠিন হতে চলেছে। আর ওদের গোলকিপার ম্যানুয়েল ন্যয়ারকে তো আমি এই বিশ্বকাপের সেরা তিন গোলকিপারের মধ্যে রাখব। তাই আমার মতে, ব্রাজিলকে শুরুতেই বলের দখল নিয়ে নিতে হবে। নেইমার আর সিলভা না থাকায় কাজটা মোটেই সহজ হবে না।

আর ঠিক এই কারণেই আমার হৃদয় এখনও ব্রাজিল বললেও মস্তিষ্ক বলছে জার্মানি!

অন্য বিষয়গুলি:

fifaworldcup peter shilton brazil germany
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE