ইডেন-যুদ্ধের জন্য তৈরি ঋদ্ধিমান
হোম, সুইট হোম— এখন আর এ কথা বলার সময় নয়। বরং এখন ওয়াংখেড়ে, চিন্নাস্বামী, উপ্পল, কোটলা, মোতেরার সঙ্গে ইডেনের পার্থক্য নেই তাঁর কাছে। মঙ্গলবার যখন বাউন্ডারি পেরিয়ে ইডেনের সবুজ গালিচায় পা রাখবেন, তখন ঋদ্ধিমান সাহার শরীরে বাড়তি অ্যাড্রিনালিন ক্ষরণ হবে? বোধহয় না।
আবহাওয়া স্যাঁতসেঁতে বলে যে কিংস শিবিরের বারুদও ঠান্ডা হয়ে গিয়েছে, এমন ভাবার কারণ নেই। বরং লিগের শেষ ম্যাচ জিতে সোমবার বিকেলে যখন প্রায় ঘন্টা দুয়েক দেরিতে আসা বিমানে নাইটদের শহরে পা রাখলেন, তখনও কিংস টিম বেশ চার্জড। হোটেলে ঢোকার সময় ম্যাক্সওয়েল-মিলার-বীরুদের শরীরের ভাষায় যেমন তা বোঝা গেল, তেমন শান্তশিষ্ট ঋদ্ধির অভিব্যক্তিতেও আত্মবিশ্বাসের ছাপ স্পষ্ট। আইপিএলের সফল বাঙালি ক্রিকেটার বলে কথা।
এ বার ১৪টি ম্যাচেই খেলেছেন। ১০ ইনিংসে ২০৬ রান। মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে অপরাজিত ৫৯ ও সানরাইজার্সের বিরুদ্ধে ২৬ বলে ৫৪ করে ম্যাচের সেরা হওয়াই তাঁর সেরা অভিজ্ঞতা। স্টাম্পের পিছনে গ্লাভস হাতে তিন বার ব্যাটসম্যানকে স্টাম্পড করেছেন, আটটি ক্যাচও নিয়েছেন। তবে কেকেআরের বিরুদ্ধে হিসেব এখনও বাকি। লিগের ম্যাচে নিজের শহরের দলের বিরুদ্ধে এক বার করেছিলেন ১৫। একবার ১৪। তাই এ বার বাড়তি তাগিদ নিয়ে ব্যাট করতে নামবেন হয়তো। ঋদ্ধি অবশ্য সে ভাবে কোনও আগাম হুমকি দিতে রাজি নন। বাড়তি তাগিদ বা উত্তেজনার প্রশ্নেও তিনি অবিচল।
সোমবার সন্ধ্যায় টিম হোটেলে দাঁড়িয়ে বললেন, “আমার কাছে এটা আর পাঁচটা ম্যাচের মতোই। তার বেশি কিছুই নয়। দলের সবার কাছেই তাই।” পরনে টকটকে লাল টি-শার্ট ও জিনস। আইপিএলের শেষ দিকে নিজের শহরে এসেছেন। তাই নিউটাউনে নিজের ফ্ল্যাটে যাচ্ছিলেন বাড়তি কিছু লাগেজ রেখে আসতে। রওনা হওয়ার আগে বললেন, “ইডেন আর কেকেআর বলে আলাদা অনুভুতি নেই আমার। ও সব মাঠের বাইরে রেখে খেলতে নামি। তা ছাড়া ইডেন নয়, এখন আমার হোম মোহালি।” আর প্রিয় ইডেনের গ্যালারি থেকে যদি তাঁর উদ্দেশে বিদ্রুপ উড়ে আসে? “মাঠে নেমে চার পাশের আওয়াজ শুনতে পাই না। ইডেনেও কান বন্ধ করেই নামব,” বললেন বাংলার উইকেটকিপার।
কেকেআরের খেলা দেখতে শাহরুখ খান মুম্বই থেকে আসবেন কি না ঠিক নেই। তবে এ দিন দলের সঙ্গে একই বিমানে কলকাতায় চলে এলেন কিংসের মালকিন প্রীতি জিনটা। হোটেলে ঢুকেই যে টিভির সামনে বসে পড়লেন নরেন্দ্র মোদীর শপথ অনুষ্ঠান দেখতে, তা তাঁর টুইটেই জানা গেল। দলের সঙ্গে প্রীতি অনবরত ঘুরে বেড়ানোয় যে বাড়তি প্রেরণা পান তাঁরা, তা জানিয়ে ঋদ্ধি বলেন, “এটা তো বাড়তি প্রেরণা বটেই। প্রীতির মতো একজন সেলিব্রিটি যদি সব সময় দলের সঙ্গে থাকে, যদি সবসময় উৎসাহ দেয়, তা হলে তো প্রেরণা দেয়ই। এটা আমাদের একটা প্লাস পয়েন্ট বলতে পারেন।” আর সাফল্যের রেসিপি? ঋদ্ধি বললেন, “দলের সবার ভাল পারফরম্যান্স। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দলের সবাই ভাল পারফরম্যান্স করেছে। কখনও কেউ ব্যর্থ হয়েছে, তো কেউ সফল হয়েছে। কারও একজনের জন্য দল এই জায়গায় আসেনি। ম্যাক্সওয়েল-মিলাররা ভাল খেলেছে ঠিকই। তবে তার মানে অন্যরা খারাপ খেলেছে, সেটা বলা ঠিক নয়।” তবে নিজের পারফম্যান্সে পুরো খুশি নন ঋদ্ধি। বললেন, “কখনও পুরো তৃপ্তি পাই না। আরও ভাল করতে পারলে ভাল হত। তবে এখন আমার কাছে নিজের থেকে দলের সাফল্যটাই বড় কথা। আর কিছুই সামনে নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy