চতুর্থ ইনিংসে এক পাটর্টাইম স্পিনারের সামনে ভারতীয় ব্যাটিং ভেঙে পড়লেও তৃতীয় টেস্টে ধোনিদের হারের জন্য কপিল দেব দায়ী করছেন ভারতের বোলিংকে। বিশেষ করে বাংলার মহম্মদ শামি বিশ্বকাপজয়ী প্রথম ভারতীয় অধিনায়কের সমালোচনার লক্ষ্যবস্তু! “প্রথম দু’টেস্টে ভারতের প্রধান অস্ত্রই ছিল বোলিং। রোজ বোলের মতো নটিংহ্যামেও পাটা উইকেট ছিল। কিন্তু ওই দু’টো মাঠে ভারতীয় বোলারদের পারফরম্যান্সের বিস্তর পার্থক্যটা একবার ভাবুন তো!” বৃহস্পতিবার ম্যাচ শেষে আনন্দবাজারকে বললেন কপিল দেব।
লর্ডস টেস্টের ম্যান অব দ্য ম্যাচ ইশান্ত শর্মার অভাবে এই ম্যাচে শামি আর ভুবনেশ্বর কুমারের উপর স্বভাবতই বাড়তি চাপ পড়লেও কপিলের মতে তাঁরা দু’জনই তৃতীয় টেস্টে হতাশ করেছেন। “ভুবি এই টেস্টেও বল মুভ করিয়েছে, কিন্তু ওর গড়পড়তা বলের গতি এতই কম ছিল যে, ব্যাটসম্যানের পক্ষে সেই মুভটা বুঝে খেলতে অসুবিধে হয়নি। ভুবি যদি বলের গতি আরও এক বা দু’গজ বাড়াতে পারত, তা হলে এ ধরনের পিচ থেকে আরও বেশি সাহায্য পেত।” আর শামির বিরুদ্ধে ঠিক এর উল্টো অভিযোগ কপিলের।
“শামি সত্যিই ভাল পেসার। কিন্তু ও আবার বড্ড বেশি গতিতে বল করতে চেয়েছে এই টেস্টে। যদিও একজন পেসারের অত বেশি গতিতে বল করার কোনও মানেই নেই, যদি না সে সেই ক্ষেত্রে যে লাইনে বল করা দরকার সেটাই না করতে পারে। শামির ক্ষেত্রে ঠিক সেটাই ঘটেছে। ইংলিশ পিচ আর পরিবেশে পেসারের প্রথম কাজ হল ভাল লাইন লেংথে বল করা। তার পর ভাই, তুমি বলের বাড়তি গতি নিয়ে ভাবোটাবো।” শামিকে কপিলের পরামর্শ, “যদি তুমি প্রথমে বলের সঠিক লাইন-লেংথের কথা ভেবে তার পরে বেশি গতি নিয়ে চিন্তা করো, তা হলেই ভাল থেকে আরও ভাল পেসার হয়ে উঠবে এবং পরের দু’বছর ভারতের হয়ে আরও বেশি ভাল বল করতে পারবে।”
মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে দু’টো টেস্ট খেলার ধকলে ধোনির ভারতকে কিছুটা ক্লান্ত দেখিয়েছে কি? এই প্রশ্নে কপিল কিছুটা বিরক্ত হয়ে বললেন, “কীসের ক্লান্তি? ব্যাক-টু-ব্যাক টেস্ট খেলাটা কোনও হারের অজুহাত হতে পারে না। এটা টেস্ট ক্রিকেট এবং তোমাকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের এই চ্যালেঞ্জে সব সময় সাড়া দিতেই হবে।” তার পর কপিল যোগ করেন, “আসল কথা, ভারত এই টেস্টে খুব খারাপ খেলেছে। যখন প্রতিদ্বন্দ্বী খারাপ খেলেছে তখন সেটা আমরা মেনে নিয়েছি। এখানে আমরা পাঁচ দিনই খারাপ খেলেছি, সেটাও আমাদের স্বীকার করে নেওয়া উচিত। দেখুন, লর্ডসে আমাদের ১৬০-এর ভেতর অল আউট হয়ে যাওয়ার কথা। সেখানে আমরা তিনশোর বেশি রান তুলতে পেরেছিলাম। ইংল্যান্ড খারাপ বোলিং করে টেস্টটা হেরেছিল ওখানে। আবার এখানে আমরা খারাপ বোলিং করেছি। সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারিনি। যার ফলে ইংল্যান্ড আমাদের ব্যাটসম্যানদের উপর বিরাট চাপ তৈরি করেছিল।” কিন্তু ভারতীয় ব্যাটিংয়েও কি এই টেস্টে শৃঙ্খলার অভাব দেখা যায়নি? ভারতের কিংবদন্তি অলরাউন্ডারের জবাব, “আরে, যখন তুমি প্রথমে খারাপ বোলিং করায় প্রতিপক্ষ তোমার ঘাড়ে প্রায় ছ’শো রান চাপিয়ে দিয়ে তোমাকে সারাক্ষণ চাপে রেখে দিয়েছে, তখন সেই প্রবল চাপে তোমার ব্যাটিংয়ে শৃঙ্খলা এমনিতেই উধাও হয়ে যাবে ভাই।” আর ফিল্ডিংয়ে ভারতীয়দের এতগুলো ক্যাচ ফস্কানোর ওষুধ কী? এ ক্ষেত্রে কপিলের সাফকথা, “আরও কঠিন প্র্যাকটিস...প্র্যাকটিস আরও প্র্যাকটিস!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy