যুগ্মসচিব সৌরভের প্রথম দিন। সিএবিতে শনিবার। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
অগণিত পুস্পস্তবকের ভিড়। সিএবি-সতীর্থদের ঘরে-ঘরে ঢুকে নিজ-ঔজ্বল্যের কোশেন্ট কমিয়ে আনার প্রচেষ্টা। এক ফাঁকে সিএবি প্রেসিডেন্ট জগমোহন ডালমিয়ার সঙ্গে ছোট বৈঠক। এবং বেরোনোর আগে মিডিয়ার কাছে ‘আমি নই, আমরা’-র থিওরি পেশ করে যাওয়া।
প্রশাসক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রথম দিনের নির্যাস ধরতে হলে উপরের লাইনগুলোই দাঁড়াচ্ছে।
বোধহয় একটু ভুল হল। প্রশাসক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর প্রথম দিনে অতীতের সঙ্গে কিছু মিল খোঁজারও চেষ্টা করে গেলেন। কখনও নস্ট্যালজিক হয়ে পড়লেন এটা ভেবে যে, যে চেয়ারে, যে পদে এক দিন তাঁর পিতা চণ্ডী গঙ্গোপাধ্যায় ছিলেন, আজ তিনি একই পদে, একই চেয়ারে। কখনও তাঁর উপলব্ধি হল প্রকৃতিগত ভাবে প্রশাসনের বাইশ গজও ক্রিকেট মাঠের চেয়ে খুব কিছু আলাদা নয়। ওখানেও টিম থাকে, এখানেও তাই। শুধু কাজটা এখানে তূলনায় সহজ।
“অন্তত সেকেন্ড চান্স পাব। ব্যাট করার সময় তো সে সব থাকত না। ব্যাটিংটা তাই এর চেয়ে অনেক বেশি কঠিন,” বলছিলেন সৌরভ। তবে আনুষ্ঠানিক ভাবে শনিবার সিএবি যুগ্ম-সচিব পদে অভিষেক ঘটে গেলেও শোনা গেল, পুরোদমে দায়িত্ব নিতে নিতে সেপ্টেম্বর মাস নাকি হয়ে যাবে। আগামী মঙ্গলবারই তাঁর ফের ভারত-ইংল্যান্ড টেস্ট সিরিজের শেষ দু’টো টেস্টে কমেন্ট্রি করতে চলে যাওয়ার কথা।
“বাংলা ক্রিকেটের উন্নতি নিয়ে বেশ কিছু পরিকল্পনা আমার আছে। আরও বেশি মাঠ, উইকেট দরকার। সমস্ত কিছু পুরোপুরি বুঝে নিতে চার-পাঁচ মাস লাগবে,” বলে দিচ্ছেন সিএবি-র নতুন যুগ্ম-সচিব। ভিশন টোয়েন্টি-টোয়েন্টি নিয়েও নিজের আগামী পরিকল্পনার কথা বলে গেলেন। পাকিস্তানের কোচ ওয়াকার ইউনিসকে পাওয়া যাবে না। তাঁর বিকল্প হিসেবে দু’তিন জনের সঙ্গে ইতিমধ্যেই কথাবার্তা বলছেন সৌরভ।
কিন্তু এতগুলো গুরুদায়িত্ব সামলানো কঠিন হবে না? ক্রিকেট-কমেন্ট্রি, আইএসএল, সিএবিকোনটা সামলাবেন? এ দিনই আবার মোহনবাগানের একশো পঁচিশ বছরের উৎসব কমিটিতে তাঁকেও অন্তর্ভুক্ত করা হল। সৌরভ অসম্ভব কিছু দেখছেন না। বলছেন, “কমেন্ট্রিটাই শুধু বাইরে বাইরে। বছরে কয়েক মাসের ব্যাপার। বাকি তো সবই কলকাতায়।” একটু থেমে ফের হাসতে হাসতে যোগ করলেন, “মুকেশ অম্বানী পারলে আমিও বা সামলাতে পারব না কেন?” পরে ডালমিয়াও মনে করিয়ে দিলেন যে, সৌরভকে যোগ্যতম বলে তাঁর মনে হয়েছে বলেই সচিব পদে এনেছেন। তাঁর মনে হয়েছে, সৌরভ সব দিক সামলে সিএবি সচিবের কাজটাও ভাল করতে পারবেন, তাই এনেছেন। তবে প্রশাসক সৌরভের প্রথম দিনে দেখা যায়নি তাঁর গুরুত্বপূর্ণ দুই সিএবি-সতীর্থকে। অন্য যুগ্ম-সচিব সুবীর গঙ্গোপাধ্যায় এবং কোষাধ্যক্ষ বিশ্বরূপ দে এ দিন ছিলেন না। দু’জনেই পরে বললেন, তাঁরা জানতেন না সৌরভ শনিবরাই দায়িত্ব নেবেন। জানতেন, সোমবার নেবেন।
আর রঞ্জি তার কী হবে? সিএবি কর্তারা কেউ কেউ বলতে শুরু করেছেন যে, সৌরভ প্রশাসনে আসায় সর্বভারতীয় পর্যায়ের ক্রিকেটে বাংলারও উন্নতি ঘটবে। জবাব সংক্ষিপ্ত এবং তাঁর কভার ড্রাইভের মতোই সপাটে, “বাংলা তো ভালই করছে। গত বছর রঞ্জি ট্রফি সেমিফাইনাল খেলছে। তবে উন্নতিটা হবে আস্তে আস্তে। ধাপে ধাপে। সৌরভ গাঙ্গুলি প্রশাসনে এসেছে বলে বাংলাও রঞ্জি অনায়াসে জিতে নেবে, এমন নয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy