চির বিতর্কিত সেই ছবি
প্রায় আঠাশ বছর আগে। ২২ জুন ১৯৮৬। ঘটনার প্রেক্ষাপট ইংল্যান্ড বনাম আর্জেন্তিনা। বিরতির পরেই মারাদোনার সেই বিখ্যাত গোলে ১-০ এগোয় আর্জেন্তিনা। ‘বিখ্যাত’ কেন? কারণ সেই গোলটা মারাদোনা হাত দিয়ে করেন। রেফারির চোখ এড়িয়ে গেলেও গোটা বিশ্বের কাছে ধরা পড়েছিল মারাদোনার সেই ‘অবৈধ’ গোল। ম্যাচ শেষে আবার গর্ব সহকারে মারাদোনা স্বীকার করেছিলেন, হাতটা তো ঈশ্বরের ছিল। যার পর থেকে গোলটার নাম হয়, ‘হ্যান্ড অব গড।’
আর্জেন্তিনাকে সেই গোল ১-০ এগোতে সাহায্য করেছিল। কিন্তু আজও দুঃস্বপ্নের মধ্যে থেকে বেরোতে পারেননি পিটার শিল্টন। ইংল্যান্ডের প্রাক্তন গোলকিপার। যিনি ছিলেন ‘হ্যান্ড অব গডের’ শিকার । আঠাশ বছর পরেও যিনি অপেক্ষা করছেন, মারদোনা কবে ব্যক্তিগত ভাবে ক্ষমা চাইবেন তাঁর কাছে।
সোচ্চার
শিল্টন বলেন, “মারাদোনার সেই প্রতারণার জন্যই আমি বিশ্বকাপের ইতিহাসে সেরা গোলকিপারদের মধ্যে এক জন হতে পারলাম না। মারাদোনার উচিত আমার কাছে ক্ষমা চাওয়া। যা এখনও ও করে উঠতে পারেনি। ওর বলা উচিত ছিল আমি ভুল করেছি হাত দিয়ে গোল করে। আমায় ক্ষমা করে দাও শিল্টন।” মারদোনার গোলের জন্য শিল্টনকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল গোটা ফুটবলবিশ্ব। অনেকে প্রশ্ন তুলেছিল যে কী করে শিল্টনের মতো এক জন লম্বা গোলকিপার তাঁর থেকে আট ইঞ্চি ছোট একজন ফুটবলারকে সুযোগ দিল অত সহজে লাফিয়ে হাত দিয়ে গোলটা করার। কিন্তু ‘অবৈধ’ গোলের জন্য মারাদোনার ক্ষমা চাওয়া উচিত সেই কথাই জানালেন শিল্টন। বলেন, “একটা ক্ষমা চাইলেই পুরো ঘটনা ভুলে জেতাম। যে কোনও বড় ফুটবলার এ রকম ঘটনায় জড়িয়ে গেলে ক্ষমা চায়। হয়তো ক্ষমা চাইলেও ঘটনাটা বদলাবে না। কিন্তু এটাই তো স্পোর্টসম্যান স্পিরিট।” উদাহরণ স্বরূপ থিয়েরি অঁরিকে নিয়ে আসেন শিল্টন। ২০০৯ সালে আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে হাত দিয়ে গোল করেছিলেন অঁরি। পরে আবার গোটা ঘটনার জন্য ক্ষমাও চেয়েছিলেন।
মুখে কুলুপ
শোনা যাচ্ছে, সেই আঘাতের চিহ্ন আজও স্পষ্ট শিল্টনের মনে। কোনও অনুষ্ঠানে দেখা হলেও মারাদোনার সঙ্গে হাত মেলাতে চান না শিল্টন। এমনকী গত বছর দুবাইয়ে দেখা হলে মারাদোনা হাত মেলাতে চাইলেও এড়িয়ে যান শিল্টন। যার পরেই মারাদোনা বলেছিলেন এত পুরনো ঘটনা ধরে বসে থাকার কোনও মানে হয় না। “শিল্টনের উচিত ঘটনাটা ভুলে যাওয়া। অনেক বছর কেটে গেছে। ফুটবলটা অনেক আগেই জালে জড়িয়েছে। ও এখনও সেই বলটা ফিরিয়ে আনে,” বলেন মারাদোনা। যদিও বিতর্ক উড়িয়ে শিল্টন বলেন, “আপত্তি নেই মারাদোনার সঙ্গে হাত মেলাতে। শুধু ও ক্ষমা চাইলেই সব ঠিক হয়ে যায়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy