Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

চোট নিয়ে সতর্ক সালাহ সরিয়ে দিলেন ভক্তকে

লিভারপুলের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল খেলার সময় কাঁধে চোট পান সালাহ। সেই চোটের জন্য যদিও কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছে রিয়াল মাদ্রিদের শক্তিশালী ডিফেন্ডার সের্খিও র‌্যামোসকে।

সাবধানী: সেই মুহূর্ত। ভক্তের হাত সরিয়ে দিচ্ছেন সালাহ। ছবি: টুইটার

সাবধানী: সেই মুহূর্ত। ভক্তের হাত সরিয়ে দিচ্ছেন সালাহ। ছবি: টুইটার

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০১৮ ০৪:৩৬
Share: Save:

মহম্মদ সালাহ বুঝিয়ে দিলেন, তাঁর চোট লাগা কাঁধ নিয়ে তিনি কতটা যত্নবান। টিম বাস থেকে নামা মাত্র তাঁর এক ভক্ত এসে নিজস্বী তুলতে চেয়েছিল। ছবি তোলার সময় সেই ভক্ত সালাহের কাঁধে হাত রাখে। দ্রুত সেই ভক্তকে দূরে সরিয়ে দেন মিশরের তারকা। এক নিরাপত্তা রক্ষী এসে এর পর সালাহকে ভক্তদের ভিড় থেকে বার করে নিয়ে যান।

ভক্তের উন্মাদনা এবং সালাহের তা এড়িয়ে যাওয়ার সেই ভিডিও ফুটবল বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। আলোচনা শুরু হয়ে যায়, বিশ্বকাপ নিয়ে কোনও রকম ঝুঁকি নিতে চান না লিভারপুলের হয়ে এ বারে দুরন্ত ফর্মে থাকা তারকা। আর মাত্র চার দিনের মধ্যেই বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করছে মিশর। তাদের ভাগ্য অনেকটাই সালাহের কাঁধে। শুক্রবার উরুগুয়ের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে নামার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। নিজেও বলেছেন, মনেপ্রাণে চান প্রথম ম্যাচ থেকেই খেলতে। সেই লক্ষ্য পূরণ করার জন্য ভক্তদের আবদারের সামনেও কোনও ঝুঁকি নিতে চান না।

লিভারপুলের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল খেলার সময় কাঁধে চোট পান সালাহ। সেই চোটের জন্য যদিও কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছে রিয়াল মাদ্রিদের শক্তিশালী ডিফেন্ডার সের্খিও র‌্যামোসকে। অভিযোগ, ইচ্ছাকৃত ভাবেই সালাহকে মারেন র‌্যামোস। তাতেই তাঁর বিশ্বকাপ খেলা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। সালাহ নিজে চেষ্টা চালিয়ে গেলেও মিশর শিবির থেকে এখনও নিশ্চিত করে বলা হয়নি, তাঁকে বিশ্বকাপের শুরু থেকেই পাওয়া যাবে। কোচ হেক্টর কুপার বলেছেন, সালাহকে ছাড়াও ভাবতে শিখতে হবে মিশরকে। ‘‘ওর বিকল্প খুঁজে পাওয়া খুবই কঠিন কিন্তু মাত্র এক জনের উপর নির্ভর করে কোনও টিম চলতে পারে না। আমাদের বিকল্প পথ ভাবতেই হবে এবং সেটা আমরা ভেবে রেখেওছি,’’ বলেছেন মিশরের কোচ কুপার। কিয়েভে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে আহত হওয়ার পরে কাঁদতে কাঁদতে মাঠ ছেড়েছিলেন সালাহ। সেই রাতে দাঁড়িয়ে অনেকেরই মনে হয়েছিল, হয়তো বিশ্বকাপ থেকেই ছিটকে গেলেন তিনি। এতটাই হতাশ ছিলেন তিনি যে, র‌্যামোসকে ক্ষমা করতে পারবেন না বলেও জানান। সালাহ বলেছিলেন, র‌্যামোস তাঁকে মোবাইলে বার্তা পাঠিয়েছিলেন ঠিকই কিন্তু সেই দুঃখপ্রকাশের বিকাট কোনও অর্থ নেই তাঁর কাছে। ‘‘ফাইনালে ধাক্কাটা খেয়ে যখন পড়ে গেলাম মাটিতে, প্রচণ্ড যন্ত্রণা হচ্ছিল। আমি খুবই চিন্তিত হয়ে পড়েছিলাম। খুব রাগও হচ্ছিল, চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালটা পুরো খেলতে না পারায়,’’ বলেছেন সালাহ। যোগ করেছেন, ‘‘পরক্ষণেই চিন্তিত হয়ে পড়ি যে, বিশ্বকাপেও কি আমার খেলা হবে না? ভীষণই বিধ্বস্ত লাগছিল তখন আমার।’’ র‌্যামোস দাবি করেছিলেন, তিনি দুঃখপ্রকাশ করে মোবাইলে বার্তা পাঠিয়েছিলেন এবং সালাহ তাতে ‘ঠিক আছে’ বলে জবাবও দিয়েছিলেন। সালাহ কিন্তু তা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, র‌্যামোস বার্তা পাঠিয়েছিলেন ঠিকই কিন্তু তিনি কখনওই জবাব দেননি। ‘ঠিক আছে’-ও বলেননি।

১৯৯০-এর পরে এই প্রথম বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন করেছে মিশর। তাতে সব চেয়ে বড় অবদান সালাহের। যোগ্যতা অর্জন পর্বের শেষ ম্যাচে কঙ্গোর বিরুদ্ধে জোড়া গোল করে তিনিই নিশ্চিত করে দেন মিশরের বিশ্বকাপ যাত্রা। তবে সন্দেহ নেই, বিশ্বকাপে কড়া প্রতিরোধের মুখেই পড়তে পারেন সালাহ। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা লিভারপুল তারকাকে থামানোর জন্য ইতিমধ্যেই অনেকে র‌্যামোসকে উদাহরণ করতে চাইছেন। রাশিয়ার ডিফেন্ডার ইলিয়া কুচিয়াপভ যেমন বলেছেন, ‘‘আমি সালাহের ফর্ম নিয়ে একেবারেই চিন্তিত নই। কী ভাবে ওকে থামাব? কেন, র‌্যামোস যে ভাবে থামিয়েছিল, সে ভাবেই! র‌্যামোস অবশ্যই একটা পথ দেখিয়ে দিয়েছে, কী ভাবে সালাহকে থামাতে হয়।’’

বোঝাই যাচ্ছে, সালাহ কেন নিজেকে রক্ষা করতে এত মরিয়া!

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE