বিশাখাপত্তনমের হুদহুদ কেবল আগামিকালের তৃতীয় ওয়ান ডে-কে বাতিল করেই দেয়নি। কোটলায় মাত্র দু’দিন আগে সিরিজে সমতা ফেরানো টিম ইন্ডিয়া-র ছন্দে ব্যাঘাত হানার সম্ভাবনাও তৈরি করতে পারে বলে ওয়াকিবহাল মহলের কারও কারও আশঙ্কা। পাশাপাশি ধোনির ভারতীয় দলে হাঁফ ছাড়ার একটা ব্যাপারও দেখা গিয়েছে। বিরাট কোহলির ব্যাটে গ্রীষ্ম জুড়ে রান-খরা চলার পর অবশেষে শরত পড়তে রানের স্রোত ফিরল যে!
গত ইংল্যান্ড সফরে পাঁচ টেস্টের সিরিজে মাত্র ১৩.৪০ গড়ের পর ওয়ান ডে সিরিজেও ব্যাটিং গড় ১৮-র বেশি তুলতে না পারা কোহলির অবশেষে ঘরের মাঠ কোটলায় ক্যারিবিয়ান বোলিংয়ের বিরুদ্ধে ঝকঝকে ৬২ রানে ইনিংস তাঁর ব্যাড প্যাচ কাটিয়ে তুলল বলে এক জন বিশ্বাস করছেন।
তিনি বিরাটের ছোটবেলার কোচ রাজকুমার শর্মা।
“সত্যি বলতে কী, ইংল্যান্ড সিরিজে বিরাটের অফ ফর্মকে আমি বড় কোনও সমস্যা বলে মনেই করিনি,” প্রবল বিশ্বাসের সঙ্গে এ দিন বলে রাজকুমার আরও যোগ করলেন, “প্রত্যেকেই জীবনে কোনও না কোনও সময় ব্যাড প্যাচের মধ্য দিয়ে যায়। ব্যাড প্যাচ যে কোনও পেশার পারফর্মারের জীবনে একটা না একটা সময় আসবেই। বিরাট গত দু’-তিন বছর নাগাড়ে সব ফর্ম্যাটের ক্রিকেটে বড় রান করে এসেছে। ব্যাড প্যাচ চলার সময় আমি ওর ব্যাটিং খুব খুঁটিয়ে দেখেছিলাম। কিন্তু কোনও টেকনিক্যাল সমস্যা ওর খেলায় হচ্ছিল বলে আমার মনে হয়নি। ও স্রেফ একটা বড় ইনিংস পাচ্ছিল না। আর সেটা প্রত্যেকের জীবনেই একটা শিক্ষামূলক অভিজ্ঞতা।”
ইংল্যান্ডে জিমি অ্যান্ডারসনের সুইংয়ে নাকানিচোবানি খাওয়ার পর দেশের মাটিতে কোচি ওয়ান ডে-তেও নৈশালোকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সুইং বোলিং খেলতে সমস্যায় পড়তে দেখা গিয়েছিল বিরাটকে। প্রথম ম্যাচে করেন মাত্র ২ রান। যে জন্য দিল্লিতে পরের ম্যাচে বিরাটকে তিন থেকে নামিয়ে চারে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। যে বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করলে সযত্নে সেটা এড়িয়ে যাচ্ছেন বিরাটের কোচ। সতর্ক রাজকুমার বরং বলছেন, “বিরাটের তিনে, না চারে নামা উচিত তা নিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করতে চাই না। ব্যাটিং অর্ডারে ওর আরও উপরে আসা উচিত, না কি আরও নীচে নেমে যাওয়া দরকার এ সব ব্যাপারে আমাদের মতামত গৌণ। এটা ওর টিমের সিদ্ধান্ত যে, তারা বিরাটকে ব্যাটিং অর্ডারে কোন ম্যাচে কোথায় নামাবে। সেটাই আসল। বিরাটকে যত দূর চিনি, ওর চার নম্বরে নামায় যদি টিমের উপকার হয়, তা হলে ও সানন্দে চারেই খেলবে।”
বিরাটের ছোটবেলার কোচ বরং কোটলায় শিষ্যের হাফসেঞ্চুরিকে একটা নিছক ওয়ান ডে হাফসেঞ্চুরি হিসেবেই নয়। তার চেয়েও অনেক সুদূরপ্রসারী প্রভাব হিসেবে দেখতে চাইছেন। “ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ ভারতের কাছে পরের বছরের গোড়ায় বিশ্বকাপের প্রস্তুতি সিরিজ। ধোনিও তো তাই বলেছে। এবং কোটলায় বিরাটের ইনিংংসটা আমার কাছে ওর বিশ্বকাপ প্রস্তুতির আরম্ভ হয়ে গেল বলেই মনে হচ্ছে,” বলে দিলেন রাজকুমার। সঙ্গে এটাও যোগ করেন, “বিরাট ভাল করেই জানে বিশ্বকাপ এবং তার আগেই অস্ট্রেলিয়া সফরেও ওর উপর প্রত্যাশার চাপ কতটা বেশি। তাই এখন থেকেই ও বিশ্বকাপ আর অস্ট্রেলিয়া ট্যুরের মোড-এ ঢুকে পড়েছে। আমার বিশ্বাস, ওর ক্ষমতা আছে প্রত্যাশার চাপ সামলে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে বড় রান করার চ্যালেঞ্জ নেওয়ার।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy