মহড়া: গোয়ার বিরুদ্ধে নামার প্রস্তুতি এটিকের। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
দুই বন্ধুর দ্বৈরথ, না দুই স্প্যানিশ স্ট্রাইকারের নিজেকে দেখানোর লড়াই!
এফ সি গোয়ায় গত বছর একই সঙ্গে খেলতেন ফেরান কোরামিনাস (কোরো) এবং ম্যানুয়েল লানজ়ারোতে। আজ বুধবার যুবভারতীতে দু’জনের গায়ে থাকবে দুই আলাদা রংয়ের জার্সি। গোয়ার জার্সিতে গোল করে দলকে জেতানোর জন্য মরিয়া হবেন কোরো। আর এটিকে-কে শেষ চারে তোলার লড়াইয়ে মরিয়া হবেন লানজ়ারোতে।
নিজের দলের দুই সেরা অস্ত্র নিয়ে দু’দলের কোচ যে কতটা সতর্ক এবং চিন্তিত, সেটা ধরা পড়ে গিয়েছে ম্যাচের আগের দিন বিকেলেই। যুবভারতীতে মঙ্গলবারের সাংবাদিক বৈঠকে। লানজ়ারোতেকে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছেন? প্রশ্ন শুনে ভ্রু কুচকে যায় গোয়ার স্প্যানিশ কোচের। কিছুটা বিরক্তি মাখানো মুখে সের্খিয়ো লোবেরার জবাব, ‘‘আমার দলের খেলোয়াড়দের নিয়ে প্রশ্ন করুন। প্রতিপক্ষ দলের কারও সম্পর্কে জানতে চাইবেন না।’’
আরও পড়ুন: দিন বদলায়,পাল্টায় খেলা, সবের মধ্যে টিকে ‘খেপ’-ই
আর ইন্ডিয়ান সুপার লিগের এ বারের সর্বোচ্চ গোলদাতা কোরোকে কোন রণনীতিতে আটকাবেন? এই প্রশ্নে এটিকে কোচ স্টিভ কপেলের মুখ থেকে বেরিয়েছে, ‘‘কোরো গোলটা চেনে। তবে কোরোর পা থেকে বুলেটের মতো শটগুলো বের হয় শুধু ওর পায়ে বল পড়লেই। ওর কাছে বল যাওয়া আটকানোই আমাদের সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।’’
লিগ টেবলে এখন গোয়া বেশ ভাল জায়গায় আছে। বেঙ্গালুরু এফ সি এবং নর্থইস্টের পরেই। তিন নম্বরে। আর এটিকের অবস্থান ছ’য়ে। বলবন্ত সিংহ, প্রণয় হালদাররা আজ জিতলে শেষ চারে ঢুকবেন না ঠিক, তবে এটিকে অনেকটাই ফিরবে সেমিফাইনালে ওঠার যুদ্ধে। কালু উচে চোট পেয়ে প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে যাওয়ার পর সেই কাজটা কঠিন হয়ে গিয়েছে মানছেন কপেল। তবে এটাও বলছেন, ‘‘গোয়াকে হারানো যায়। সেই ক্ষমতা আমাদের আছে। ওরা তো দু’টো ম্যাচ এ বারও হেরেছে।’’ যে দল আট ম্যাচে পাঁচটা জিতেছে, একটা ড্র করেছে তাদের বিরুদ্ধে খেলতে নামার আগে এটিকে কোচের গলায় কেন এত জোর? লিগ টেবলের ‘অন্ধকার’ দিকটা দেখলে সেটা মালুম হয়। গোয়া ২২ গোল করলেও খেয়েছে ১৪টা! যা লিগের এখনকার ‘লাস্ট বয়’ দিল্লির সমান। সেটাই সম্ভবত একমাত্র আশা এটিকে কোচের।
আরও পড়ুন: গ্যালারিতে ঝামেলা, জয়ী মোহনবাগান
কোরো এত গোল করছেন, কিন্তু আপনার রক্ষণের হাল তো খুবই খারাপ! দোভাষী নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে আসা লোবেরার গলা থেকে আত্মবিশ্বাস চুঁইয়ে বেরোয়। ‘‘লিগের শেষে গোল পার্থক্যটা যদি বেশি থাকে, তা হলেই আমি খুশি হব। ওটা দরকার। তিন পয়েন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেটা পাওয়ার চেষ্টা করব। তবে এটাও বলছি, গোল যাতে না হয় সেই চেষ্টার ত্রুটি থাকবে না।’’
শেষ ম্যাচে মুম্বই এফ সি-র বিরুদ্ধে জিততে না পারার দুঃখ এখনও রয়ে গিয়েছে কপেলের। তবে যা খবর, মুম্বই ম্যাচের দলই গোয়ার বিরুদ্ধে আজ নামানো হচ্ছে। চোট পাওয়া আইবর খোনজির জায়গায় ওই ম্যাচে রাইট ব্যাকে খেলেছিলেন এক বঙ্গসন্তান—অঙ্কিত মুখোপাধ্যায়। বাংলার হয়ে সন্তোষ ট্রফি থেকে উঠে আসা অঙ্কিত সম্পর্কে এ দিন উচ্ছ্বসিত ছিলেন এটিকে কোচ। বললেন, ‘‘যখন দল গড়া হয়, তখন ওকে তিন নম্বর রাইট ব্যাক হিসাবে নেওয়া হয়েছিল। ও নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেছে।’’
গোয়ার মূল শক্তি যে তাঁদের বিদেশিরা তা অবশ্য এ দিন স্বীকার করে নিয়েছেন বলবন্ত সিংহদের কোচ। ‘‘গোয়ার আসল শক্তি ওদের বিদেশিরা। কোরোদের উপরই দাঁড়িয়ে আছে দলটা। গোল বক্সে উড়ে আসা বল থেকে ওরা গোল করে। সেটা মাথায় রাখছি আমরা,’’ বলে দিয়েছেন কপেল। পাশাপাশি তাঁর মন্তব্য, ‘‘কালু আর লানজ়ারোতের মধ্যে একটা সংঘবদ্ধতা তৈরি হয়েছিল সেটা ভেঙে যাওয়ার পর আমাকে এখন প্ল্যান ‘সি’ নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy