মর্মান্তিক: তৃণাঙ্কুরের মৃত্যুতে শোকের ছায়া। ফাইল চিত্র
সামনের বছর কয়েকটি র্যাঙ্কিং ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতায় নামার জন্য তৈরি হচ্ছিলেন তৃণাঙ্কুর নাগ (রিকি)। গত দু’বছর যাঁর সঙ্গে জুটি বেঁধে রাজ্য প্রতিযোগিতায় ডাবলসে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন, সেই অরূপ বৈদ্যকে জানিয়েছিলেনও সে কথা। পঁচিশ বছরের রিকির সেই ইচ্ছে পূর্ণ হল না।
মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় সোমবার দুপুরে মারা যাওয়ার পরে বন্ধুর সেই স্বপ্নের কথা বলতে বলতে গিয়ে গলা ধরে আসছিল অরূপের। বাংলার অন্যতম সেরা ব্যাডমিন্টন তারকা হাসপাতালের মর্গের সামনে দাঁড়িয়ে বলছিলেন, ‘‘শুক্রবারই আমাকে ফোন করেছিল রিকি। বলেছিল ‘দু’একদিনের মধ্যেই আমরা অনুশীলন শুরু করব। আমাদের এ বারও টানা অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন থাকতে হবে’ সেটা আর হল না। এভাবে চলে যাবে ভাবিনি।’’
রাজ্য স্তরে ডাবলসে এক নম্বর খেলোয়াড় ছিলেন তৃণাঙ্কুর। জুনিয়র পর্যায়ে বেশ কয়েকবার রাজ্য চ্যাম্পিয়নও হয়েছিলেন। দেশের হয়ে মরিশাসে অনূর্ধ্ব আঠারো দলে সুযোগ পেয়েছিলেন। কয়েক দিন আগে দূর্গাপুরে জেলার প্রতিযোগিতায় উত্তর কলকাতার হয়ে নেমে দলগত বিভাগে রানার্স হন। রাজ্য সেরা হওয়ার সুবাদে চাকরি পেয়ে যান রেলে। শনিবার দুপুরে নারকেলডাঙায় অফিসের কাজ করতে গিয়েই ওভারহেড তারে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মারা গেলেন বাংলার প্রতিশ্রুতিমান তারকা তৃণাঙ্কুর। তাঁর ছোট বেলার কোচ সৌমেন ভট্টাচার্য বলছিলেন, ‘‘রিকি ভেবেছিল অফিসের কাজের ফাঁকে অনুশীলন করবে। কিন্তু যা ভেবেছিল তা হয়নি। টেকনিক্যাল কর্মী হিসাবে ওকে কাজ দেওয়া হয়। ফলে অনুশীলনই করতে পারত না। সুযোগ পেলে এখানে ওখানে অনুশীলন করে বেড়াত।’’ কখনও সাই, কখনও উত্তর কলকাতায় হীরক সেনগুপ্তের কাছে গিয়ে অনুশীলন করত রিকি। অরূপের ক্লাবে গিয়েও অনুশীলন করত। বিদ্যুতের তারের ছোঁয়ায় ঝলসে যাওয়া রিকির মরদেহের পাশে দাঁড়িয়ে হীরক বললেন, ‘‘ছেলেটা খুব পরিশ্রমী ছিল। অফিসের ফাঁকে দু’দিন অনুশীলন করতে আসত আমার কাছে। তিন-চার ঘণ্টা টানা খেলতে পারত।’’
আরও পড়ুন: পর্বত আরোহণে অনন্য নজিরের সামনে সত্যরূপ
আরও পড়ুন: ওয়ার্নের বিস্ময়-বল ফিরিয়ে আনলেন ইয়াসির
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy