ভারত ৩ : অস্ট্রেলিয়া ০
অসাধারণ বললেও কম বলা হয় এই সিরিজ জয়কে। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে এমন দাপট দেখিয়ে আমরা কোনও দিন সিরিজ জিতেছি বলে মনে পড়ে না। তাই এই জয়টা সত্যিই চিরকাল মনে থাকবে।
এ রকম একটা সিরিজ জয় যে ভারতকে বিশ্বের এক নম্বর জায়গায় পৌঁছে দেবে, এটাই তো স্বাভাবিক। এই সিরিজ জেতার পর তাই আইসিসির টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বরে উঠে এল আমাদের দেশ। বলতে দ্বিধা নেই, সত্যিই ধোনিরা এখন বিশ্বসেরা দলের মতো খেলছে।
কয়েক দিন আগেই লিখেছিলাম, এখন কোনও রানকেই ‘সেফ’ বলা চলে না। রবিবার শেন ওয়াটসনের সেঞ্চুরি আর ওর দলের ১৯৮-এর টার্গেট দেওয়ার পরেও তাই মনে হয়নি অস্ট্রেলিয়া জিতছেই। ভারতের যা ব্যাটিং লাইন-আপ, তাতে ২০ ওভারে দুশো কেন, আড়াইশোর টার্গেটও তুলে নিতে পারে। রোহিত, ধবন, কোহলিরা রীতিমতো স্বপ্নের ইনিংস খেলেছে গত দশ দিনে। অস্ট্রেলিয়ার মাঠে ভারতীয় টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের কখনও এ রকম দাপট দেখেছি বলে তো মনে পড়ছে না। ওদের গড় আর স্ট্রাইক রেটের উপর যখন চোখ বোলাচ্ছি, তখন গর্ব হচ্ছে।
ধোনি নিজে না নেমে এ দিন যুবরাজকে আগে ব্যাট করতে পাঠিয়ে খুব জরুরি একটা সিদ্ধান্ত নিল। ধোনি ছাড়া দলে আর কোনও ফিনিশার তৈরি আছে কি না, তা জানার জন্যই যুবিকে আগে নামানোটা খুব দরকার ছিল। এবং ফাটকাটা কাজেও লেগে গেল এ দিন। শুরুতে নড়বড় করছিল যুবি। ঠিক মতো টাইমিং করতে পারছিল না। তখন মনে হচ্ছিল ২০১৪-র টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালের সেই ভূত এখনও তাড়া করছে না তো ওকে? সে দিন ওর ২১ বলে ১১ ইনিংসটা তো যুবির কেরিয়ারই শেষ করে দিতে বসেছিল। কিন্তু রবিবার শেষ ওভারে যে চার আর ছয়টা মারল, তাতেই আবার নিজের জাত চিনিয়ে দিল। সুরেশ রায়না যে ছন্দে ফিরেছে, তাও বোঝা গেল ওর ২৫ বলে ৪৯-এর ইনিংসে। এ দিন জেতার জন্য শেষ ওভারে দরকার ছিল ১৭। দু’জনে মিলে তুলে নিল ২০। এর পর দেশের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে যুবরাজকে দলে না রাখা বোধহয় সম্ভব হবে না। বোধহয় বিশ্বকাপেও না।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের ব্যাটিং লাইন-আপ এটাই। এর সঙ্গে মণীশ পাণ্ডে, অজিঙ্ক রাহানেরা দলে ঢুকতে পারে। এর চেয়ে বেশি পরিবর্তন আর দেখছি না। এই টপ অর্ডারের কোনও জবাব নেই। ফিনিশারও প্রস্তুত। তা হলে আর কী চাই?
টপ অর্ডারের শাসন
ওয়ান ডে রোহিত শর্মা ৫ ম্যাচে ৪৪১ রান, সর্বোচ্চ ১৭১ নঃআঃ, গড় ১১০.২৫ শিখর ধবন ৫ ম্যাচে ২৮৭ রান, সর্বোচ্চ ১২৬, গড় ৫৭.৪০ বিরাট কোহলি ৫ ম্যাচে ৩৮১ রান, সর্বোচ্চ ১১৭, গড় ৭৬.২০
ফিনিশারদের দাপট
প্রথম টি-টোয়েন্টি শেষ ৩ ওভারে ৪০ রান। রায়না ১৫, বিরাট ১৪, ধোনি ১১ দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি শেষ ৩ ওভারে ৩২ রান। বিরাট ২১, ধোনি ১১ তৃতীয় টি-টোয়েন্টি শেষ ৩ ওভারে ৩৬ রান। রায়না ২১, যুবরাজ ১৪
প্রাপ্তি অস্ট্রেলিয়াকে ৩-০ হারিয়ে টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বরে উঠল ভারত। টেস্টেও এখন এক নম্বরে। ওয়ান ডে-তে দুইয়ে।
প্রথম টি-টোয়েন্টি শেষ ৩ ওভারে ৪০ রান। রায়না ১৫, বিরাট ১৪, ধোনি ১১ দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি শেষ ৩ ওভারে ৩২ রান। বিরাট ২১, ধোনি ১১ তৃতীয় টি-টোয়েন্টি শেষ ৩ ওভারে ৩৬ রান। রায়না ২১, যুবরাজ ১৪
ফিনিশারদের দাপট
প্রাপ্তি অস্ট্রেলিয়াকে ৩-০ হারিয়ে টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বরে উঠল ভারত। টেস্টেও এখন এক নম্বরে। ওয়ান ডে-তে দুইয়ে।
খেলার পর লক্ষ্মণকে বলতে শুনলাম গত বছর ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের দেখে মনে হয়েছিল ওদের কারও কোনও নির্দিষ্ট ভূমিকা নেই। অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি সিরিজে ছবিটা পুরো পাল্টে গিয়েছে। এটাই দুই ভারতীয় দলের সবচেয়ে বড় তফাত। কথাটা ঠিক। আসলে নির্দিষ্ট ভূমিকা প্রত্যেকেরই ছিল। কিন্তু ফর্ম না থাকায় প্ল্যান অনুযায়ী কাজ হয়নি। এখন সবাই ফর্মে। ফলে যাকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, তা সবাই ঠিকঠাক করতে পেরেছে।
তবে একটা জায়গায় দুশ্চিন্তা রয়েই গেল। নতুন বলে উইকেট তুলতে না পারা। ব্যাটসম্যানরা নেহাত অসাধারণ ফর্মে আছে। তাই এই সমস্যা ঢাকা পড়ে যাচ্ছে। তা ছাড়া ঘরের মাঠে বিশ্বকাপে স্পিনাররা হয়তো আরও ধারালো হয়ে উঠবে এবং মাঝের ওভারগুলোতে ওরা বিপক্ষের ব্যাটিংয়ে ধস নামাবে। তবু এই সমস্যাটা দূর করে নিতে পারলে শুরু থেকেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের মতো খেলতে পারবে ভারত।
সত্যিকারের বিশ্বসেরা দল হয়ে বিশ্বকাপ জেতার ব্যাপারই আলাদা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: অস্ট্রেলিয়া: ১৯৭-৫ (ওয়াটসন ১২৪ নঃআঃ, নেহরা ১-৩২, অশ্বিন ১-৩৬), ভারত: ২০০-৩ (রোহিত ৫২, কোহলি ৫০, রায়না ৪৯ নঃআঃ, বয়েস ২-২৮) ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy