Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

ব্র্যান্ড-দুনিয়াতেও মিতালির রাজ

মেয়েদের বিশ্বকাপ শুরুর আগে ক’জন তাঁদের নাম জানতেন, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। কিন্তু বিশ্বকাপে তাঁদের একের পর এক জয় দেখে টনক নড়ে আমজনতার। সোশ্যাল মিডিয়ায় টিম মিতালিদের সমর্থনে ঝড় দেখে এগিয়ে আসে প্রচুর স্পনসর।

চাহিদা: মিতালিকে নিয়ে আগ্রহ বাড়ছে ব্র্যান্ডদের। ফাইল চিত্র

চাহিদা: মিতালিকে নিয়ে আগ্রহ বাড়ছে ব্র্যান্ডদের। ফাইল চিত্র

সুজিষ্ণু মাহাতো
শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৭ ০৫:৪৯
Share: Save:

বিশ্বকাপ জয় হয়নি, তাতে কী? দেশবাসীর হৃদয়ে ঢুকে পড়েছেন মিতালি রাজ, ঝুলন গোস্বামী, হরমনপ্রীত কৌর, স্মৃতি মানধানা-রা। মেয়ে ক্রিকেটারদের এই জনপ্রিয়তাকেই কাজে লাগাতে চাইছে ব্র্যান্ড-দুনিয়া। বিশ্বকাপের আগে যাঁদের স্পনসর ছিল হাতেগোনা, এখন তাঁরাই ভাসছেন নানা ব্র্যান্ডের প্রস্তাবের বন্যায়।

মেয়েদের বিশ্বকাপ শুরুর আগে ক’জন তাঁদের নাম জানতেন, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। কিন্তু বিশ্বকাপে তাঁদের একের পর এক জয় দেখে টনক নড়ে আমজনতার। সোশ্যাল মিডিয়ায় টিম মিতালিদের সমর্থনে ঝড় দেখে এগিয়ে আসে প্রচুর স্পনসর।

মিতালির স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট সংস্থা মেডালিন স্পোর্টসের ডিরেক্টর বরুণ চোপড়া জানাচ্ছেন, যা স্পনসর ছিল, তার চারগুণ ব্র্যান্ড বিশ্বকাপ চলাকালীনই যোগাযোগ করেছে মিতালির জন্য। বরুণের কথায়, ‘‘বিশ্বকাপের আগে মিতালির খান ছয়েক স্পনসর ছিল। ফাইনালের আগেই অন্তত পঁচিশটি ব্র্যান্ড মিতালির সঙ্গে যুক্ত হতে চেয়েছে।’’ সকলের প্রস্তাব বিবেচনা করেই কয়েকদিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

সাফল্য যে কম জনপ্রিয় খেলাগুলির প্রতি স্পনসরদের আগ্রহ তৈরি করে, তার উদাহরণ সাম্প্রতিক অতীতেও রয়েছে। অলিম্পিক্সের আগে বহু ব্র্যান্ডের কাছে গিয়েছিলেন পি ভি সিন্ধুর ম্যানেজমেন্ট সংস্থা ‘বেসলাইন’-এর ডিরেক্টর রামকৃষ্ণন আর। কেউই আগ্রহ দেখায়নি। অলিম্পিক্সের সাফল্যের পরেই সিন্ধুর জন্য কাড়াকাড়ি পড়ে যায় একাধিক ব্র্যান্ডের মধ্যে। বিজ্ঞাপন বিশেষজ্ঞ রাম রায় জানাচ্ছেন, অর্থনীতির নিয়মেই ব্র্যান্ডগুলির এই প্রবণতা খুবই স্বাভাবিক। তাঁর কথায়, ‘‘স্পনসরেরা তো দাতা নয়। তাই যাঁকে তারা স্পনসর করছে, তিনি যদি সুপরিচিত না হন, তাহলে তো স্পনসরদের উদ্দেশ্যই সফল হবে না।’’

বিশ্বকাপ শুরুর আগে মিতালিরা সুপরিচিত ছিলেন না। টিভিতে খেলা দেখালেও সব ওভারের মাঝে বিজ্ঞাপনের দেখা মিলত না ছেলেদের ক্রিকেটের মতো। একটার পর একটা জয় ছবিটা বদলে দেয়। রবিবারের ফাইনালেই তার প্রমাণ মেলে। খাবার ডেলিভারি দেওয়ার একটি অ্যাপ মেসেজ করে গ্রাহকদের জানায়, ‘‘ফাইনালে ভারতের মেয়েদের উৎসাহ দিন। আপনার বাড়িতে খাবার আমরা পৌঁছে দেব।’’

এমন জনপ্রিয়তা আঁচ করেই মিতালিকে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাস্যাডর হিসেবে পেতে চাইছে নানা ধরনের পণ্যের কোম্পানি। তার মধ্যে যেমন রয়েছে গয়না বা সাজগোজ সংক্রান্ত পণ্য, তেমনই রয়েছে রিয়েল এস্টেট কোম্পানি। রয়েছে নরম পানীয়ের মতো যুবসমাজের মধ্যে পরিচিত ব্র্যান্ডও। টাকার অঙ্ক বলতে না চাইলেও বরুণ জানাচ্ছেন, বিশ্বকাপের আগে মিতালির যা ব্র্যান্ড ভ্যালু ছিল, তা এখন প্রায় চার গুণ বেড়ে গিয়েছে।

শুধু মিতালিই নয়, বিশ্বকাপ ফাইনালে ওঠার পরে হরমনপ্রীত, স্মৃতি, ঝুলনদের জন্যও আগ্রহ দেখাচ্ছে বিভিন্ন ব্র্যান্ড। মিতালির পরে আগ্রহ সবচেয়ে বেশি হরমনপ্রীতের জন্য। বরুণ বলেন, ‘‘হরমনপ্রীতের ব্র্যান্ড ভ্যালু বেড়েছে দুই-থেকে তিন গুণ। তবে মিতালির জন্যই আগ্রহ সবচেয়ে বেশি।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE