শো: সচিন বায়োপিক বিরাটদের জন্য। ফাইল চিত্র
ম্যাঞ্চেস্টারে জঙ্গিহানার আতঙ্কের মধ্যেই আজ, বুধবার অধিক রাতে লন্ডনের উড়ান ধরছে বিরাট কোহালির ভারতীয় দল। জঙ্গিহানার পরেও তাঁদের সূচিতে কোনও পরিবর্তন করা হচ্ছে না।
বরং মুম্বই থেকে উড়ান ধরার আগে সূচিতে আর একটি ‘উপহার’ যোগ হয়েছে। তা হল, সচিন তেন্ডুলকরের বায়োপিক-দর্শন। সেনাবাহিনীর জন্য যেমন বিশেষ স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন সচিন, তেমনই আয়োজন তিনি করে ফেলেছেন ক্রিকেট মাঠের সৈন্যদের জন্য। ভারতীয় দলের ক্রিকেটারদের সকলকে মাস্টার-ব্লাস্টার নিজে নেমন্তন্ন করেছেন। বলে দিয়েছেন, ইংল্যান্ড রওনা হওয়ার আগেই ‘সচিন, আ বিলিয়ন ড্রিম্স’ দেখাতে চান। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য নির্বাচিত পুরো দলকে তো বটেই, আরও কয়েক জন পরিচিত ক্রিকেটারকেও ডেকে পাঠাতে পারেন সচিন।
এমনিতেই এই ভারতীয় দলে সচিন তেন্ডুলকরের নানা মহাতারকা-ভক্ত রয়েছেন। যেমন বিরাট কোহালি। ২০১১ বিশ্বকাপ জেতার পরে সচিনের সামনে হাঁটু গেড়ে বসে বিরাট গেয়েছিলেন ‘তুঝ মে রব দিখতা হ্যায়, ইয়ারা ম্যায় ক্যায়া করু’। ওয়াংখেড়েতে সচিনের অবসরের দিন ড্রেসিংরুমে আবেগতাড়িত হয়ে প্রয়াত বাবার দেওয়া কবচ সচিনকে উপহার দিয়ে দিচ্ছিলেন বিরাট। শেষ পর্যন্ত সচিনই বুঝিয়ে-শুনিয়ে তাঁকে থামান।
আরও পড়ুন: আইপিএল থাকলে আগেই বিশ্বকাপ জিততাম: সচিন
বিরাট ছাড়াও এই দলে বড় দুই সচিন-ভক্ত মহেন্দ্র সিংহ ধোনি এবং যুবরাজ সিংহ। ২০১১ বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক হিসেবে ধোনির ভূমিকাও থাকতে পারে বায়োপিকে। যাঁর নিজেরই বায়োপিক সম্প্রতি প্রকাশিত হয়ে সুপারহিটও হয়েছে। ধোনি যখন ঘরোয়া ক্রিকেট খেলছিলেন, তখন দারুণ একটি মজার কাহিনি ছিল। একটি ঘরোয়া ক্রিকেটের ম্যাচে সচিনও খেলছিলেন। ধোনি নিজের দলের ছেলেদের জন্য ড্রিঙ্কস নিয়ে ঢোকেন। কিন্তু মাঠের মধ্যে গিয়ে সবার আগে ড্রিঙ্কস নিয়ে চলে যান সচিনকে দিতে।
তেমনই যুবরাজ ২০১১ বিশ্বকাপের ‘প্লেয়ার অব দ্য টুর্নামেন্ট’ হয়ে বলেছিলেন, পুরো বিশ্বকাপটা তিনি সচিন তেন্ডুলকরের জন্য খেলছিলেন। তাঁকেই এই ট্রফি উৎসর্গ করছেন। ভারতীয় দলে খেলার শুরু থেকে সচিনের খুবই ঘনিষ্ঠ যুবরাজ। কেরিয়ারে খারাপ ফর্ম চলার সময়েও তিনি বারবার ছুটে গিয়েছেন সচিনের কাছে। যেমন ছুটে গিয়েছেন বিরাট। তাঁদের কাছে সচিনের বায়োপিকের অর্থই তাই অন্য রকম। ভুলে গেলে চলবে না এই টিমের এখনকার হেড কোচের নামও। তিনি— অনিল কুম্বলেও যে দীর্ঘ অভিজ্ঞতার ঝুলি নিয়ে বসে আছেন সচিনের সতীর্থ হিসেবে। বুধবারের স্পেশ্যাল স্ক্রিনিংয়ে কুম্বলেও থাকছেন।
বিরাটদের কাছে সবচেয়ে বড় প্রেরণা হতে যাচ্ছে, স্বয়ং সচিন তেন্ডুলকরের উপস্থিতি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলতে রাতেই উড়ে যাচ্ছেন তাঁরা। তা-ও আবার এ রকম একটা আতঙ্কের পরিস্থিতির মধ্যে যখন আগের দিনই কি না বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছে আরিয়ানা গ্রান্দে-র কনসার্ট দেখতে যাওয়া এতগুলি সাধারণ মানুষের শরীর।
কারও কারও মনে হচ্ছে, ইংল্যান্ডে মাঠে এবং মাঠের বাইরে যে চ্যালেঞ্জের পরিবেশ তৈরি হয়ে গিয়েছে, তার মোকাবিলা করার জন্য সেরা দাওয়াই পেয়ে গেল টিম। যে লোকটা তাঁদের সকলের স্বপ্নের নায়ক, তাঁর সঙ্গে বসে তাঁর বায়োপিক দেখে নেওয়ার সুযোগ। আতঙ্কের বিলেতি পিচে ব্যাট করতে নামার আগে এর চেয়ে মনোবল-বর্ধক ‘টনিক’ আর কী হতে পারে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy