বিদ্যুত্গতিতে দৌড়চ্ছে ‘রবিনহুড’। তার ঠিক পিছনেই ‘থান্ডারবোল্ট’। তার পরপরই ‘উইনিং স্টর্ম’, ‘ফ্রন্টরানার’রা। গ্যালারি থেকে তাদের উদ্বুদ্ধ করতে ভেসে আসছে নানা মন্তব্য। মাত্র কিছু ক্ষণের উত্তেজনা। শেষ হল দৌড়।
ঘোড়দৌড়ের সঙ্গে যুক্ত মানুষ রেসের মাঠের এমন ছবির সঙ্গে সুপরিচিত। আর সিনেমার দৌলতে রেসের মাঠের এই উত্তেজনার কথা জানা সাধারণ মানুষেরও। ঘোড়াদের বিচিত্র নাম এবং জকিদের সঙ্গে তাঁদের ‘সম্পর্ক’ নিয়ে নানা কাহিনি থাকলেও রেসের মাঠের মূল ইউএসপি কিন্তু গতি। বাজি ধরা ঘোড়াটিকে আরও জোরে দৌড় করানোর জন্য দর্শক পারলে নিজেই মাঠে নেমে পড়েন। দর্শকদের বাড়তি অ্যাড্রিনালিন ঝরাতে ঘোড়াদের গতি কী করে আরও বাড়ানো যায় তা নিয়ে গবেষণাও হয়েছে বিস্তর। সম্প্রতি এক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ঘোড়দৌড়ের ১৬৫ বছরের ইতিহাসে অনেকটাই বেড়ে গেছে ঘোড়াদের গতি। এবং এই গতির বৃদ্ধিই যে চৃড়ান্ত নয়, তা-ও দাবি করা হয়েছে এই রিপোর্টে। আর এই রিপোর্ট নিয়েই তৈরি হয়েছে বিতর্ক।
রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৯৫০ সালের কোনও ঘোড়া যে সময়ে রেস শেষ করত, আজকের দিনে সে অন্তত তা শেষ করত ১ সেকেন্ড আগে। ঘোড়দৌড়ের সঙ্গে যুক্ত গবেষকদের দাবি, এই উন্নতি বিস্ময়কর। এই উন্নতির কারণ হিসাবে রিপোর্টে আধুনিক প্রজননকে কৃতিত্ব দেওয়া হয়েছে। আর এখানেই বেধেছে গোল।
এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষক রিপোর্টটি ভাল করে দেখতে গিয়ে এর মধ্যে অনেক ত্রুটি খুঁজে পান। তিনি দেখেন, রিপোর্টে ৮-১২ ফারলং এবং ১৪-২০ ফারলঙের রেসগুলির পরিসংখ্যান থাকলেও ৫-৭ ফারলঙের রেসগুলির হিসাব রাখা হয়নি। এবং যে রেসগুলি দেখে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তার পরিমাণও খুব কম। ওই ছাত্র ১৮৫০ থেকে ২০১২ পর্যন্ত বেশির ভাগ রেস এবং ১৯৯৭ থেকে সবক’টি রেসের তালিকা তৈরি করেন। তিনি দেখেন, শেষ ১৫ বছরে ৬ ফারলঙের রেসগুলিতে সত্যিই গতিবেগ বেড়েছে বিস্তর। কিন্তু লম্বা রেসগুলির ক্ষেত্রে সময়ের তারতম্য ততটা নয়। আধুনিক প্রজননের জন্যই যদি ঘোড়াদের গতি বেড়ে থাকে, তাহলে লম্বা রেসগুলিতে তার প্রভাব পড়ছে না কেন? এখানেই ধাক্কা খেয়েছে রিপোর্টের আধুনিক প্রজননকে স্বীকৃতি দেওয়ার তত্ত্ব।
ওই গবেষকের ব্যাখ্যা, “১৯৭০ সালের পর থেকে বেশির ভাগ জকিই প্রবাদপ্রতিম লেস্টার পিগটের কৌশল অনুসরণ করতে শুরু করেন। আর তার জেরেই গতির এই পরিবর্তন।” তবে আধুনিক প্রজননকেও এর জন্য নম্বর দিচ্ছেন তিনি। তাঁর দাবি, “চটজলদি ফল পেতে বিভিন্ন ভাল জাতের ঘোড়াদের মধ্যে প্রজনন করাচ্ছেন মালিকেরা। ফলে কিছু ক্ষেত্রে তাক লাগানো ফল হচ্ছে। আর এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রেসে পেশাদার জকিদের আবির্ভাব। তাঁরা ঘোড়াদের গতি বাড়াতে বিজ্ঞানের আশ্রয় নিচ্ছেন আরও বেশি করে। ফলে বাড়ছে ঘোড়াদের গতি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy