Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪

‘গেলের বিরুদ্ধে শুরুতেই আনা উচিত ছিল নারাইনকে’

সব দিক দিয়ে একেবারে আদর্শ ওপেনিং জুটি। এক জন ডান হাতি, অন্য জন বাঁ হাতি। দু’জনেই দারুণ ছন্দে। দু’জনেই নিজেকে প্রমাণ করতে নামছেন।

ইডেনভোলানো: দুরন্ত ইনিংসে কিংস ইলেভেন পঞ্জাবকে জেতানোর পরে দলের মালকিন প্রীতি জিন্টার সঙ্গে ক্রিস গেল। শনিবার ইডেনে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

ইডেনভোলানো: দুরন্ত ইনিংসে কিংস ইলেভেন পঞ্জাবকে জেতানোর পরে দলের মালকিন প্রীতি জিন্টার সঙ্গে ক্রিস গেল। শনিবার ইডেনে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:১৬
Share: Save:

এই মুহূর্তে আইপিএলের সেরা ওপেনিং জুটি কোনটা? এই প্রশ্ন উঠলে ৯৫ শতাংশের উত্তর সম্ভবত একটাই হবে। ক্রিস গেল এবং কে এল রাহুলের জুটি।

সব দিক দিয়ে একেবারে আদর্শ ওপেনিং জুটি। এক জন ডান হাতি, অন্য জন বাঁ হাতি। দু’জনেই দারুণ ছন্দে। দু’জনেই নিজেকে প্রমাণ করতে নামছেন। দু’জনেই বদ্ধপরিকর ভাল কিছু করতে।

শনিবার ইডেনে গেল (৩৮ বলে ৬২) হয়তো কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের সর্বোচ্চ স্কোরার। কিন্তু কলকাতা নাইট রাইডার্সের দেওয়া ১৯২ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে রাহুল (২৭ বলে ৬০) যে ইনিংসটা খেললেন, তাতে ওঁকে ম্যাচের সেরা ক্রিকেটার বেছে নেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না। রাহুল পাঁচ দিনের ক্রিকেটের ব্যাটসম্যান, এমন একটা তকমা ওঁর গায়ে লেগে গিয়েছে। সেটা ভুল প্রমাণ করতেই যেন এই আইপিএলে নেমেছেন তিনি। উইকেটের সব দিকে স্ট্রোক খেলতে পারেন। দুর্দান্ত টাইমিং। টেকনিক্যালি নিখুঁত হওয়ার কারণে ঝুঁকি বেশি নিতে হয় না। একটা কথা মাথায় রাখতে হবে। যে ব্যাটসম্যান টেকনিকের দিক দিয়ে খুব ভাল, তিনি যে কোনও ধরনের ক্রিকেটে মানিয়ে নিতে পারবেন। উল্টো দিকে গেল থাকায় এখন আর রান রেট নিয়েও ভাবতে হয় না রাহুলকে।

এমন ওপেনিং‌ জুটির বিরুদ্ধে শুরু থেকেই নিজেদের সেরা বোলারকে আক্রমণে নিয়ে আসতে হয়। কেকেআর অধিনায়ক দীনেশ কার্তিক কেন সুনীল নারাইনকে শুরু থেকেই আক্রমণে আনলেন না, বুঝলাম না। অফস্পিনারদের বিরুদ্ধে গেলের দুর্বলতার কথা তো অজানা নয়। কিন্তু গেলের সামনে শুরুতে পেসার এনে ক্যারিবিয়ান ওপেনারের কাজটা সহজ করে দিলেন কার্তিক। বিশেষ করে আন্দ্রে রাসেলকে নতুন বল দেওয়ার কোনও যুক্তি নেই। একে রাসেলের বোলিংয়ে এখন সে রকম ঝাঁঝ নেই। তার ওপর হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট সারিয়ে এসেছে। তাই বোলিংয়ে ওর থেকে দারুণ কিছু আশা না করাই ভাল। শনিবার যেমন ১.৫ ওভারে ৩১ রান দিল। তার পর চোট পেয়ে বেরিয়ে গেল। জানি না, ক’টা ম্যাচের জন্য।

নারাইনকে সেই পাওয়ার প্লে-র মধ্যেই আনতে হল, কিন্তু তত ক্ষণে ম্যাচ ধরে নিয়েছে পঞ্জাব। বৃষ্টিতে যখন খেলা বন্ধ হয়, তখন পঞ্জাবের স্কোর ছিল বিনা উইকেটে ৯২। ওখানেই ম্যাচ শেষ হয়ে যায়। বৃষ্টির পরে খেলা শুরুর পরে ব্যাপারটা নিয়মরক্ষার হয়ে গিয়েছিল। ডাকওয়ার্থ-লুইস নিয়মে ১২৫ রানের লক্ষ্য ১১ বল বাকি থাকতে তুলে দেয় পঞ্জাব।

কেকেআর যে ভাবে শুরু করেছিল, তাতে মনে হচ্ছিল, ২১৫-২২০ হবে। কিন্তু কার্তিকরা দু’শো টপকাতে পারলেন না। শেষ পাঁচ ওভারে যে রাসেলের ঝড় তোলার কথা ছিল, তাঁকে বেশ বুদ্ধি করে আউট করলেন আর অশ্বিন। রাসেল সাধারণত সোজা সোজা শট খেলতে ভালবাসেন। যে কারণে লংঅফ একটু সোজা করে রেখেছিলেন পঞ্জাব অধিনায়ক। সেখানেই ক্যাচ তুলে আউট হলেন রাসেল। ক্রিস লিন-রবিন উথাপ্পার জুটি বড় রানের একটা মঞ্চ গড়ে দিয়েছিল। লিন অফস্টাম্পের বাইরের বল যেমন ভাল খেলতে পারেন, সে রকম অন সাইডের বলেও সাবলীল। পঞ্জাব বোলাররা ওঁর পছন্দের জায়গাতেই বল করে গেলেন। কার্তিকের ব্যাটিং দেখেও বোঝা যাচ্ছে, শ্রীলঙ্কায় ওই রকম ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলার পরে আত্মবিশ্বাস এখন তুঙ্গে। কিন্তু কেকেআরের অন্যতম ভরসা, নীতীশ রানা অবিবেচকের মতো রান আউট হয়ে গেলেন। ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে বল গিয়েছিল। রানার কলই নয় ওটা। কিন্তু কিছু না দেখে ক্রিজ ছেড়ে বেরোনোর খেসারত দিলেন তিনি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE