Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Sport News

জোড়া গোল করে দেশকে ট্রফি উপহার দিলেন কলকাতার জামাই সুনীল

ভারতের জার্সি গায়ে অতীতে খেলেছি। জানি, দেশের জার্সি হয়ে পারফর্ম করতে গিয়ে কী পরিমাণ চাপের সম্মুখীন হতে হয়। সেখানে সুনীল ছেত্রী কিন্তু ভারতীয় দলের জার্সি গায়ে গোলের পর গোল করে যাচ্ছেন ধারাবাহিক ভাবে।

দুরন্ত: সুপার সুনীল। আন্তঃ মহাদেশীয় কাপে চ্যাম্পিয়ন ভারতীয় দল। ছবি: পিটিআই।

দুরন্ত: সুপার সুনীল। আন্তঃ মহাদেশীয় কাপে চ্যাম্পিয়ন ভারতীয় দল। ছবি: পিটিআই।

শিশির ঘোষ
শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০১৮ ২২:৫৯
Share: Save:

ভারত ২ • কেনিয়া ০

বিশ্বকাপের এই ভরা মরসুমে বেশির ভাগ আড্ডাতেই এখন ব্রাজিল-আর্জেন্তিনা-জার্মানির উপস্থিতি প্রবল। কিন্তু রবিবার রাতে মুম্বই ফুটবল এরিনায় ভারত অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী দুরন্ত ফুটবল খেলে আন্তঃমহাদেশীয় কাপে ভারতকে চ্যাম্পিয়ন তো করলেনই। একই সঙ্গে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে মেসিকে ধরে ফেললেন গোল সংখ্যায়।

ভারতের জার্সি গায়ে অতীতে খেলেছি। জানি, দেশের জার্সি হয়ে পারফর্ম করতে গিয়ে কী পরিমাণ চাপের সম্মুখীন হতে হয়। সেখানে সুনীল ছেত্রী কিন্তু ভারতীয় দলের জার্সি গায়ে গোলের পর গোল করে যাচ্ছেন ধারাবাহিক ভাবে। অতীতে এই জায়গাটা একটু ঘসামাজা করার দরকার ছিল সুনীলের। এখন সেটা করে নিজেকে ওঁর সমসাময়িক ফুটবলারদের থেকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন কলকাতার জামাই। আসলে, শেখার অদম্য ইচ্ছাই বড় করেছে সুনীলকে।

এ দিন জোড়া গোলের সুবাদে এই টুর্নামেন্টে চার ম্যাচে ৮ গোল হয়ে গেল সুনীলের। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক ম্যাচে গোলসংখ্যায় লিয়ো মেসিকেও ধরে ফেললেন সুনীল। আন্তর্জাতিক ফুটবলে এই মুহূর্তে মেসির গোলসংখ্যা ৬৪। ভারতীয় দলের জার্সিতে এ দিন সুনীলও ৬৪ গোল করে ফেললেন। তাও আবার মেসির চেয়ে কম ম্যাচ খেলে। সুনীলের দ্বিতীয় গোলের পরে টিভির ধারাভাষ্যকাররা যখন এই তথ্য দিচ্ছিলেন, তখন বুক গর্বে ফুলে উঠল।

সুনীলদের এই জয় এশিয়ান কাপের আগে নতুন স্বপ্ন দেখাচ্ছে। ছবি: পিটিআই।

এ দিন দু’টো গোল করলেন সুনীল। প্রথম গোলের সময় ওঁকে বলটা বাড়িয়েছিলেন অনিরুদ্ধ থাপা। বলটা ঠিক জায়গায় রেখেছিলেন তিনি। সেখানে কেনিয়ার বড় চেহারার ডিফেন্ডারকে ধরাছোঁয়ার বাইরে নিজেকে নিয়ে গিয়ে যে রকম বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে গোলটা করলেন ভারত অধিনায়ক তা তারিফ করার মতো। মুগ্ধ করার মতো সুনীলের দ্বিতীয় গোলটাও। রক্ষণ থেকে আনাস এডাথোডিকা লম্বা বল বাড়িয়েছিলেন। সেই বল বুক দিয়ে রিসিভ করে যে ভাবে সুনীল প্রথমে অফসাইডের ফাঁদ টপকালেন তা তরুণ স্ট্রাইকারদের কাছে শিক্ষণীয়। আর তার পরেই বক্সের কিছুটা ভিতর থেকে বাঁ পায়ের জোরালো শটে ২-০ করে যায়।

আসলে সুনীলের খেলার বিশেষত্ব হল চোরা গতি, বল পায়ে ঘাড়ের কাছে ডিফেন্ডারদের নিয়ে ঘোরা, দু’পায়ের জোরালো শট, ডিফেন্ডারদের পিছনে তৈরি হওয়া ফাঁকা জায়গা ব্যবহার করা। এ সবই সুনীলের খেলার বৈশিষ্ট। এখন একটা নতুন ব্যাপার জুড়েছে। তা হল নেতৃত্বের দায়িত্ব নিয়ে খেলা। যা আদর্শের মতো অনুকরণ করছে দলের জুনিয়ার ফুটবলাররা। সুনীলদের এই জয় এশিয়ান কাপের আগে নতুন স্বপ্ন দেখাচ্ছে।

সব শেষে একটা কথাই বলব, আন্তঃমহাদেশীয় কাপ জেতায় আগামী ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়েও আরও কিছুটা উপরে যাওয়ার ক্ষেত্রে সুবিধা পেতে পারে স্টিভন কনস্ট্যান্টাইনের ভারত। বিশ্বকাপের বাজারে তা নিঃসন্দেহে একটা বড় প্রাপ্তি তো বটেই।

ভারত: গুরপ্রীত সিংহ সাঁধু, প্রীতম কোটাল (লালরুয়াথারা), সন্দেশ ঝিঙ্গন, আনাস এডাথোডিকা, শুভাশিস বসু (নারায়ণ দাস), প্রণয় হালদার, অনিরুদ্ধ থাপা (লালডানমাউইয়া রালতে), উদান্ত সিংহ (আশিক কুরুনিয়ান), জেজে লালপেখলুয়া (বলবন্ত সিংহ), হোলিচরণ নার্জারি (রওলিন বর্জেস), সুনীল ছেত্রী।

অন্য বিষয়গুলি:

Football India Kenya Intercontinental Cup
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE