Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

টিমকে শীর্ষে রেখেও বিতর্কে সনি নর্দে

চুরাশি মিনিট পর্যন্ত গোল না পেয়ে কতটা উত্তেজিত ছিলেন সনি নর্দে তা বোঝা গেল হাইতি স্ট্রাইকারের গোল করার পরের উচ্ছ্বাসের ধরন দেখে।

উৎসব: গোল করে মোহনবাগানকে খেতাব যুদ্ধে এগিয়ে রাখার পরে সনি নর্দে। শনিবার মিনার্ভা ম্যাচে। টুইটার

উৎসব: গোল করে মোহনবাগানকে খেতাব যুদ্ধে এগিয়ে রাখার পরে সনি নর্দে। শনিবার মিনার্ভা ম্যাচে। টুইটার

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:৪৫
Share: Save:

মোহনবাগান ১ : ০ মিনার্ভা পঞ্জাব

চুরাশি মিনিট পর্যন্ত গোল না পেয়ে কতটা উত্তেজিত ছিলেন সনি নর্দে তা বোঝা গেল হাইতি স্ট্রাইকারের গোল করার পরের উচ্ছ্বাসের ধরন দেখে।

শিলিগুড়ির ডার্বিতে গোলের পর স্টেনগান চালানোর ভঙ্গি করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন। শনিবার লুধিয়ানার মাঠে প্রায় পঁচিশ গজ দৌড়ে বল টেনে নিয়ে দিয়ে গোল করার পর সনি দু’হাত মুষ্টিবদ্ধ করে দৌড় লাগালেন ফ্ল্যাগ পোস্টের দিকে। তার পর পুরো স্টেডিয়ামকে কিছুটা অবাক করে দিয়ে সজোরে লাথি মারলেন ফ্ল্যাগ পোস্টে। বাংলা নববর্ষের রাতে সদস্য-সমর্থকদের খুশির পাশাপাশি চিন্তাও বাড়িয়ে দিলেন সনি।

বিরতির কিছুক্ষণ পর গুরু নানক স্টেডিয়ামের একটি দিকের বাতিস্তম্ভের আলো নিভে গিয়ে প্রায় দশ মিনিটের বেশি সময় খেলা বন্ধ ছিল। এই সময় রিজার্ভ বেঞ্চে বসে থাকা কোচ সঞ্জয় সেন, ম্যানেজার সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের মুখ দেখে মনে হচ্ছিল খেতাব থেকে ছিটকে যাওয়ার আশঙ্কায় তাঁরা অস্থির। সেই অন্ধকারে আলো ফোটালেন সনি, প্রায় একার কৃতিত্বে। সঙ্গে জড়ালেন বিতর্কেও। হলুদ কার্ড তো দেখলেনই, শোনা যাচ্ছে জরিমানা হতে পারে মহাতারকার। ম্যাচের পর মোহনবাগান কোচ লুধিয়ানা থেকে ফোনে বললেন, ‘‘টেনশন তো হবেই। যাই হোক শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা জিতে শীর্ষে আছে টিম এটাই আসল ব্যাপার।’’

আরও পড়ুন: রেহনেশের শাস্তি, ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন ইস্টবেঙ্গলে

গোয়ায় খালিদ জামিলের আইজল চার্চিলের বিরুদ্ধে জিতে যাওয়ায় মোহনবাগান যে চাপে পড়ে গিয়েছিল সেটা বোঝা যাচ্ছিল খেলার শুরু থেকেই। মিনার্ভাকে রবীন্দ্র সরোবরে হেলায় হারিয়েছিলেন সনিরা। সেই ম্যাচ জিততেই আজ কালঘাম ছুটল।

সুরিন্দর সিংহের মিনার্ভা আহামরি কোনও দল নয়। লিগ টেবলে তাদের অবস্থানও দশ দলের মধ্যে নয়ে। তা সত্ত্বেও উইং প্লে ঠিক মতো হচ্ছিল না সনিদের। সেট পিস কাজে লাগাতে বার বার ব্যর্থ হচ্ছিলেন ড্যারেল ডাফিরা। প্রথম একাদশে এ দিন দু’টো পরিবর্তন করেছিলেন মোহনবাগান কোচ। জেজে লালপেখলুয়া আর পিন্টু মাহাতোকে নামিয়ে দিয়েছিলেন শুরুতেই। কিন্তু জঙ্গলমহলের ছেলে অনূর্ধ্ব ২২ ফুটবলার পিন্টুকে প্রথমার্ধের মাঝামাঝি তুলে নিয়ে প্রবীর দাশকে নামিয়ে দিয়েছিলেন সঞ্জয়। ইউসা কাতসুমি বা শেহনাজ সিংহ সে ভাবে মাঝমাঠ সামাল দিতে না পারায় তাদের রক্ষণের উপর চাপ বাড়াচ্ছিলেন পঞ্জাবের সিমরনজিৎ সিংহরা। একবার তো সিমরনের শট মোহনবাগান পোস্টে লেগেও ফিরল। সবুজ-মেরুনের গোলকিপার দেবজিৎ মজুমদার দক্ষতার সঙ্গে রুখলেন ডেভিড নাগাহিতে ও ভিক্টর অ্যাম্বোইয়ের শট।

তবে সঞ্জয় সেনের টিমই গোলের সুযোগ পেয়েছিল বেশি। ডাফি, কাতসুমি বা সনিরা অন্তত চারটে সহজ সুযোগ নষ্ট করেন। কাতসুমির একটি শট গোললাইন থেকে ফেরান পঞ্জাবের রাইট ব্যাক মইনুদ্দিন। গোল হচ্ছে না দেখে একটা সময় কার্যত তিন ফরোয়ার্ডে চলে গিয়েছিলেন সবুজ-মেরুন কোচ। প্রবীর দাশের জায়গায় বলবন্ত সিংহকে নামিয়ে। জেজে, ডাফি এবং বলবন্ত চাপ বা়ড়াতেই পঞ্জাবের দলটি পিছু হটতে শুরু করে। আর তার পরই মোহনবাগানের খেতাব বাঁচিয়ে রাখার গোল।

এই ম্যাচ জিতে যাওয়ায় আইজল এফ সি-র সঙ্গে সমান পয়েন্ট (৩৩) হওয়া সত্ত্বেও লিগ টেবলের শীর্ষে থেকে গেল মোহনবাগান। ২২ এপ্রিল আইজলের সঙ্গে ম্যাচ রয়েছে সঞ্জয়ের টিমের। দু’দল এক বিন্দুতে দাঁড়িয়ে থাকলেও গোল- পার্থক্যে এগিয়ে সনিরা। মোহনবাগান যেমন শেষ ম্যাচ খেলবে চেন্নাইয়ের সঙ্গে। তেমনই খালিদ জামিলের টিমের খেলা রয়েছে শিলং লাজংয়ের সঙ্গে। আইজল ম্যাচ ড্র করে শেষ ম্যাচ জিতলেই চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে মোহনবাগান। আপাতত এই অঙ্ক সামনে রেখেই শহরে ফিরছেন সনিরা।

মোহনবাগান: দেবজিৎ মজুমদার, প্রীতম কোটাল, এদুয়ার্দো ফেরিরা, আনাস এডাথোডিকা, রাজু গায়কোয়াড়, পিন্টু মাহাতো (প্রবীর দাশ)(বলবন্ত সিংহ), ইউসা কাতসুমি, শেহনাজ সিংহ, সনি নর্দে, ড্যারেল ডাফি, জেজে লালপেখলুয়া।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE