Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

দুই হাইতিয়ানের একদা বিপক্ষ এগিয়ে রাখছেন সনিকেই

এই শহরেই রয়েছেন তিনি। মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল দু’ক্লাবেই কোচ হিসেবে যিনি সাফল্য দিয়ে গিয়েছেন। অতীতে।

সৈয়দ নইমুদ্দিন

সৈয়দ নইমুদ্দিন

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:৪৬
Share: Save:

এই শহরেই রয়েছেন তিনি। মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল দু’ক্লাবেই কোচ হিসেবে যিনি সাফল্য দিয়ে গিয়েছেন। অতীতে।

তবে এই মুহূর্তে তিনি আই লিগের আসন্ন ডার্বি ম্যাচের উত্তাপ থেকে বহু যোজন দূরে! তা সত্ত্বেও খবরের কাগজের সৌজন্যে সনি-ওয়েডসনের হুঙ্কারের খবর রাখেন নিয়মিত।

ইস্টবেঙ্গল কোচ ট্রেভর জেমস মর্গ্যান বা মোহনবাগানের সঞ্জয় সেনের বহু আগে-ই সনি নর্ডি ও ওয়েডসন—দু’জনকেই তাঁর স্ট্র্যাটেজি-ট্যাকটিক্স দিয়ে আলাদা আলাদা ভাবে সামলেছেন তিনি!

মোহনবাগানের সনিকে চার বছর আগে। আর মাসখানেক আগে ইস্টবেঙ্গলের ওয়েডসনকে। যদিও দু’বারই তাঁকে হেরে ফিরতে হয়েছে দুই হাইতিয়ানের টিম শেখ জামাল ধানমন্ডির কাছে।

যদিও সেই ফুটবল-যুদ্ধ ভারতে হয়নি। হয়েছে বাংলাদেশের মাটিতে। আর তিনি লড়েছেন ব্রাদার্স ইউনিয়ন কোচ হিসেবে।

কে তিনি? তিনি সৈয়দ নইমুদ্দিন। ফুটবলের একমাত্র দ্রোণাচার্য কোচ।

ডার্বির ভরা বাজারে মোহন-ইস্টের দুই ক্রাউডপুলার হাইতিয়ানের বিরুদ্ধে সেই দুই ম্যাচ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে ব্রাদার্স ইউনিয়নের এই ভারতীয় কোচ নোটবুক খুলে বলতে থাকেন, ‘‘সনি কিন্তু আমার টিমের বিরুদ্ধে সে বার গোল করতে পারেনি। তবে ওয়েডসন জোড়া গোল করে গিয়েছিল। মাঠের ভিতর দু’জনের ভাল-মন্দই হাতের তালুর মতো জানি।’’

কিন্তু দু’জনের সম্পর্কে তুল্যমূল্য বিচার করতে গেলে কিছুটা হলেও নইম এগিয়ে রেখে দেন সবুজ-মেরুনের সনিকেই। বলে দেন, ‘‘ওয়েডসন, সনি— দু’জনের খেলার মানই বেশ ভাল। কিন্তু সনি স্কোরার কাম স্কিমার। স্কিলফুল। উইংয়ে শাফলিং করে। কখনও মিডল করিডরে ঢুকে আসে। তাই ওকে আটকাতে গেলে কিছু বিশেষ অঙ্ক কষতে হবেই বিপক্ষ কোচকে। সনিকে আটকানো একটু কঠিন কাজ তো বটেই।’’

কী ভাবে চার বছর আগে সনিকে গোল পেতে দেননি এ দিন জানতে চাইলে সে গল্পও শুনিয়ে দেন নইম। ‘‘সনিকে ওই ম্যাচে আটকানোর জন্য আমি বিশেষ দায়িত্ব দিয়েছিলাম আমার নাইজিরিয়ান ডিফেন্ডার অ্যাডামসকে। আর সনি যাতে বল নিয়ে ঘুরতে না পারে তার জন্য ক্লোজ মার্কিং করতে বলেছিলাম ইউসুফ এবং মণিকে। ওরা গোটা ম্যাচে তা করে দেখিয়েছিল। ফলে ০-১ হারলেও সনি গোল করে যেতে পারেনি।’’ বলেই সেই চেনা ভঙ্গিমায় উপরের দিকে হাত দেখিয়ে বলে ফেলেন, ‘‘আল্লাহ মেহেরবান তো নইম পালোয়ান।’’

আর ওয়েডসন? এ বার দ্রোণাচার্য কোচ বলেন, ‘‘ওয়েডসন দেখতে রোগাসোগা হলেও শারীরিক ভাবে কিন্তু বেশ শক্তপোক্ত। ওকে থামাতে গেলে শক্তি প্রয়োগ করতে হয়।’’ একটু থেমে ফের বলতে শুরু করেন, ‘‘গত বছর ব্রাদার্সের কোচ হিসেবে যাওয়ার পর সেই দায়িত্ব দিয়েছিলাম আব্বাস আর আরিফকে। কিন্তু ওরা সে দিন ওয়েডসনের ধাক্কাধাক্কি সামলাতে পারেনি। ও সেই সুযোগে জোড়া গোল করে যায়। আমরা ৪-৫ হেরেছিলাম। তাও শেষ মুহূর্তে আমাদের হাইতিয়ান ওয়ালসন পেনাল্টি নষ্ট করেছিল। মজার ব্যাপার, ওয়ালসনকে আমার কাছে পাঠিয়েছিল সনি নর্ডিই।’’

মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গলের এই দুই তুরুপের তাস সম্পর্কে টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ করার সময়ও নইম বেশ সাবলীল। বলেন, ‘‘সনির প্লাস পয়েন্ট ওর বলের উপর কন্ট্রোল। ইনসাইড এবং আউটসাইড— দু’দিক দিয়েই অপারেট করতে পারে। পায়ে গোলার মতো শটও আছে। তবে পায়ের জঙ্গলে পড়ে গেলে বা সাপোর্টিং না পেলে ও নির্বিষ হয়ে পড়ে।’’

কথা বলা শেষ করেই ফের ওয়েডসন সম্পর্কে গড়গড় করে নইম বলেন, ‘‘ওয়েডসন ফিজিক্যাল ফুটবলটা ভাল মোকাবিলা করে। আর বল হোল্ড করে খেলতে পারার একটা বিশেষ গুণ রয়েছে।’’ একটু থেমে নইম ওয়েডসনকে বিশ্লেষণ করতে গিয়ে আরও বলেন, ‘‘তবে ওঁকে কখনও বক্সের আগে বা মধ্যে জোরালো শটে গোল করতে দেখিনি। বেশি বল পায়ে রেখে কখনও কখনও দলের বিপদ বাড়ায়। সেটা না হলে কিন্তু ডার্বিতে মোহনবাগান ডিফেন্স ও মাঝমাঠের ঘুম কেড়ে নিতে পারে ওয়েডসন।’’

আজ শুক্রবার শিলিগুড়ি উড়ে যাওয়ার আগে ট্রেভর মর্গ্যান বা সঞ্জয় সেন কি শুনছেন সনি-ওয়েডসন নিয়ে নইমের বিশ্লেষণ?

অন্য বিষয়গুলি:

Syed Nayeemuddin Sony Norde Derby Wedson
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE