Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

ডার্বির ‘পয়মন্ত’ দস্তানা বেছে ফেলেছেন শিল্টন

ডার্বি হারলে সেই গ্লাভস আর পরেন না। ২০১৪-১৫-য় মোহনবাগান তেরো বছর পর যে বার লিগ পেয়েছিল, সে বার শেষ চারটি ম্যাচ একই দস্তানা পরে খেলেছিলেন।

সংস্কার: দস্তানা নিয়ে স্পর্শকাতর শিল্টন। ফাইল চিত্র

সংস্কার: দস্তানা নিয়ে স্পর্শকাতর শিল্টন। ফাইল চিত্র

রতন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:০১
Share: Save:

বাগুইহাটিতে তাঁর নতুন ফ্ল্যাটের ফ্রিজে গোটা পনেরো গ্লাভস যত্ন করে রাখা। গরমে দস্তানার ফোম নষ্ট হয়ে যায় বলে শুধু ওগুলোর যত্নের জন্যই ওই ফ্রিজের ব্যবহার। রবিবারের ডার্বিতে কোন দস্তানা পরে খেলবেন সেটা ইতিমধ্যেই ঠিক করে ফেলেছেন। ঠিক করেছেন, আগের যে দুটো ম্যাচে কোনও গোল খাননি, সেটা পরেই খেলবেন। ডার্বিতে জিতলে সেই দস্তানা পরে খেলে যান টানা ম্যাচ— যতক্ষণ না গোল খাচ্ছেন।

ডার্বি হারলে সেই গ্লাভস আর পরেন না। ২০১৪-১৫-য় মোহনবাগান তেরো বছর পর যে বার লিগ পেয়েছিল, সে বার শেষ চারটি ম্যাচ একই দস্তানা পরে খেলেছিলেন। আই লিগের ফিরতি ডার্বির সবথেকে অভিজ্ঞ ফুটবলার শিল্টন পাল (মেহতাব হোসেন প্রথম একাদশে নেই মোহনবাগানের) তাঁর হাতের অস্ত্র (গ্লাভস) নিয়ে বরাবরই স্পর্শকাতর। কেন? হেসে ফেলেন মোহনবাগানের ঘরের ছেলে। ‘‘কুসংস্কার বলতে পারেন। মনের জোর বাড়ানোর জন্য বলতে পারেন। গ্লাভস নিয়ে আমার এ সব আছে গত তেরো বছর ধরে।’’

তিন দিন পরে আই লিগের ফিরতি ডার্বিতে সনি নর্দে, দিপান্দা ডিকাদের মতোই খালিদ জামিল তাঁর উপর আস্থা রাখছেন। দলের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই গোল-দুর্গ রক্ষা করতে পাঠাচ্ছেন শিল্টনকে। তার প্রতিদানও তিনি দিয়েছেন শেষ দুটি ম্যাচে গোল না খেয়ে। শুধু তা-ই নয়, নেরোকার বিরুদ্ধে তাঁর হাত বাঁচিয়েছে দলকে। সনি গোল করে দলকে জেতালেও ম্যাচের সেরা হয়েছেন মছলন্দপুরের বঙ্গসন্তানই। আগের কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তী তাঁকে আই লিগের প্রথম ডার্বিতে খেলাননি। তিন গোল খেয়েছিল সবুজ-মেরুন। রবিবার অবশ্য এনরিকে এসকুয়েদা, জবি জাস্টিনদের গোল আটকানোর দায়িত্ব পড়েছে তাঁর উপরই। মোহনবাগান জার্সিতে ২৪০টা ম্যাচ খেলে ১০৩ ম্যাচে গোল খাননি তিনি। রবিবার কি সেটা ১০৪ হবে? মোহনবাগানের অনুশীলন ছিল না এ দিন। সবাইকে ছুটি দিয়েছিলেন তা সত্ত্বেও নিজের ফিটনেস ঠিক রাখতে ব্যস্ত ছিলেন জিমে। প্রশ্ন শুনে বাস্তবের জমিতে তিনি ‘‘গোলকিপাররা গোল খাবে না, তা হয় নাকি? তারা তো আর ম্যানড্রেক বা স্পাইডারম্যান নয়! বিশ্বের সব গোলকিপারের জীবনেই উত্থান বা পতন এসেছে। বাজে গোল খায়নি এ রকম কেউ আছে? আমিও খেয়েছি। বাড়ি এসে সেটা কেন খেলাম, টিভিতে বারবার দেখেছি। আগের ডার্বির গোলগুলো কী ভাবে জবিরা করেছিল সেগুলো দেখছি। ডার্বিতে গোল না খেয়ে ফেরাটাই চ্যালেঞ্জ আমার।’’

ডার্বিতে শিল্টনের রেকর্ড বেশ ভাল। টানা তেরো বছর খেলছেন মোহনবাগানে। নিজের ডায়েরি দেখে তিনি যে হিসাব দিচ্ছেন তাতে ২৬টা ডার্বি খেলে জিতেছেন ১০টি-তে। ছ’টিতে হেরেছেন। এ বার কী হবে? শিল্টন বললেন, ‘‘এটা তো আমাদের কাছে ফাইনাল ম্যাচ। আই লিগের খেতাব জয় তো আমাদের হাতে নেই। চেন্নাই অনেক এগিয়ে রয়েছে। ডার্বি জিতলে লড়াইতে থাকা যাবে।’’ আগের কোচের জমানায় মোহনবাগান প্রায় সব ম্যাচে গোল খাচ্ছিল। খালিদ দায়িত্ব নেওয়ার পরে পর পর দু’ম্যাচে গোল না খাওয়ার রহস্য কী? শিল্টনের জবাব, ‘‘নতুন কোচ রক্ষণ সংগঠন নিয়ে আলাদা অনুশীলন করান।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE