ডোপ পরীক্ষায় ধরা পড়ার মতো কলঙ্কিত অধ্যায় প্রকাশ্যে স্বীকার করার সাহস দেখিয়েছেন। মেনে নিয়েছেন যা ঘটেছিল তার পিছনে নিজের গাফিলতি সবচেয়ে বড় কারণ। কিন্তু তাঁর সততা নিয়ে যাঁরা প্রশ্ন তুলছেন, তাঁদের ছেড়ে কথা বলতে নারাজ মারিয়া শারাপোভা।
লন্ডনের একটি কাগজ দাবি করেছিল রুশ টেনিস সুন্দরীকে ‘মেলডোনিয়াম’ ওযুধটি নিষিদ্ধ হয়ে যাওয়া নিয়ে পরপর পাঁচ বার সর্তক করা সত্ত্বেও তাতে তিনি কান দেননি। ইঙ্গিত, শারাপোভা জেনেবুঝেই ওষুধটি খাচ্ছিলেন এবং ধরা পড়ায় দায় ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করছেন। আর এতেই অসম্ভব ক্ষুব্ধ মাশা।
টেনিস কোর্টে তাঁর ফেরা নিয়ে প্রবল অনিশ্চয়তার মধ্যে কোর্টের বাইরের এই চ্যালেঞ্জের সপাট পাল্টা দিয়েছেন এ দিন। শুক্রবার নিজের ফেসবুকে বিশাল পোস্ট করে সরাসরি কথা বলেছেন নিজের ভক্তদের সঙ্গে। লিখেছেন, ‘‘মানছি আমার আরও সতর্ক হওয়া উচিত ছিল। সেখানে আমি ভুল করেছি। কিন্তু যাঁরা বলছেন আমায় পাঁচ বার সতর্ক করা হয়েছিল, সেই সতর্ক করার ধরনটা কেমন ছিল, সেটা জানাতে চাই।’’ শারাপোভার দাবি, তাঁকে ডব্লিউটিএ ও আইটিএফ যে সব ই-মেল পাঠায় তার মধ্যে ছিল টেনিস সংক্রান্ত নানা খবরাখবর, জন্মদিনের শুভেচ্ছাবার্তা। কোথায় কী নতুন হচ্ছে তার সুলুকসন্ধান। এরই সঙ্গে নিষিদ্ধ ওষুধ নিয়েও কিছু তথ্য।
শারাপোভার কথায়, ‘‘১৮ ডিসেম্বর একটি ই-মেল পাই। যার শিরোনাম ছিল, ‘প্লেয়ার্স নিউজ’। তাতে র্যাঙ্কিং, টুর্নামেন্টের খবর, নানা বুলেটিন, জন্মদিনের শুভেচ্ছা, ইত্যাদির সঙ্গে ডোপিং সংক্রান্ত নিয়মের পরিবর্তনের কথাও ছিল। ওই ই-মেলে এত কিছু ছিল যে সেখান থেকে মেলডোনিয়াম নিয়ে সতর্কবার্তা অনেকটা খড়ের গাদায় সুচ খোঁজার মতো। এর পর তিনি বেশ ঝাঁঝালো ভাবে যোগ করেছেন, ‘‘হতে পারে মিডিয়ায় কেউ কেউ এটাকে সতর্ক করে দেওয়া বলবেন, কিন্তু সাধারণ ভাবে বেশির ভাগ মানুষেরই মনে হবে এত কিছুর মধ্যে মেলডোনিয়াম নিয়ে এক লাইনের তথ্য খুঁজে পাওয়া রীতিমতো কঠিন।’’
শারাপোভা জানিয়েছিলেন, তাঁর হৃদযন্ত্রের কিছু সমস্যা এবং শরীরে ম্যাগনেশিয়ামের অভাবের চিকিৎসা করতেই গত এক দশক ডাক্তারের নির্দেশে খুব সামান্য পরিমাণে মেলডোনিয়াম তিনি নিচ্ছিলেন। এ দিকে কিছু কাগজ লিখেছে, চিকিৎসার কারণে মেলডোনিয়ামের ব্যবহার চার থেকে ছ’সপ্তাহের বেশি করা হয় না। সঙ্গে এমনই ইঙ্গিত ছিল যখনই তিনি মনে করতেন ডোপ পরীক্ষায় ধরা পড়তে পারেন, তখনই চোটের অজুহাতে সরে দাঁড়াতেন। এর জবাবও দিয়েছেন শারাপোভা। বলেছেন, ‘‘ওষুধটা আমি মোটেই রোজ খেতাম না। চিকিৎসক যে ভাবে খেতে বলতেন সে ভাবেই খেতাম। আর টেনিসটা সারা জীবন চূড়ান্ত সততার সঙ্গেই খেলেছি। ডোপ পরীক্ষা এড়াতে চোটের অজুহাত দেব, এমন শিক্ষা আমার নেই।’’
কলঙ্কমোচনে শেষ পর্যন্ত লড়তে তৈরি জানিয়ে তিনি বলেছেন আন্তর্জাতিক টেনিস ফেডারেশনের শুনানির অপেক্ষায় আছেন। ‘‘আমার স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সংক্রান্ত সমস্ত রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর ওঁরা কী বলেন দেখতে চাই।’’ তবে একই সঙ্গে তিনি মানছেন কেরিয়ারে একটা বড় প্রশ্ন ঝুলে আছে। বলেছেন, ‘‘আশা করি আমাকে আবার খেলতে দেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy