এ বার সেরেনার চ্যালেঞ্জ কি সামলাতে পারবেন শারাপোভা?
উইম্বলডনের ‘ড্রিম গার্ল’ শারাপোভা গত দশ বছরে মাত্র দ্বিতীয় বার সেমিফাইনালে উঠলেন বটে। তবে মাশার সামনে কঠিনতম চ্যালেঞ্জ। প্রাক্তন বিশ্বসেরা ভিক্টোরিয়া আজারেঙ্কার কড়া চ্যালেঞ্জ সামলে শেষ চারে তাঁর মুখোমুখি সেরেনা উইলিয়ামস।
সেন্টার কোর্টে এ দিন যেন চলতি মরসুমের ফরাসি ওপেনের পুনরাবৃত্তিই হল। মঙ্গলবারও প্রথম সেটে পিছিয়ে গিয়েও শেষ পর্যন্ত সেরেনা জিতলেন ৩-৬, ৬-৩, ৬-৩। এই নিয়ে ২০ বারের মুখোমুখি লড়াইয়ে ১৭ বার জিতলেন সেরেনা। শেষ বার আজারেঙ্কা সেরেনাকে হারান তিন বছর আগে সিনসিনাটিতে। কিন্তু মঙ্গলবার প্রথম সেটের পর সেরেনার চেনা ছন্দ ফিরে আসায় আর কোনও সুযোগই পাননি প্রাক্তন অস্ট্রেিলয়ান ওপেন চ্যাম্পিয়ন। শারাপোভার বিরুদ্ধেও সেরেনার লড়াইকে সেরেনাভক্তরা একপেশেই দেখছেন। কেন না মাশা শেষ বার ২০০৪ সালে হারিয়েছিলেন সেরেনাকে। ১৯ বার মুখোমুখি লড়াইয়েও সেরেনা এগিয়ে ১৭-২।
এ দিকে, বিশ্বের পয়লা নম্বর জকোভিচ দুঃস্বপ্নের প্রি-কোয়ার্টার শেষমেশ পরের দিন উতরোলেন। ভারতীয়দের সমর্থকদের জন্যও দিনটা দারুণ গেল। ডাবলসে দিনের সবচেয়ে বড় অঘটন রোহন বোপান্না আর ফ্লোরিন মার্জিয়া জুটির। শীর্ষবাছাই বব ও মাইক ব্রায়ানকে চার সেটের লড়াইয়ে হারিয়ে শেষ চারে উঠলেন তাঁরা। ফল বোপান্নাদের পক্ষে ৫-৭, ৬-৪, ৭-৬ (৯), ৭-৬ (৫)। প্রায় আড়াই ঘণ্টার হাড্ডাহাড্ডি লড়াই জিতে প্রথম বার উইম্বলডনের সেমিফাইনালে ইন্দো-রোমানিয়ান জুটি। পাশাপাশি বিয়াল্লিশেও লিয়েন্ডার গ্র্যান্ড স্ল্যামের শেষ আটে জায়গা করে নিলেন। মিক্সড ডাবলসে মার্টিনা হিঙ্গিসকে নিয়ে জিতে। সানিয়া মির্জা ও ব্রুনো সোয়ারেসের জুটিকে তৃতীয় রাউন্ডে জয় পেতে অবশ্য তিন সেট লড়তে হল। শেষ পর্যন্ত ক্রোয়েশিয়ার অবাছাই জুটিকে তাঁরা হারান ৬-৩, ৬-৭ (৫), ৬-৩।
মঙ্গলবারের আলোচনার কেন্দ্রে আছে দুই অপরিচিত মুখও। প্রথম জন ভেনেজুয়েলাজাত স্প্যানিশ মেয়ে গারবিন মুগুরুজা ব্লাঙ্কো। দ্বিতীয় জন ৬ ফুট একের মার্কিন কন্যা কোকো ভান্ডেওয়েগ। এক জন জয়ী। অন্য জন পরাজিত হয়েও বীরের মর্যাদাপ্রাপ্ত।
আরান্থা সাঞ্চেজ, কনচিতা মার্টিনেজের সার্থক উত্তরসূরি ভাবা শুরু হয়ে গিয়েছে মুগুরুজাকে। গত বছর ফরাসি ওপেনে সেরেনাকে গোড়াতেই ছিটকে দিয়ে শেষ আটে উঠে তাঁর গর্জনের শুরু। এ দিন সুইস প্রতিভা ব্যাসিনস্কিকে, যিনি গত মাসেই রোলাঁ গারোয় সেমিফাইনালে উঠে সোরগোল তুলেছিলেন, তাঁকেই ৭-৫, ৬-৩ উড়িয়ে জীবনের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম সেমিফাইনাল উঠলেন এই মুহূর্তে সিঙ্গলসে বিশ্বের ১৯, ডাবলসে ১২ নম্বরে থাকা মুগুরুজা।
ভান্ডেওয়েগ আবার শারাপোভা নামক হেভিওয়েটের কাছে ৩-৬, ৭-৬ (৭-৩), ২-৬ হারলেও এক ইঞ্চি কেন, এক মিলিমিটার জায়গাও বিনা লড়াইয়ে ছাড়েননি। এগারো বছর পর্যন্ত ভলিবল, বাস্কেটবল, স্কোয়াশ, গল্ফ— চারটেই সমান দাপটে খেলা নিউইয়র্কের অলিম্পিয়ান পরিবারের মেয়ে টেনিসকেই বরং বেছে নিয়েছিলেন সবার শেষে। এবং বছর দুয়েকের বড় দাদা বিউ-কে যখন সেই সময় কুস্তিতে হারাচ্ছেন মা লড়াই থামিয়ে দিয়েছিলেন। যা নিয়ে ভান্ডেওয়েগ এখনও বলে থাকেন, ‘‘মা আসলে জানত লড়াই না থামালে দাদাকে আমি গুঁড়িয়ে দিতাম।’’ এ দিন শারাপোভারও অনুরূপ দশা হতে পারত যদি তাঁর প্রবল প্রতিপক্ষ ১-১ করার পর শেষ সেটের প্রথম গেমটাই আচমকা খুইয়ে না বসতেন। তবে সেরেনার উত্তরসূরির সন্ধান এ দিনই জানিয়ে গেলেন ভান্ডেওয়েগ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy