হুঙ্কার: ডার্সি শর্টকে ফিরিয়ে উচ্ছ্বাস খলিল আহমেদের। শুক্রবার মেলবোর্নে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে। তবে বৃষ্টিতে ভেস্তে গেল ম্যাচ। এএফপি
ভারতীয় বোলারদের দাপটে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানরা কোণঠাসা হয়ে পড়লেও মেলবোর্নের বৃষ্টি বাঁচিয়ে দিল অ্যারন ফিঞ্চদের।
বাড়তে থাকা বৃষ্টির জন্য ম্যাচটা পরিত্যক্ত না হলে হয়তো ভারত শুক্রবার টি-টোয়েন্টি সিরিজে সমতা ফেরাতে পারত। তবে বৃষ্টিতে ভেস্তে যাওয়া ম্যাচের স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ তাতিয়ে দিলেন অস্ট্রেলিয়ার দুই প্রজন্মের দুই ক্রিকেটার। এক মেরুতে যখন শেন ওয়ার্ন, অন্য মেরুতে উসমান খোয়াজা। ওয়ার্ন এ প্রজন্মের ব্যাটসম্যানদের শট বাছাইয়ের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় তার পাল্টা জবাব দিয়েছেন চোট নিয়ে দলের বাইরে থাকা খোয়াজা। কিংবদন্তির মুখের ওপর এমন তর্ক করায় স্বাভাবিক ভাবেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট মহল।
শুক্রবার মেলবোর্নে ভারত ১৯ ওভারে অস্ট্রেলিয়াকে ১৩২-৭ বেঁধে ফেললেও জেতার সুযোগ পেলেন না বিরাট কোহালিরা। শেষ ওভারে বৃষ্টির মধ্যেই আম্পায়ারেরা খেলা চালিয়ে যাওয়ায় ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহালিকে প্রতিবাদ করতে দেখা যায়। বৃষ্টিতে উইকেট নষ্ট হলে যে তাঁদেরই ভুগতে হত।
তবে বিরাটের সঙ্গে আম্পায়ারদের তর্কাতর্কিতে মেলবোর্ন তেতে ওঠার আগেই ফক্স স্পোর্টসের কমেন্ট্রি বক্সের তাপমাত্রার পারদ চড়ে যায় ওয়ার্ন ও খোয়াজার বাগযুদ্ধে। যখন সেখানে বসে খোয়াজা বলেন, ‘‘প্রাক্তনদের অনেককেই ক্রিকেটের ক্ল্যাসিক শট নিয়ে বলতে শুনি। কিন্তু ক্রিকেটটা যে বদলে গিয়েছে। এখন আমরা অন্য রকমের শট খেলি। যা অনুশীলন করি, তা-ই তো সারা বছর খেলব।’’
এ যুক্তি মানতে রাজি নন ওয়ার্ন। বরাবরই চাঁচাছোলা ভাষায় বলতে অভ্যস্ত কিংবদন্তি স্পিনার পরে একই বক্সে বসে বলেন, ‘‘আগের প্রজন্মের ক্রিকেটাররা নাকি এ যুগের খেলোয়াড় ও তাদের নতুন মানসিকতা বোঝে না! তেমনই শুনেছি। কিন্তু এ যুগের ক্রিকেটারদের কখনও নতুন কিছু আবিষ্কার করতে দেখেছি বলে মনে পড়ে না। আমি চাই না ওরা অযথা অজুহাত দেখাক বা ভুল সময়ে ভুল শট খেলুক।’’ ধারাভাষ্যকারদের বক্সে এই বিতর্কের আগুন জ্বলার আগে অবশ্য যশপ্রীত বুমরা থেকে ক্রুণাল পাণ্ড্য— ভারতের বোলাররা মেলবোর্নের বাইশ গজে আগুন জ্বালানোর চেষ্টা করেন। অস্ট্রেলিয়াকে এই সিরিজে হারানোর সুযোগ আর না থাকলেও রবিবার সিরিজ ড্র করার জন্য বোলারদের আত্মবিশ্বাস গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে ভারতের কাছে। আগের রাত পর্যন্ত বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ায় মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডের স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে দিনের দ্বিতীয় বলেই অ্যারন ফিঞ্চকে ফিরিয়ে যে ইঙ্গিত দেন ভুবনেশ্বর কুমার, তা ইনিংসের শেষ পর্যন্ত টের পান গ্লেন ম্যাক্সওয়েলরা।
শুরু থেকে বল যথেষ্ট নড়াচড়া করায় পুরো ইনিংসেই বেশ চাপে ছিলেন তাঁরা। ব্যতিক্রম প্রাক্তন তারকা পেসার ক্রেগ ম্যাকডারমটের ছেলে বেন। যিনি ৩০ বলে ৩২ রান করে লড়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু অন্যরা ব্যর্থ। ফলে একসময় ৬২-৫ হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। ফিঞ্চ ছাড়াও ভুবনেশ্বর এ দিন ফেরান নাথান কুল্টার-নাইলকে। বাঁ হাতি পেসার খলিল আহমেদ ওপেনার ডার্সি শর্টকে বোল্ড করার পাশাপাশি ক্রিস লিনকেও ফেরান।
বৃষ্টির আসা-যাওয়ার মধ্যে এ দিন বারবার ভারতের লক্ষ্য স্থির করা নিয়ে নাটক শুরু হয় মেলবোর্নে। প্রথমে ঠিক হয় ১৯ ওভারে ১৩৭। ফের বৃষ্টি নামায় তা দাঁড়ায় ১১ ওভারে ৯০। কিছুক্ষণ পরে আবার বৃষ্টি নামায় ঠিক হয় পাঁচ ওভারে ৪৬ তুলতে হবে রোহিত শর্মাদের।
ম্যাচের পরে খলিল জানান, ‘‘অস্ট্রেলিয়ায় বোলিং করা সম্পুর্ণ অন্য রকমের অভিজ্ঞতা। অনেক কিছু শিখছি এখানে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা ভাল বোলিং করেছি আজ। জেতার জায়গায় ছিলাম। কিন্তু বৃষ্টিতে খেলা না হওয়াটা খুব হতাশাজনক।’’
স্কোরকার্ড
অস্ট্রেলিয়া ১৩২-৭ (১৯)
ভারত
অস্ট্রেলিয়া রান বল
ডার্সি শর্ট বো খলিল ১৪ • ১৫
অ্যারন ফিঞ্চ ক ঋষভ বো ভুবনেশ্বর ২ • ৭
ক্রিস লিন ক ক্রুণাল বো খলিল ১৩ • ১৩
গ্লেন ম্যাক্সওয়েল বো ক্রুণাল ১৯• ২২
মার্কাস স্টয়নিস ক কার্তিক বো বুমরা ৪• ৫
বেন ম্যাকডারমট ন. আ. ৩২• ৩০
অ্যালেক্স ক্যারি ক ক্রুণাল বো কুলদীপ ৪• ৬
কুল্টার-নাইল ক (মণীশ) বো ভুবনেশ্বর ১৮• ৯
অ্যান্ড্রু টাই ন. আ. ১২• ১৩
অতিরিক্ত ১৬
মোট ১৩২-৭ (১৯)
পতন: ১-১ (ফিঞ্চ, ০.২), ২-২৭ (লিন, ৩.৫), ৩-৩৫ (শর্ট, ৫.৩), ৪-৪১ (স্টয়নিস, ৬.৩), ৫-৬২ (ম্যাক্সওয়েল, ১০.৬), ৬-৭৪ (ক্যারি, ১৩.১), ৭-১০১ (কুল্টার-নাইল, ১৫.৬)।
বোলিং: ভুবনেশ্বর কুমার ৩-০-২০-২, খলিল আহমেদ ৪-০-৩৯-২, যশপ্রীত বুমরা ৪-০-২০-১, কুলদীপ যাদব ৪-০-২৩-১, ক্রুণাল পাণ্ড্য ৪-০-২৬-১।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy