ছবি: এএফপি।
এ বারের যুক্তরাষ্ট্র ওপেন থেকেই যে মার্কিন মহিলা টেনিসের নতুন যুগের সূচনা হতে পারে, তার একটা স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া গেল ফ্লাশিং মিডোজে। মেয়েদের চার সেমিফাইনালিস্টই যেখানে মার্কিন, সেখানে এ ছাড়া আর কীই বা বলা যাবে?
মার্কিন মুলুকে যে নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে টেনিস খেলোয়াড় তৈরি করা হয় এবং তার জন্য যে বিপুল অর্থ সঠিক ভাবে ব্যয় করা হয়, তাতে এমন দিন দেখাটাই স্বাভাবিক। চারটে গ্র্যান্ড স্ল্যামের একটা এই দেশে হওয়ার ফলে এখানকার টেনিসে তেমন আর্থিক সমস্যাও নেই।
তবে যে চারজন মেয়ে এ বারের যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের শেষ চারে উঠেছে, তাদের মানসিক ও শারীরিক ক্ষমতা ও প্রত্যয়েপ প্রশংসা না করলে অন্যায় হবে। ৩৭-এর ভিনাস উইলিয়ামস যেখানে গত কয়েক বছর ধরেই শারীরিক সমস্যায় ভুগছে, সেখানে অন্য তিনজনই তাদের টেনিস জীবনে বড় বড় ধাক্কা সামলে ফিরে এসেছে। গত বছর স্লোয়ান স্টিফেন্সের পায়ে একটা বড় অস্ত্রোপচার হয়েছিল। যার জেরে ওকে দীর্ঘ সময় কোর্টের বাইরে কাটাতে হয়েছিল।
আরও পড়ুন
এ বছর উইম্বলডনে ফিরে আসে। কয়েক সপ্তাহ আগে কোনও এক অদৃশ্য জাদুকাঠির ছোঁয়ায় হঠাৎ যেন ফর্মে ফিরে আসে ও। ওয়াশিংটনে ডাবলস পার্টনার মনিকা নিকুলেস্কুর সঙ্গে একটা ম্যাচে স্টিফেন্স ও ইউজেনি বুশার্ড আমাদের বিপক্ষে ছিল। প্রথম সেটে জেতার পর দ্বিতীয় সেটেও একটা ব্রেক করে এগিয়ে যাই আমরা। তার পরেই এমন কতগুলো গ্রাউন্ড স্ট্রোক খেলল ও যাতে আমরা হিমশিম খেতে শুরু করলাম। ওর এই হঠাৎ ঘুরে দাঁড়ানোয় আমাদের মাথায় যেন বাজ পড়ল। শেষে সুপার টাই ব্রেকে আমরা অল্পের জন্য হেরে যাই। সে দিনই বুঝে নিয়েছিলাম মেয়েটা নিজের সেরা ফর্মে অপ্রতিরোধ্য। ওই দিনের পর থেকে আর ও পিছন ফিরে তাকায়নি। ক্রমশ নিজেকে শক্তিশালী করে তুলেছে, যার ফল এখন দেখতে পাচ্ছে টেনিস বিশ্ব।
ম্যাডিসন কিইজেরও বাঁ কব্জিতে দু-দু’টো অস্ত্রোপচার হয়েছে। ওর কোর্টে ফেরাও খুব বেশিদিন আগে হয়নি। নিজেকে চোটমুক্ত রাখতে পারলে মেয়েদের টেনিস শাসন করার ক্ষমতা আছে ওর। আর এক সেমিফাইনালিস্ট কোকো ভ্যান্ডেওয়েগে উইম্বলডনের আগে বার্মিংহামে ঘাসের কোর্টে আমার পার্টনার ছিল। গোড়ালিতে চোট পেয়ে ও ম্যাচের মাঝেই কোর্ট ছেড়ে চলে যায়। তবে ভাগ্য ভাল যে ওর চোটটা তত গুরুতর ছিল না।
তবে যে ম্যাচটা নিয়ে এ বারের যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের আসর ক্রমশ সরগরম হয়ে উঠছিল, সেই ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত না হওয়ায় অনেকেই দেখছি ভেঙে পড়েছে। বিশেষ করে রজার ফেডেরারের ভক্তরা। রাফায়েল নাদাল আর ফেডেরারের লড়াই দেখার জন্য যখন তৈরি হচ্ছিল ফ্লাশিং মিডোজ, তখন মার্টিন দেল পোত্রোর অপ্রত্যাশিত জয়টাই যেন বজ্রপাত ঘটাল। তবে দেল পোত্রোও মনে হয় নাদালকে কড়া চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেবে। কারণ, ও নিজেও প্রচণ্ড লড়াই করে উঠে আসা একজন খেলোয়াড়। এমন খেলোয়াড়েরা কাউকে ছেড়ে কথা বলে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy