ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো। ছবি: এএফপি।
যখন আরও একবার ব্যালন ডি’অরের জন্য ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর নাম বিবেচনা করা হচ্ছে, ঠিক তখনই পর্তুগিজ ফুটবল তারকার ব্যক্তিগত জীবনে সংকট তীব্রতর হতে শুরু হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে ইতিমধ্যেই চাঞ্চল্য ফেলে দিয়েছেন ৩৭ বছরের মার্কিন মহিলা ক্যাথরিন মায়োরগা। এ বার এই মহিলার আইনজীবী লেসলি স্তোভাল দাবি করেছেন, আরও তিন নারী নাকি রোনাল্ডোর বিরুদ্ধে প্রায় একই রকম অভিযোগ জানিয়ে তাঁকে ফোন করেছেন। ওই আইনজীবী আপাতত নতুন সব অভিযোগের সত্যতা যাচাই করার চেষ্টা করছেন।
নতুন তিন অভিযোগকারিণীর একজন দাবি করেছেন, তাঁকেও রোনাল্ডো এক পার্টির পর মায়োরগার মতোই হোটেলে ধর্ষণ করেন। আর এক অভিযোগকারিণীর দাবি, রোনাল্ডোর অস্বাভাবিক ব্যবহারে তিনিও আঘাত পান। তৃতীয় জন দাবি করেছেন, মায়োরোগার ক্ষেত্রে যেমন হয়েছিল, তাঁর সঙ্গেও জুভেন্তাস তারকা প্রচুর অর্থের বিনিময়ে সত্য গোপন করার প্রতিশ্রুতি আদায় করেন। সেটাও ঘটে নাকি ২০০৯ সালে।
মায়োরগা আইনজীবী স্তোভাল বলেছেন, ‘‘আপাতত এই ধরনের তথ্যের সত্যতা যাচাই করার চেষ্টা করছি। সেটা করতে পারলে আমার মক্কেলের দাবি আরও জোরদার হবে।’’ এমনিতে মায়োরগাই প্রথম রোনাল্ডোর বিরুদ্ধে লাস ভেগাস পুলিশের কাছে গিয়েছেন। যে কারণে তদন্তও শুরু হয়েছে নতুন করে। ২০০৯ সালে লাস ভেগাসের এক পার্টিতে তাঁর সঙ্গে পাঁচ বার ব্যালন ডি’অর জয়ী ফুটবলারের আলাপ হয়। রোনাল্ডো সে বারই ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেন। মাঝখানে ছুটির সময়টা লাস ভেগাসে কাটাচ্ছিলেন। মায়োরগার বয়স তখন আঠেরো। কাজ করতেন এক নাইটক্লাবে। তাঁর অভিযোগ অনুয়ায়ী, আলাপের পরে রোনাল্ডো তাঁকে হোটেলের ঘরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন। সে সময় তিনি পুলিশের কাছেও গিয়েছিলেন। কিন্তু লাস ভেগাসের পুলিশ দফতর অভিযোগের অস্পষ্টতার জন্য তদন্তে বিশেষ এগোয়নি। এক জার্মান পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মায়োরগা দাবি করেছেন, পরের বছরই প্রচুর টাকার বিনিময়ে রোনাল্ডো তাঁর মুখ বন্ধ করেন। পরবর্তী জীবনে মায়োরগা স্কুলে পড়ানোর চাকরি নেন। এবং সম্প্রতি যৌন হেনস্থা বিরোধী আন্দোলনে প্রভাবিত হয়ে নতুন করে লাস ভেগাস পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। এ বার কিন্তু তিনি সরাসরি রোনাল্ডো এবং ঘটনার সাক্ষীদের নামও করেছেন। প্রথমেই কেন রোনাল্ডোর নাম করলেন না জানতে চাওয়া হলে ওই মহিলা জবাব দিয়েছিলেন, তিনি তাঁর পরিবারের নিরাপত্তার কথা ভেবে সেটা করেন। তাঁর এও মনে হয়েছিল, রোনাল্ডোর মতো তারকার সঙ্গে পেরেও উঠবেন না। কিন্তু সম্প্রতি যৌন হেনস্থা বিরোধী আন্দোলনে প্রভাবিত হয়ে নতুন করে লড়াই করার মানসিক শক্তি
অর্জন করেছেন।
রোনাল্ডো অবশ্য যাবতীয় অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। সঙ্গে তাঁর প্রতিনিধিরা, মায়োরগার খবর প্রথম যারা করে সেই জার্মান পত্রিকার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করবে বলে জানিয়েছেন। মায়োরগার আইনজীবী কিন্তু নতুন তিন অভিযোগকারিণীর পরিচয় গোপন করেছেন। ইংল্যান্ডের এক ট্যাবলয়েডের দাবি, এই তিন জনের একজন ‘বেলি ডান্সার’ করিমা আল মাহরুগও হতে পারেন। যিনি বলেছেন, মাত্র সতেরো বছর বয়সে তিনি রোনাল্ডোর শয্যাসঙ্গিনী হয়েছিলেন। এই ঘটনা নাকি মিলানে ঘটেছিল। ইতালিতে আঠেরো বছরের কম বয়সির সঙ্গে সহবাস আইনত অপরাধ। এ দিকে, এত সব ঘটনার পরেও জুভেন্তাস কিন্তু এই বিখ্যাত ফুটবলারের পাশেই থাকছে।
এ দিকে, উয়েফা এবং ফিফার বর্ষসেরার পুরস্কার হাতছাড়া হওয়ার পরে ব্যালন ডি’অরের ৩০ জনের মনোনয়নের তালিকাতে আছেন রোনাল্ডো। পাঁচ বারের ব্যালন ডি’অর জয়ী তিনি। রোনাল্ডো ছাড়া লুকা মদ্রিচ, রিয়াল মাদ্রিদের গ্যারেথ বেল, ম্যাঞ্চেস্টার সিটির কেভিন দে ব্রুইনও আছেন তালিকায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy