জোয়াকিম লো এবং রোল্যান্ট অল্টমান্সের মধ্যে মিল কোথায়? মঙ্গলবারের পরে কোনও স্পোর্টস কুইজে এটা একটা প্রশ্ন বোধহয় হতেই পারে! বিশ্ব ফুটবলে কোনও দেশের জাতীয় কোচের মেয়াদ ২০২০ পর্যন্ত যদি সর্বপ্রথম লো-র বেড়ে থাকে, তা হলে বিশ্ব হকিতে সেই নজির গড়লেন অল্টমান্স। এ ব্যাপারে জার্মান ফুটবল কোচ আর ভারতের হকি কোচের মধ্যে অদ্ভুত মিল! মাত্র চব্বিশ ঘণ্টার ব্যবধানে।
জার্মান ফুটবল ফেডারেশন যেমন চেয়েছে, ২০১৮ বিশ্বকাপের পরে ২০১২ ইউরো কাপেও জাতীয় দলের দায়িত্ব লো-র হাতে থাকা শ্রেয়, তেমনই বোধহয় ভারতীয় হকি সংস্থা মনে করছে, ২০১৮ বিশ্বকাপের পরে ২০২০ অলিম্পিক্সেও অল্টমান্স যোগ্য জাতীয় দলকে কোচিংয়ের ব্যাপারে। সূত্রের খবর, এক-দু’দিনের মধ্যেই হকি ইন্ডিয়া নতুন চুক্তি সেরে ফেলবে ডাচ কোচের সঙ্গে। যাঁর প্রশিক্ষণে আজলান শাহ কাপে ফাইনাল খেলা ছাড়াও দু’দিন আগে এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতেছে সর্দার-সৃজেশের ভারত।
সাই মুখপাত্র স্বীকার করেছেন, হকি ইন্ডিয়া থেকে অল্টমান্সের চুক্তি ২০২০ টোকিও অলিম্পিক্স পর্যন্ত বৃদ্ধির অনুরোধ তাঁরা পেয়েছেন। তাঁদেরও এ ব্যাপারে আপত্তি নেই। কেন্দ্রীয় ক্রীড়া দফতরে হকি ইন্ডিয়ার অনুরোধের চিঠি সাই পাঠিয়ে দিচ্ছে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য। আশা করা হচ্ছে, অল্টমান্সের সঙ্গে নতুন চুক্তি এক-দু’দিনে হয়ে যাবে। অল্টমান্সও এ দিন জানান, তাঁর কাছেও এই খবর আছে। ‘‘শুনেছি আমার চুক্তির মেয়াদ আরও চার বছর বাড়ছে। তবে নতুন চুক্তিতে শুনছি সামান্য অদলবদল থাকবে। সেগুলো কী, জানি না।’’
কোচের জন্য সুখবরের দিনে ভারতীয় হকি দলের অধিনায়ক পারাত্তু রবিন্দ্রন সৃজেশ আজ এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি উৎসর্গ করলেন উরির শহিদদের উদ্দেশ্যে। খেতাবটা ফাইনালে পাকিস্তানকে হারিয়ে জেতা বলে ভারত অধিনায়কের এই সিদ্ধান্ত আরও বেশি তাৎপর্যের বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
নিজের শহর বেঙ্গালুরুতে এ দিন ফিরে সৃজেশ বলেছেন, ‘‘এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জেতাটা ভারতীয় হকি দলের দিওয়ালির উপহার ভারতীয় সেনাদের জন্য। আমাদের দেশের হাজার হাজার মাইল সীমান্ত যে সব সেনা দিন-রাত পাহারা দিয়ে আমাদের নিরাপদ রেখেছেন, তাঁদের নিশ্চয়ই এই পদকটা অন্য যে কোনও পদকের চেয়ে বেশি আনন্দ দিয়েছে।’’ ফাইনালে ভারতের ম্যাচ জেতানো গোলদাতা নিক্কিন থিমাইয়াকে পাশে নিয়ে বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে সৃজেশ আরও বলেন, ‘‘এই ট্রফি উরির মর্মান্তিক ঘটনায় মৃত আমাদের প্রিয় সেনাদের এবং সেই শহিদদের পরিবারকেও আমার দলের তরফ থেকে দিওয়ালির উপহার।’’
দুই প্রতিবেশী দেশের সাম্প্রতিক অত্যন্ত খারাপ রাজনৈতিক সম্পর্ক চলাকালীন পাকিস্তানকে টুর্নামেন্টে দু’-দু’বার হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেতাব ভারতীয় হকি দলকে কতটা বেশি আবেগপ্রবণ করে তুলেছিল? তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে অধিনায়ক সৃজেশ বলে দেন, ‘‘আমরা মনে মনে যতই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ি না কেন, সেটা বাইরে বার হতে দিইনি। আমাদের শরীরী ভাষায় তার কোনও রকম প্রকাশ ঘটতে দিইনি। ভাল পারফরম্যান্স করার উপরে আবেগকে উঠতে দিইনি সে দিন। তাই এই অসাধারণ জয় পেয়েছি। যেমন আমাদের সেনারা ল়ড়াইয়ের ময়দানে করে থাকেন, যে রকম মনোভাব দেখান তাঁরা, অনেকটা সেই চেষ্টা করেছি আমরা হকি-যুদ্ধের ময়দানে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy