সুব্রতকে (ডানদিকে) টেনে ফের বিতর্ক উস্কে দিলেন রঘু।
টালিগঞ্জ অগ্রগামীর সাফল্যের কোনও কৃতিত্বই সুব্রত ভট্টাচার্যকে দিতে রাজি নন টিমের প্রাক্তন কোচ রঘুু নন্দী। বরং তাঁর দাবি, “ফুটবালরদের লড়াই করার মানসিতকার জন্যই টালিগঞ্জ সাফল্য পাচ্ছে। এতে সুব্রত ভট্টাচার্যের কোনও কৃতিত্ব নেই। নিজের হাতে গাছ লাগিয়েছিলাম। ফুলও ফুটিয়েছিলাম। সুব্রতর কাজ এখন শুধু জল দেওয়া।”
গত বছর থেকে রঘু নন্দীর কোচিংয়েই টানা ৩৫টি ম্যাচ অপরাজিত ছিল টালিগঞ্জ। একটু একটু করে টালিগঞ্জ অগ্রগামীকে নিজের হাতে গড়েছিলেন তিনি। দল সফল হওয়ার পরও, তাঁর মাথার উপর বসিয়ে দেওয়া হয়েছিল সুব্রত ভট্টাচার্যকে। অপমানিত হয়েই তিনি টালিগঞ্জ ছাড়েন। “আমাকে কিছু না জানিয়েই সুব্রত ভট্টাচার্যকে টিডি করে নিয়ে আসা হল। এমনকী ফুটবলারদের নিয়ে নতুন টিডি অনুশীলনও শুরু করে দিল। অথচ দলের কোচ হয়ে আমি কিছুই জানতাম না। এটা তো এক প্রকার অপমান করাই হল।” জমে থাকা ক্ষোভ উগরে দিচ্ছিলেন রঘু। শনিবার সন্ধেতে যখন তাঁকে ফোনে ধরা হল, কখনও তিনি উত্তেজিত হয়ে পড়লেন। কখনও বা তীব্র অভিমানে বলে ফেললেন, “রাতের পর রাত জেগে এই টিমটা নিজের হাতে তৈরি করেছিলাম। এই টিমের কোনও প্লেয়ার যদি অস্বীকার করে রঘু নন্দী তাকে নিয়ে আসেনি, অন্য কেউ এনেছিল, তবে আমি কোচিং করানো ছেড়ে দেব। এ সব কথা কর্তারা অবশ্য মনেও রাখলেন না।”
রঘু নন্দী এই মুহূর্তে সাদার্ন সমিতিকে কোচিং করাচ্ছেন। কিন্তু এখনও মন পড়ে রয়েছে টালিগঞ্জে। নিজের হাতের তৈরি করা টিমের সাফল্য নিয়ে সুব্রতর মাতামাতি কিছুতেই মানতে পারছেন না রঘু। এ দিন পরিষ্কার বলে দিলেন, “আমার তৈরি করা ঘোড়া ছুটিয়ে সুব্রত এখন শুধু ক্ষীরটুকু খাচ্ছে।”
এরিয়ান থেকে টালিগঞ্জ--- ছোট ক্লাবের কোচ হিসেবে রঘু নন্দীর সাফল্যের ট্র্যাক রেকর্ডটা বেশ ভাল। বিপক্ষে রঘু নন্দীর দল থাকলে বড় দলের কোচেরাও সতর্ক হয়ে যান। সেই রঘু নন্দী টালিগঞ্জের অন্যতম প্রধান কর্তা এবং রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে কার্যত চ্যালেঞ্জই ছুড়ে দিলেন। “অরূপ মন্ত্রী হতে পারে। কিন্তু আমি তো ফুটবল কোচ। পরের বার সবাই দেখবে, রঘু নন্দী কী করতে পারে!”
দলের কর্মকর্তা এবং সুব্রত ভট্টাচার্যের উপর রঘু নন্দী যতই রেগে থাকুন, মনে মনে চাইছেন, কলকাতা লিগ চ্যাম্পিয়ন হোক টালিগঞ্জ অগ্রগামীই। ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে বাংলার ফুটবল ইতিহাসে নতুন যুগ আনুক তাঁর হাতে তৈরি করা টিম। “নিজের হাতে দলটা তৈরি করেছি। সে জন্যই মনেপ্রাণে চাই, টালিগঞ্জই এ বার কলকাতা লিগ চ্যাম্পিয়ন হোক। ক্লাব ছেড়ে আসার সময় ফুটবলাররাও আমাকে কথা দিয়েছিল, ওরাই চ্যাম্পিয়ন হবে,” কথাগুলো বলার সময় গলাটা যেন ধরে এল রঘুর। খানিকক্ষণ চুপ থাকার পর বললেন, “টালিগঞ্জের ফুটবলারদের জন্য শুভেচ্ছা রইল।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy