গোল করেও শেষ রক্ষা করতে পারলেন না ডিকা। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
নতুন কোচের হাত ধরে লিগে ফিরেছিল মোহনবাগান। কিন্তু ধরে রাখতে পারল না। ঘরের মাঠে হেরে অনেকটাই পিছিয়ে পড়ল শঙ্করলালের বাগান। সোমবার গোকুলাম কেরলের বিরুদ্ধে যে ফুটবলটা মোহনবাগান খেলল, তা এক কথায় দেখা যায় না।
আই লিগ টেবিলের শেষে থাকা গোকুলাম কেরল এফসি-এর বিরুদ্ধে ২-১ গোলে হেরে গেল সবুজ-মেরুন ব্রিগেড!
গত ম্যাচ ড্রয়ের ফলে লিগের দৌড়ে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছিল মোহনবাগান। ফলে যেটুকু আশা ছিল, সেই আশা টিকিয়ে রাখতে হলে এই ম্যাচ জিততেই হত মোহনবাগানকে। কিন্তু, মাস্ট উইন গেমে মোহন ফুটবলাররা এ কেমন খেললেন!
গগনে-গগনে ফুটবল এবং পরিকল্পনার অভাব স্পষ্ট ডিপান্ডা ডিকা-আক্রম মোগরাভিদের খেলায়। শুধু পরিকল্পনাই নয়, কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তীর স্ট্রাটেজি নিয়েও এ দিন রয়ে গেল বেশ কিছু প্রশ্ন। নিখিল কদম কিছুটা ভাল খেললেও প্রথমার্ধে খুঁজেই পাওয়া গেল না রেনিয়ার ফার্নান্ডেজকে। অফ কালার ছিলেন ক্যামেরুন ওয়াটসনও। মাঝমাঠ জমাট না হওয়ায় চেষ্টা চালিয়েও বিশেষ কিছু করতে পারননি ডিপান্ডা ডিকা-শেখ ফৈয়াজরা। গোলশূন্য ভাবেই শেষ হয় প্রথমার্ধ।
আরও পড়ুন: পঞ্চম ওয়ানডে-র আগে দল নিয়ে ভাবনায় টিম ম্যানেজমেন্ট
আরও পড়ুন: চাহালের নো-বলের সমালোচনায় গাওস্কর
তবে, প্রথমার্ধের ম্যাড়মেড়ে ম্যাচটাই দ্বিতীয়ার্ধে হয়ে ওঠে চরম উত্তেজক। বিরতিতে কর্তাদের স্পেশ্যাল ক্লাসে তত ক্ষণে এই ম্যাচে জয় কতটা প্রয়োজন, তা ভালই বুঝে গিয়েছিলেন শিল্টনরা। হয়তো নির্দেশ ছিল কোচের কাছেও। টিম ম্যানেজমেন্টের ভোকাল টনিকেই দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে চেনা ছন্দে দেখা যায় মোহনবাগানকে। দ্বিতীয়ার্ধে নেওয়া দু’টি পরিবর্তনই মূলত বদলে দেয় গোটা দলকে। রেনিয়ারের পরিবর্তে সুরচন্দ্র সিংহের মাঠে নামা এবং আক্রম মোগরাভির পরিবর্তে নেপালি ফুটবলার বিমল ঘারতি মাগারের অন্তর্ভুক্তিই মোহনবাগানের খোলনলচে পরিবর্তন এনে দেয়।
তবে, বিমল নামার আগেই গোল পেয়ে যেতে পারত মোহনবাগান। ম্যাচের ৫১ মিনিটে এবং ৬৩ মিনিটে যে দু’টি সহজ সুযোগ মিস করেন আক্রম, তা ক্ষমার অযোগ্য। গোল রক্ষককে একা পেয়েও বল জালে জড়াতে ভুল করেন লেবাননের স্টাইকার। এর পর আর আক্রমকে মাঠে রাখার ‘সাহস’ দেখাননি শঙ্করলাল।
স্ট্রাইকাররা বার বার ভুল করলেও হাল ছাড়েননি নিখিল-সুরচন্দ্র সিংহরা। গোল তুলে আনার লক্ষ্যে একের পর এক আক্রমণ তুলে আনতে থাকেন তাঁরা। তবে, বিপক্ষের বক্সে বোঝাপড়ার অভাবে শেষ পর্যন্ত আটকে যেতে হচ্ছিল মোহনবাগানকে।
এই ভাবেই বারবার গোকুলাম এফসির ডিফেন্ডারদের সামনে আটকে যেতে হয় ডিকা-আক্রমদের। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
মোহনবাগান যখন গোল তুলে আনার জন্য মুহুর্মুহু আক্রমণ চালাচ্ছে, তখন পিছিয়ে ছিল না গোকুলামও। কাউন্টার অ্যাটাকে বার বার তুলে আনছিল আক্রমণ। আর এরই ফল স্বরূপ ম্যাচের ৭৬ মিনিটে হেনরির বাড়ানো বল থেকে গোল করে গোকুলমকে এগিয়ে দেন বাহারাইনের মিডিও আহমেদ আলাজমি। তবে গোল হজম করতে হলেও দু’মিনিটের মধ্যে সেই গোল ফিরিয়ে দেন বাগানের ডিপান্ডা ডিকা। বিমলের হেডকে সঠিক জায়গায় জালে পাঠে ভুল করেননি রজার মিল্লার দেশের এই স্ট্রাইকার।
সকলে যখন ধরেই নিয়েছেন ম্যাচ ড্র হতে চলেছে, তখন মোহনবাগানের কফিনে শেষ পেরেকটি পুঁতে দেন উগান্ডার স্ট্রাইকার হেনরি কিসেকা। হাফ ভলিতে করা হেনরির এই গোল দীর্ঘ দিন মনে রাখবেন কলকাতার ফুটবলপ্রেমীরা।
তবে, ম্যাচে নাটক তখনও বাকি ছিল। গোল ফিরিয়েই দিতে পারত মোহনবাগান। হয়তো এ দিন শঙ্করলালের দলের উপর রুষ্ট ছিলেন ফুটবলের দেবতা। ৯৫ মিনিটে নেওয়া ডিকার শট ফিরে আসে ক্রসবারে লেগে।
এই ম্যাচে হারের ফলে লিগ জয়ের আশা কার্যত শেষ হয়ে গেল মোহনবাগানের। ১৪ ম্যাচ থেকে ২১ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানেই থাকতে হল বাগানকে। লিগ শীর্ষে থাকা মিনার্ভা পঞ্জাবের পয়েন্ট ১৩ ম্যাচে ২৯।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy