প্রস্তুতি: মোহনবাগান অনুশীলনে ডার্বির নায়ক পিন্টু।—নিজস্ব চিত্র।
ফুটবল-পাঠ নয়, দিপান্দা ডিকাদের মঙ্গলবার সকালে অঙ্কের ক্লাস নিলেন মোহনবাগান কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তী!
ড্রেসিংরুমের ভিতর একটা বোর্ডে পাশাপাশি ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগানের পয়েন্ট, গোল পার্থক্য লিখে একের পর এক প্রশ্ন করতে শুরু করলেন হেনরি কিসেক্কা, শিল্টন ডি’সিলভা, পিন্টু মাহাতোদের। প্রশ্ন এইরকম ছিল: আমরা কত গোল করেছি? ওরা কত গোল করেছে? আমরা ক’টা গোল খেয়েছি? ওরা ক’টা খেয়েছে? তা হলে যোগ-বিয়োগ করলে কত দাঁড়ায়?
ফুটবলারদের কাছ থেকে উত্তর পেয়ে শেষ পর্যন্ত সবুজ-মেরুন কোচ বোঝালেন আই এফ এ-র নিয়ম কানুন। তার পর টেনে আনলেন গত বারের গোল পার্থক্যে লিগ খেতাব হাতছাড়া হওয়ার কথাও। ‘‘বোঝাতে তো হবেই। কারণ, এখন বাকি তিনটি ম্যাচই নক আউট। জিততেই হবে। এবং ধরে নিতেই হবে দু’দল সব ম্যাচ জিতবে। সে ক্ষেত্রে গোল পার্থক্য এবং বেশি গোল করার দিকে নজর দিতে হবেই। সেটাই বুঝিয়েছি ফুটবলারদের।’’ হাল্কা অনুশীলনের পর বলে দিলেন শঙ্করলাল।
দু’গোলে এগিয়ে যাওয়ার পরেও ডার্বি ড্র হয়ে যাওয়ায় আফসোস রয়েছে মোহনবাগান কোচের। কিন্তু সেটা তিনি দলের অন্দরে ঢুকতে দিতে নারাজ। বলছিলেন, ‘‘আমরা তো খেতাব থেকে ছিটকে যাইনি। সেটাও বুঝিয়েছি সবাইকে।’’ আট বছর পরে দল কলকাতা প্রিমিয়ার লিগ খেতাবের সামনে। কিন্তু এ দিন সকালের অনুশীলনে কোনও শীর্ষ কর্তাকেই দেখা যায়নি। রবিবার বড় ম্যাচের পর ড্রেসিংরুমে পিন্টু মাহাতো, অরিজিৎ বাগুইদের সান্ত্বনা দেওয়ার মতোও কেউ ছিলেন না। খেলার পর কর্তারা যে যাঁর মতো বাড়ি চলে যান ফুটবলারদের ফেলে রেখে। অগস্ট মাসের মাইনেও বাকি। এ সব নিয়েও ফের ক্ষোভ বাড়ছে দলের অন্দরে। বিব্রত মোহনবাগান কোচ মাইনে নিয়ে ফোনে কথা বলেছেন ফুটবল সচিবের সঙ্গে। পাশাপাশি অনুরোধ করেছেন, ইউতা কিনওয়াকিকে দ্রুত শহরে নিয়ে আসার। শঙ্করলাল বললেন, ‘‘সেপ্টেম্বরের ১ তারিখ থেকে ক্লাবের চুক্তি রয়েছে ইউতার সঙ্গে। ওকে পেলে মহমেডান ম্যাচে খেলিয়ে দিতাম।’’ জাপানি মিডিয়ো কবে আসবেন, তা বলতে পারেননি মোহনবাগান সচিব অঞ্জন মিত্র। বলে দিলেন, ‘‘ও তো আই লিগে খেলবে। দেখছি কী করা যায়।’’ মজার ব্যাপার হল, আজ বিকেলে এফ সি আইয়ের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে ক্লাব তাঁবুতেই কর্মসমিতির সভা ডাকা হয়েছে। যা নজিরবিহীন। শোনা যাচ্ছে, নতুন স্পনসরের নাম ঘোষণা করা হতে পারে সভার পর। সচিবের যুক্তি, ‘‘জরুরি ব্যাপার বলে ম্যাচ আছে জেনেও সভা ডাকতে বাধ্য হয়েছি।’’
মোহনবাগানের প্রতিপক্ষ এফ সি আইয়ের অবনমন প্রায় নিশ্চিত। দলে কোনও বিদেশি নেই। গড়াপেটা বিতর্কে জড়িয়ে মাঠে আসছেন না দীপক মণ্ডল। কোচ বিকাশ পাঁজি বলছিলেন, ‘‘দুই প্রধানের সঙ্গে খেলা বাকি। গোল সংখ্যা বাড়ানোর জন্য দু’দলই আমাদের টার্গেট করবে। দেখি কতক্ষণ আটকে রাখতে পারি।’’ দশ জনে মিলে প্রতিপক্ষ রক্ষণ সামলাবে জানেন শঙ্করলাল। তিনি ফুটবলারদের বলেছেন, ‘‘শুরুতেই গোল করতে হবে। যত বেশি সম্ভব গোল করতে হবে।’’ ডার্বির দলে একটাই পরিবর্তন হচ্ছে। শিল্টন পালের জায়গায় গোলকিপার হিসেবে নামবেন শঙ্কর রায়।
বুধবার কলকাতা প্রিমিয়ার লিগ—মোহনবাগান বনাম এফ সি আই (মোহনবাগান ৪-৩০)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy