মোহনবাগান নির্বাচনের ঢাকে কাঠি পড়তেই নিজেদের প্যানেল তৈরির কাজ শুরু করে দিল শাসক ও বিরোধীরা। মে মাসে নির্বাচন। সে জন্যই নিজের মতো করে ঘুঁটি সাজাচ্ছে দু’পক্ষই। প্যানেল যাই হোক, এটা নিশ্চিত দু’পক্ষই এ বার প্রাক্তন ক্রীড়াবিদদের মাঠে নামাচ্ছেন।
তাদের প্যানলে বড় রকমের চমক দিতে চলেছে শাসক গোষ্ঠী। ঘরের ছেলে প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়-সুব্রত ভট্টাচার্যদের ভোটে নেমে পড়ার পাল্টা হিসাবে সাংগঠনিক কাজে পারদর্শী ক্লাবে খেলে যাওয়া ক্রীড়াবিদদের বিভিন্ন পদে নিয়ে আসতে চাইছেন টুটু-অঞ্জনরা। দিতে চাইছেন সম্মান। কাদের নেওয়া হবে প্যানেলে তা অবশ্য ঠিক হয়নি। তবে ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত কয়েক জন ফুটবলার, ক্রিকেটার এবং অ্যাথলিটের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছেন শাসকরা। শান্তিনিকেতন থেকে ফোনে বাগান সচিব অঞ্জন মিত্র বললেন, ‘‘মোহনবাগান দিবসে আমরাই প্রথম ময়দানের ক্লাব যারা ফুটবলারদের রত্ন দিয়ে সম্মান দিয়েছি। প্রতি বছর প্রীতি ম্যাচে অংশ নেন বহু প্রাক্তন ফুটবলার। ফুটবল টিমের ম্যানেজার করেছি প্রাক্তনদের। কর্মসমিতির জন্য আসন্ন নির্বাচনেও বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়কে আমরা প্যানেলে রাখব বলে ঠিক করেছি।’’
বাগান সচিব খোলসা করে না বললেও ক্লাব সূত্রের খবর, এ বার ফুটবল সচিব পদে কোনও প্রাক্তন ফুটবলার এবং ক্রিকেট সচিব পদে কোনও প্রাক্তন ক্রিকেটারকে শাসকরা প্যানেলে রাখতে চাইছেন। সেটা হলে বহু দিন পর ময়দানে আবার শাসক হিসাবে দেখা যাবে ক্রীড়াবিদদের। ইস্টবেঙ্গল বা মহমেডানে যা কখনও হয়নি। বাগানে এর আগে শাসক হিসাবে দেখা গিয়েছে উমাপতি কুমার, শৈলেন মান্না, চুনী গোস্বামীদের। এ বার কি তা হলে বাগানের ঘরের ছেলে চুনীকে দেখা যাবে? সেই সম্ভাবনা নেই। কারণ, ভোটার তালিকায় চুনীর নামই নেই। জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন সদস্য হিসাবে চাঁদা না দেওয়ায় কিংবদন্তি এই ফুটবলারের নাম বাদ চলে গিয়েছে নিয়মের গেরোতেই। অন্যদের ক্ষেত্রে যা হয় তাই হয়েছে চুনীর ক্ষেত্রে। তবে শাসকরা ঠিক করেছে, নির্বাচনে জিতে এলে নতুন করে সদস্য করিয়ে চুনীকে একটি পদ দেওয়া হবে। টুটু বসু যেহেতু সভাপতি হবেন সেই জন্য চুনীকে ভাইস প্রেসিডেন্ট করা নিয়ে আলোচনা চলছে। বাগান সচিব তিন দিনের জন্য শান্তিনিকেতন গিয়েছেন। সেখান থেকে ফিরলেই কাদের প্যানেলে রাখা হবে তা নিয়ে আলোচনায় বসবেন শীর্ষকর্তারা। জানা গিয়েছে, সচিব পদে অঞ্জন মিত্র, সহ সচিব হিসাবে সৃঞ্জয় বসু, অর্থসচিব হিসাবে দেবাশিস দত্তই দাঁড়াতে চলেছেন মে-র নির্বাচনে।
বসে নেই বিরোধী গোষ্ঠীও। তাঁরাও নির্বাচনের জন্য দ্বিমুখী পথ অবলম্বন করছে। এক দিকে তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছে স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য। পাশাপাশি প্যানেলেই চমক দিতে চাইছে তাঁরাও। ফুটবল সচিব হিসাবে সুব্রত বা প্রসূন দাঁড়াতে পারেন। সচিব পদে দাঁড়াতে পারেন বলরাম চৌধুরী। বলরাম এ দিন বললেন, ‘‘আমরা এমন প্যানেল তৈরি করছি যা দেখে শাসকরা অবাক হয়ে যাবে। প্রচুর চমক থাকবে।’’ আর বিরোধী গোষ্ঠীর অন্যতম প্রধান মুখ সুব্রত ভট্টাচার্য বললেন, ‘‘আমরা আদালতে যাচ্ছি ভুয়ো ভোটার আটকাতে। স্বচ্ছ ভাবে নির্বাচন হলে শাসকরা কিন্তু বিপদে পড়বে।’’
দু’পক্ষই নির্বাচন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে দরবার করেছিল। শাসকদের পক্ষে সহ সচিব সৃঞ্জয় বসু, বিরোধীদের হয়ে সুব্রত নিজেই গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। হঠাত্ই বাজারে গুঞ্জন ছড়িয়েছিল মমতার নির্দেশেই নাকি মিলিজুলি প্যানেল হবে। কিন্তু সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন বাগান সচিব অঞ্জন। বলেন, ‘‘এ রকম কোনও নির্দেশের কথা আমার জানা নেই।’’ আর সুব্রতর মন্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন কলকাতা পুরসভা নির্বাচনের পর তিনি যা করার করবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy