Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪

‘বার্সেলোনায় যে সাপোর্ট পান মেসি, আর্জেন্তিনায় সেটা কোথায়?’

মেসি যে সিদ্ধান্তটা নিলেন সেটা অত্যন্ত দুঃখজনক। বিশ্ব ফুটবলের জন্যই দুঃখের। অসাধারণ একজন খেলোয়াড়। এ রকম খেলোয়াড় রোজ রোজ জন্মায় না। তৈরিও হয় না। সেই খেলোয়াড় কষ্ট পেয়ে এমন একটা সিদ্ধান্ত নিলেন কেন? কারণ উনি অপরাধবোধে ভুগছেন।

প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৬ ২১:০৩
Share: Save:

মেসি যে সিদ্ধান্তটা নিলেন সেটা অত্যন্ত দুঃখজনক। বিশ্ব ফুটবলের জন্যই দুঃখের। অসাধারণ একজন খেলোয়াড়। এ রকম খেলোয়াড় রোজ রোজ জন্মায় না। তৈরিও হয় না। সেই খেলোয়াড় কষ্ট পেয়ে এমন একটা সিদ্ধান্ত নিলেন কেন? কারণ উনি অপরাধবোধে ভুগছেন। দেশকে কিছু দিতে না পারার কষ্টটা বুকে নিয়ে তাই সরে যেতে চাইছেন। কতটা কষ্ট পেয়ে এটা করেছেন মেসি, সেটা কেউ বুঝতে পারছে না!

পৃথিবীর সকলেই পেনাল্টি মিস করে। ওঁর সমালোচনা যাঁরা করছেন সেই পেলে, মারাদোনারাও মিস করেছেন। জিকো থেকে শুরু করে কাউকে বাদ দেওয়া যায় না। পৃথিবী বিখ্যাত খেলোয়াড়ই কোনও না কোনও সময় পেনাল্টি মিস করেছেন। যাঁরা পেনাল্টি মারে তাঁরাই মিস করেন। এই তো রোনাল্ডোই কত মিস করছেন। আজকে মেসি এত কষ্ট পেয়েছে যে, কিছু প্রকাশই করতে পারছে না। যে কারণে খেলা ছেড়ে দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন। কিন্তু আমার মনে হয়, ওঁর এখনও অনেক কিছু দেওয়ার আছে দেশকে, বিশ্ব ফুটবলকে।

আরও খবর- যখন দেশের হয়ে ব্যর্থ মেসি...

২০১৪-র বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠে হার, ২০১৫ এবং ২০১৬-য় কোপার ফাইনালে উঠে হার ওর আত্মায় আঘাত দিয়েছে। কে বলেছে মেসি শুধু ক্লাবের হয়ে খেলেন, দেশের হয়ে খেলেন না। এই ফাইনালগুলোতে তো দেশকে তুলেছেন মেসিই। আর চিলি খুব শক্ত প্রতিপক্ষ। আমি তো পুরো খেলাটা দেখলাম। ওরা কোনও সুযোগ দেয় না। ওদের খেলায় দৌড় বলতে কিছু নেই। সারা ক্ষণ শুধু ট্যাকেল, ট্যাকেল আর ট্যাকেল। আর্জেন্তিনাকে স্বাভাবিক খেলাটাই খেলতে দিল না। অনেকটাই ফিজিক্যাল গেম খেলছিল। মেসি চিলির সেই রক্ষণাত্মক খেলাটা ভাঙতে না পেরে দারুণ দুঃখ পেয়ে খেলব না বলছেন ঠিকই। কিন্তু, ওঁর না খেলা বিশ্ব ফুটবলের ক্ষতি। বিশ্বকাপে মেসি ম্যাজিক আর দেখা যাবে না। অলিম্পিকে মেসি থাকবেন না। এটা ভাবতেই অদ্ভুত লাগছে।

সবাই বার বার একটা কথা বলছে, দেশের হয়ে সাফল্য নেই, ক্লাবের হয়ে আছে। এটা কেউ দেখছে না বার্সেলোনায় কতটা সাপোর্ট পান মেসি। মেসির এক দিকে থাকে সুয়ারেজ অন্য পাশে নেইমার। মাঝমাঠ থেকে বুস্কেটস, ইনিয়েস্তা, রাকিটিচরা নিয়মিত বল সাজিয়ে যান। সেটা আর্জেন্তিনায় কোথায়? এই মেসিই যখন দেশের জার্সিতে অনবদ্য সব গোলের বল সাজিয়ে দেন আর হিগুয়াইন, আগুয়েরোরা গোল করে যান তখনই তো প্রমাণ হয় আসলে সাফল্যের তারতম্যটা কেন। অমন পাস বিশ্ব ফুটবলে ক’টা হয়? নেইমার, সুয়ারেজরাও দেশের হয়ে খেলার সময় মেসির এই পাসগুলো মিস করেন। এই কথাটাই হয়তো ওঁকে মানসিক ভাবে ভিতর থেকে একদম ভেঙে দিয়েছিল। লজ্জায় আর খেলতে চাইছেন না। মনে মনে ভাবছেন, সত্যিই দেশকে কিছু দিতে পারেনি। কিন্তু, মেসির তো লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই। উনি যা দিয়েছেন, তা তো অনেকেই দেননি। মেসি যদি ফেরেন, তা হলে বিশ্ব ফুটবল আবার সমৃদ্ধ হবে। না হলে ওই শূন্যস্থানটা পূর্ণ হতে আবার অনেক সময় লেগে যাবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Messi argentina copa america
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE