ধর্মশালাতে রেকর্ড গড়েছিলেন মাশরাফি। হাবিবুল বাশারের সাফল্যের রেকর্ড ছিল সর্বাধিক ৩০টি জয়ের। ধর্মশালাতে তা স্পর্শ করেছিলেন মাশরাফি। হাবিবুল বাশারের যেখানে এই রেকর্ড গড়তে লেগেছিল ৮৭ ম্যাচ, সেখানে ওমানকে হারিয়ে ক্যাপ্টেনসির ৪৮তম ম্যাচেই ৩০তম জয় পেয়েছেন মাশরাফি। আর বেঙ্গালুরুতে ক্যাপ্টেনসির হাফ সেঞ্চুরির সামনে দাঁড়িয়ে মাশরাফি। স্টিভেন স্মিথের সঙ্গে টসের সঙ্গে সঙ্গেই হাফ সেঞ্চুরিটা হয়ে যাবে তাঁর। হাবিবুল বাশার ( ৮৭ ম্যাচ), মুশফিকুর রহিম (৮৪ ম্যাচ), মহম্মদ আশরাফুল (৬২ ম্যাচ), সাকিব আল হাসানের (৬২ ম্যাচ) পর পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ক্যাপ্টেনসির হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করবেন মাশরাফি। একটি জয় পেলেই তার নেতৃত্বে তিন ভার্সনের ক্রিকেটেই সবচেয়ে বেশি সাফল্য পাবে বাংলাদেশ দল। তবে এমন এক মাইলস্টোনের সামনে দাঁড়িয়ে কিন্তু রোমাঞ্চিত নন মাশরাফি। বরং তাসকিন, আরাফত সানির বোলিং নিষিদ্ধ হওয়ায় সরব হয়েছেন তিনি।
তবে মাঠের বাইরে নয়, প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে চিন্নাস্বামীর ২২ গজকেই বেছে নিয়েছেন মাশরাফি। বাংলার যোদ্ধাদের নিয়ে লড়বেন এই মাঠে। “মাঠে প্রতিবাদ জানাতে পারলে সবচেয়ে ভাল হবে। সবার ছোট ছোট কন্টিবিউশনে টি-টোয়েন্টি ম্যাচে জেতা যায়। আমি সব খেলোয়াড়ের দিকে তাকিয়ে আছি। আমাদের মন এক জায়গায়, আমাদের করতে হবে অন্য কিছু !” দৃঢ়প্রতিজ্ঞা শোনায় তাঁর কণ্ঠস্বর। একই সঙ্গে মাশরাফির মন্তব্য, “তাসকিনের উপর যে অন্যায় হয়েছে তা মেনে নেয়া খুবই কঠিন কাজ। আমাদের সঙ্গে যে-ই খেলুক না কেন, অবশ্যই জয়ের জন্য মাঠে নামব। আমাদের সঙ্গে এখন কি হচ্ছে এগুলো বাদ দিয়ে টিমের সবাইকে প্রতিটি বল বাই বলের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। আমার বিশ্বাস, ছেলেরা খেলতে নামবে দেশের জন্যেই।”
আরও পড়ুন
আইসিসির সিদ্ধান্তে হতাশ মাশরাফি ভেঙে পড়লেন কান্নায়
২০০৯ সালে ভারতের ক্রিকেট লিগ আইসিএলে জাতীয় দলের সাত ক্রিকেটার যোগ দিলেও ভেঙে পড়েনি বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। সে স্মৃতি এখনো সাহসী হওয়ার টনিক দেয় মাশরাফিকে। ২০১৭-তে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার শর্ত হিসেবে বাংলাদেশকে ২০১৫’র ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ওয়ানডে র্যাংঙ্কিয়ে ৮ নম্বরে থাকতে হবে বলে জানিয়েছিল আইসিসি। সেই চ্যালেঞ্জটা নিয়েছিলেন মাশরাফি। আর মাশরাফির ক্যাপ্টেনসিতেই আইসিসি’র নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে র্যাংঙ্কিয়ে ৯ থেকে ৭-এ উঠে আসতে পেরেছে বাংলাদেশ।
ক্যাপ্টেনসির অভিষেকে পা পিছলে হাঁটুর লিগামেন্টে বড় চোট পাওয়ার পরও ২০০৯ সালে সেন্ট ভিনসেন্ট টেস্টে অদম্য মনেবলে যে ছেলেটি হাসপাতাল থেকে পায়ে প্লাস্টার করিয়ে নামতে পারেন ব্যাটিংয়ে, বিদেশের মাটিতে প্রথম টেস্ট জয়ে এমন অবদান যাঁর, তিনিই তো আসল সেনাপতি। সহ-যোদ্ধাদের জন্য মাঠে এবং মাঠের বাইরে ঝাঁপিয়ে পড়বেন, এমনটাই মাশরাফির কাছে কাম্য সবার। রবিবার সাংবাদিক সম্মেলনে মাশরাফির প্রতিবাদের সঙ্গে গলা মিলিয়েছে গোটা বাংলাদেশ। এমন প্রতিবাদে মাশরাফি পাশে পেয়েছেন বিসিবি-কে। তাসকিনের বোলিং অ্যাকশনকে অন্যায় ভাবে অবৈধ ঘোষণা করায় ১৬ কোটি বাংলাদেশির প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর এখন মাশরাফি। গত বছরের অক্টোবরে নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফর স্থগিত করা। এর পর একই অজুহাতে চলতি বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট থেকে অস্ট্রেলিয়া দল প্রত্যাহার করে। ফলে এমনিতেই প্রতিপক্ষ হিসেবে অস্ট্রেলিয়াকে সামনে পেয়ে তেতে রয়েছে বাংলাদেশ। এমন এক সময়ে তাসকিন ও আরাফত সানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করায় যেন আগুনে ঘি ঢেলেছে আইসিসি। অন্যায়ের প্রতিবাদটাই তাই এ বার মাঠেই করতে চায় বাংলাদেশ দল।
গত রবিবার কেঁদেছেন মাশরাফি, শোককে শক্তিতে পরিণত করতে! যে ছেলেটির জন্মদিনে উৎসব হয়, রবিরার সেই তামিমের ২৭তম জন্মদিনে আনন্দ করেনি বাংলাদেশ দল। সমস্ত অন্যায়ের জবাব মাঠে দিয়ে একসঙ্গে তামিমের জন্মদিনটাও উদ্যাপন করতে চান মাশরাফিরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy