Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

মোবাইলের রংও লাল-হলুদ করে নিয়েছি আমি

মা শিক্ষিকা। চেয়েছিলেন একমাত্র ছেলে যেন ডাক্তার হয়। বাবার ইচ্ছে ছিল পারিবারিক ব্যবসায় ঢুকুক। কিন্তু ডু ডং হিউন ফুটবলার ছাড়া অন্য কিছু হতে চাননি। সোমবার বিকেলে বাইপাসের ধারের ফ্ল্যাটে বসে নিজের পেশাদার জীবনের মতোই ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও আড্ডা দিলেন আনন্দবাজারের সঙ্গে।

ডুডু-র ফোকাসে কি এ বার ডং? বাড়িতে অ্যালভিটো ডি’কুনহার সঙ্গে আড্ডায় কোরিয়ান মিডিও। ছবি: উৎপল সরকার।

ডুডু-র ফোকাসে কি এ বার ডং? বাড়িতে অ্যালভিটো ডি’কুনহার সঙ্গে আড্ডায় কোরিয়ান মিডিও। ছবি: উৎপল সরকার।

প্রীতম সাহা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৫ ০২:৫৪
Share: Save:

মা শিক্ষিকা। চেয়েছিলেন একমাত্র ছেলে যেন ডাক্তার হয়। বাবার ইচ্ছে ছিল পারিবারিক ব্যবসায় ঢুকুক। কিন্তু ডু ডং হিউন ফুটবলার ছাড়া অন্য কিছু হতে চাননি। সোমবার বিকেলে বাইপাসের ধারের ফ্ল্যাটে বসে নিজের পেশাদার জীবনের মতোই ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও আড্ডা দিলেন আনন্দবাজারের সঙ্গে।
প্রশ্ন: পাঁচ ম্যাচেই ইস্টবেঙ্গলের নয়নের মণি হয়ে উঠেছেন। কেমন লাগছে?
ডং: স্টারডম কার না ভাল লাগে বলুন! তবে আমি জানি, আমার গোলই আমার স্টারডম। যে দিন আমার গোল বন্ধ হয়ে যাবে, ডংও হারিয়ে যাবে।
প্র: ইউরোপের ক্লাবেই বেশি যেতে দেখা যায় দূর প্রাচ্যের ফুটবলারদের। আপনি সেখানে ভারতীয় ক্লাব বাছলেন?
ডং: ইউরোপ কেন, একটা সময় কোনও ক্লাবেরই প্রস্তাব ছিল না আমার কাছে। তখনই আইএসএলে খেলার সুযোগ আসে। আমার কাছে এর চেয়ে ভাল আর কোনও বিকল্প সেই সময় ছিল না। ভারতে খেলার কথা ভাবিনি। পরিস্থিতি ভাবিয়েছে।
প্র: ইস্টবেঙ্গলে খেলার সিদ্ধান্তও পরিস্থিতির চাপে?
ডং: না, ইস্টবেঙ্গলে আসাটা আমারই সিদ্ধান্ত। ভারতে আসার পরে নেটে এখানকার ক্লাব ফুটবল নিয়ে চর্চা শুরু করি। সেখান থেকেই জানতে পারি এই ক্লাব সম্পর্কে। আমার কাছে গোয়া আর কলকাতা দু’টো বিকল্প ছিল। আমি ঠিক করি ইস্টবেঙ্গল।
প্র: কেন?
ডং: লাল-হলুদ রংটা আমার খুব প্রিয়। এখানে আসার পরে মোবাইলের ব্যাক কভারটাও লাল-হলুদ করে ফেলেছি।
প্র: নতুন অ্যালভিটো ডি’কুনহা বলা হচ্ছে আপনাকে। শুনেছেন?

ডং: শুনেছি। হয়তো ও বাঁ পায়ের ফুটবলার বলেই আমার সঙ্গে কোনও মিল খুঁজে পাচ্ছে সবাই।

প্র: আপনার প্রিয় ফুটবলার তো মেসি?

ডং: হ্যাঁ, মেসিও কিন্তু বাঁ পায়ের ফুটবলার (পাশে বসা অ্যালভিটোর দিকে মুচকে হেসে)। মেসিকে আদর্শ করেই আমার ফুটবলে পা দেওয়া প্রথম। বাবা-মার প্রবল আপত্তি ছিল। কিন্তু ফুটবল নিয়ে আমার পাগলামি দেখে ওঁরাও শেষে মানতে বাধ্য হন।

প্র: ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ডার্বির কথা শুনেছেন নিশ্চয়ই।

ডং: এখানে পা দেওয়ার পর থেকে ওটাই তো শুধু শুনছি। এই ডার্বিটা আমার জীবনের এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। মোহনবাগানের এ বার সব ক’টা ম্যাচ টিভিতে দেখেছি। আগের তিন-চারটে ডার্বিও ইউ টিউবে দেখে ফেলেছি। কলকাতা লিগে একটা ডার্বি হবে। কিন্তু আমি মনে হচ্ছে, দু’টো ডার্বি খেলব। স্বপ্নে আর বাস্তবে। ম্যাচের আগের দিন স্বপ্নে, পর দিন মাঠে।

প্র: ওদের সব শক্তি-দুর্বলতা মেপে নিয়েছেন?

ডং: ওদেরটা বলতে পারব না। তবে আমাকে কিছু জায়গায় উন্নতি করতে হবে। যেমন লং বল। মাটিতে খেলতে অসুবিধা নেই। কম হাইটের জন্য উঁচু বলে একটু ভয় আমার। তবে আগেরো যেমন ডিফেন্ডারদের গায়ের জোরে পিছনে ঠেলে রেখে হেডে গোল করে, সে রকমই চেষ্টা করি।

প্র: কাতসুমি বনাম ডং নিয়ে কিন্তু শহর তেতে...

ডং: কোনও ব্যক্তিকে নয়। ডার্বি জিততে হবে বিপক্ষের পুরো টিমকে হারিয়ে।

প্র: কলকাতা আর কোরিয়ার সংস্কৃতি আলাদা। মানাতে অসুবিধা হচ্ছে না?

ডং: খুব হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি খাবারের সমস্যা। স্বাদের কোনও মিল নেই। এখানে ভাল লাগার মতো বলতে নান আর চিকেন কারি।

প্র: র‌্যান্টি মার্টিন্স আই লিগে অনেক বারের সেরা গোলদাতা। টিমে আপনার বড় চ্যালেঞ্জার?

ডং: আমি তো ওকে দিয়েই গোল করাতে চাই। আমার প্রিয় জায়গা অ্যাটাকিং মিডিও। যেখান থেকে অন্যের গোলে অ্যাসিস্ট করতে পারব। আবার নিজেও গোল করতে পারব। এখন শুধু ওর সঙ্গে আমার জুটি ক্লিক করার অপেক্ষা।

প্র: আপনার প্রেম-কাহিনি এখানে চর্চায়...

ডং: হারুকার সঙ্গে আমার প্রথম দেখা দু’বছর আগে। জে-লিগে চোট পাওয়ার পরে তখন নিয়মিত গ্যালারিতে বসতাম। এক দিন সেখানেই দু’জনের দেখা। আমার এক টিমমেট ওর বন্ধু। তার খেলা দেখতে এসেছিল। আমাদের প্রথম দেখাতেই দু’জনের ফোন নম্বর অদল-বদল। তার পর প্রেম।

প্র: কবে বিয়ে করছেন?

ডং: হারুকা ওখানে ব্যাঙ্কে চাকরি করে। অক্টোবরের গোড়ায় এখানে সাত দিনের জন্য আসবে। তার পরে জানুয়ারিতে একেবারে চলে আসবে। আমরা লিভ টুগেদার করব এখানে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE