(বাঁ দিকে) রবীন্দ্র জডেজা এবং রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ছবি: এএফপি।
ব্যতিক্রম শুভমন গিল এবং ঋষভ পন্থ। কিছুটা ওয়াশিংটন সুন্দর। ভারতীয় শিবিরের বাকি ব্যাটারেরা মুম্বই টেস্টের প্রথম দিনের শেষ ১৫ মিনিট থেকে তেমন শিক্ষা নেননি। তবু নিউ জ়িল্যান্ডের প্রথম ইনিংসের ২৩৫ রান টপকে ২৬৩ রান তুললেন রোহিত শর্মারা। ২৮ রানে এগিয়ে থাকা ভারতকে দ্বিতীয় দিনের শেষে আবার লড়াইয়ে ফেরালেন বোলারেরা। দিনের শেষে নিউ জ়িল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসের রান ৯ উইকেটে ১৭১। সফরকারীরা এগিয়ে ১৪৩ রানে।
ওয়াংখেড়ের ২২ গজে বল অপ্রত্যাশিত ভাবে ঘুরছে। কোনও বল লাফাচ্ছে। প্রতি ঘণ্টায় আরও কঠিন হচ্ছে ব্যাটিং। ভারতের স্পিন সহায়ক পিচে এ দেশের স্পিনারদের বল খেলা কতটা কঠিন, তা শনিবার বুঝলেন নিউ জ়িল্যান্ডের ব্যাটারেরা। তিন টেস্টের সিরিজ়ের শেষ ইনিংসে তাঁদের এই বোঝায় ভারতীয় দল খুব বেশি হলে মুখ রক্ষা করতে পারে। তা-ও নির্ভর করবে ব্যাটারদের উপর। যশস্বী জয়সওয়াল, বিরাট কোহলি, রবীন্দ্র জাডেজারা প্রথম ইনিংসের মতো আবার দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিং করলে, ঘরের মাঠে ০-৩ ব্যবধানে সিরিজ় হার অসম্ভব নয়। ২০১২ সালের পর ঘরের মাঠে এই প্রথম টেস্ট সিরিজ় হারল ভারতীয় দল। পুণেতেই সিরিজ় পরাজয় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। সেই ক্ষতে প্রলেপ দেওয়ার সুযোগ রয়েছে মুম্বইয়ে। কিউয়ি বোলিংয়ের সামনে পালিশ চটে যাওয়া ভারতীয় ব্যাটিংকেই সেই দায়িত্ব পালন করতে হবে।
শুক্রবার অপরাজিত থাকা শুভমন এবং পন্থ সাবধানে শুরু করেছিলেন শনিবারের সকালটা। পঞ্চম উইকেটে তাঁদের ৯৬ রানের ইনিংস ভাল জায়গায় নিয়ে যায় ধুঁকতে থাকা ভারতীয় ইনিংসকে। পন্থ ৫৯ বলে ৬০ রানের আগ্রাসী ইনিংস খেলে আউট হলেন। ৮টি চার এবং ২টি ছয় মারলেন। তিনি আউট হতেই আবার ধস ভারতীয় ইনিংসে। ৪ উইকেটে ১৮০ থেকে ২৬৩ রানে শেষ রোহিতেরা। নিশ্চিত শতরান হাতছাড়া করলেন শুভমন। তাঁর ১৪৬ বলে ৯০ রানের ইনিংসে ছিল ৭টি চার এবং ১টি ছয়। শুভমন চেষ্টা করলেও সঙ্গ পেলেন না পন্থ আউট হওয়ার পর। জাডেজা (১৪), সরফরাজ় খান (শূন্য), রবিচন্দ্রন অশ্বিনেরা (৬) দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারলেন না। কিছুটা চেষ্টা করলেন ওয়াশিংটন। মূলত তাঁর ৩৬ বলে ৩৮ রানের অপরাজিত ইনিংসের সুবাদেই নিউ জ়িল্যান্ডের প্রথম ইনিংসের রান টপকে যায় ভারতীয় দল।
বাঁহাতি স্পিনারের বিরুদ্ধে ভারতীয় ব্যাটারদের দুর্বলতা মুম্বই টেস্টেও দেখা গিয়েছে। ঘরের মাঠে অজাজ পটেলের বল সামলাতে পারছেন না ভারতীয় ব্যাটারেরা। ১০৩ রান খরচ করে ৫ উইকেট নিলেন তিনি। অন্য বোলারেরা ততটা প্রভাব তৈরি করতে না পারলেও সমস্যা হয়নি কিউয়িদের। ভারতীয় ব্যাটারদের ব্যর্থতাই তাঁদের সুবিধা করে দেয়।
দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়লেন নিউ জ়িল্যান্ডের ব্যাটারেরা। জাডেজা এবং অশ্বিনের স্পিন সামলাতে পারলেন না টম লাথামেরা। সিরিজ়ে প্রথম বার নিউ জ়িল্যান্ডের ইনিংসকে চাপে ফেলল ভারত। শুরুটা করলেন আকাশ দীপ। নিউ জ়িল্যান্ড অধিনায়ক লাথামের ব্যাট এবং প্যাডের মাঝে সামান্য ফাঁক খুঁজে নিয়ে উইকেট ভেঙে দিলেন বাংলার জোরে বোলার। যাঁরা মহম্মদ শামির সিম পজ়িশনের কথা বলেন, তাঁরা নজর রাখতে পারেন আকাশের সিম পজ়িশনের দিকেও। বাকি কাজটা সারলেন তিন স্পিনার মিলে। ৫২ রানে ৪ উইকেট জাডেজার। ৬৩ রানে ৩ উইকেট অশ্বিনের। ৩০ রানে ১ উইকেট নিলেন ওয়াশিংটন। উইল ইয়ং ছাড়া আর কোনও কিউয়ি ব্যাটার ওয়াংখেড়ের ২২ গজে টিকতে পারলেন না। ইয়ংয়ের ব্যাট থেকে এল ৫১ রান। এ ছাড়া ডেভন কনওয়ে (২২), ডারিল মিচেল (২১), গ্লেন ফিলিপ্স (২৬) কিছুটা চেষ্টা করলেন। দিনের শেষে ২২ গজে রয়েছেন অজাজ (৭)। রবিবার সকালে নামবেন উইলিয়াম ও’রোর্ক।
ম্যাচের তৃতীয় দিন ভারতীয় দলের লক্ষ্য হবে নিউ জ়িল্যান্ডের শেষ উইকেটটি যত দ্রুত সম্ভব তুলে নেওয়া। নিউ জ়িল্যান্ড আর কোনও রান যোগ করতে না পারলেও জয়ের জন্য ভারতকে করতে হবে ১৪৪ রান। ম্যাচের চতুর্থ ইনিংস হলেও তৃতীয় দিনের পিচে ব্যাট করার সুবিধা পাবেন রোহিত, কোহলিরা। তাতেও নিশ্চিত থাকা যাবে কি? ৪৬ রানে অল আউট হওয়া দলের কাছে ১৪৪ কম নয়! এই সিরিজ়ে অন্তত ভারতীয় দলকে বিশ্বের এক নম্বর টেস্ট দলের মতো দেখাচ্ছে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy